উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের (Hemtabad) বিজেপি নেতা দেবেন্দ্রনাথ রায়ের (Debendra Nath Roy) মৃত্যু হয়েছে, গলায় ফাঁসের কারণেই এবং শরীরে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে। যদিও সেই রিপোর্ট মানতে চায়নি বিজেপি এবং সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। সোমবার উত্তরদিনাজপুরের হেমতাবাদে বিন্দাল গ্রামে একটি বন্ধ দোকানের বারান্দা থেকে বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ফাঁসের কারণে মৃত্যু হয়েছে। অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি”। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, “ফাঁসের কারণেই মৃত্যু হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট পাওয়ার পর, আরও কিছু এলে তা জানানো হবে”।
রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিধায়কের জামার পকেটে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে, সেখানে মৃত্যুর পিছনে দুজনকে দায়ী করে নামোল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার মাধ্যমিকের ফল বেরোনোর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যেরর স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যপ্রমাণ এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর এটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। নবান্নে সাংবাদিকদের দেওয়া বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এটি সন্দেহভাজন আত্মহত্যা”। তিনি আরও জানান, মৃতের জামার পকেট থেকে এলোমেলোভাবে লেখা পেপার নোট পাওয়া গিয়েছে, সেখানে “দুজনের নাম, তাঁদের ছবি এবং মোবাইল নম্বরের উল্লেখ রয়েছে”।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মৃতের পকেটে থাকা নোটে যে দুই ব্যক্তির নাম, ছবি ও মোবাইল নম্বর পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের পরিচয় ও কাজকর্ম খতিয়ে দেখেছে রাজ্য পুলিশ, এবং মনে হয়েছে যে, এলাকায় টাকা ধার দেওয়ার কারবার করতেন তাঁরা”। স্বরাষ্ট্রসচিবের ভাষায়, রাজ্য সরকার “ঘটনার যথাযথ এবং স্বচ্ছ তদন্তের প্রতি দায়বদ্ধ”, এবং তদন্তে কোনওরকম রাজনৈতিক বা বাইরে থেকে কোনওরকম প্রভাব খাটাতে দেওয়া হবে না। তাঁর কথায়, “ইতিমধ্যেই সিআইডির হাতে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে কোনওরকম রাজনৈতিক বা বাইরের কোনও প্রভাব খাটাতে দেওয়া হবে না”।
হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের রহস্যমৃৃত্য়ুতে তৃণমূল যোগ? সিবিআই তদন্তের দাবি
বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে “খুন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস”, যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল। বিধায়কের মৃত্যু নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিধায়কের পরিবার এবং গেরুয়া শিবির।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টকে “একটি খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর প্রয়াস” বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি, এবং ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে তারা। বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, “রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর আমাদের কোনও আস্থা নেই। তারা বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে চায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনকে আত্মহত্যা বলা হয়েছে, ফলে এই রিপোর্টে আমাদের কোনও বিশ্বাস নেই”। তিনি আরও বলেন, “রাজ্য সরকারের উচিত ঘটনাটিরর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া অথবা হাইকোর্টের বিচারপতির তত্ত্বাবধানে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা”।
এদিকে, বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে ১২ ঘণ্টার বনধ্ ডাকে বিজেপি। এদিন সকাল ৬টা থেকে বনধ্ কার্যকর হয় এবং মিশ্র সাড়া পড়ে। বেশ কিছু জায়গা দোকানপাট বন্ধ ছিল এবং রাস্তায় নেমেছে কম সংখ্যক যানবাহন। আবার এদিন বনধ্কে কেন্দ্র করে বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় এবং বাসে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে বনধ্ সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
কলকাতায় মেয়ো রোডে গান্ধি মূ্র্তির পাদদেশে দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং যথাযথ তদন্তের দাবিতে ধরনায় বসে বিজেপির যুব মোর্চা।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)