কৈরানার উপনির্বাচনের ফল চিন্তার ভাঁজ ফেলল মোদি ও যোগী আদিত্যনাথের কপালে।
কৈরানা/পালঘর:
কর্ণাটক জয় করার পর বিরোধী জোটের ঝড় অব্যহত রইল রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রেও।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৈরানা লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে অজিত সিংহের নেতৃত্বাধীন আরএলডির তব্বাসুম হাসন বিজেপির মৃগাঙ্ক সিংহকে 50000-এরও বেশি ভোটে হারিয়ে দিল। এই উপনির্বাচনে আরএলডি’কে সমর্থন দিয়েছিল অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি এবং কংগ্রেস। নুরপুরের বিধানসভা কেন্দ্রেও চিত্রটা একই প্রায়। এখানেও উপনির্বাচন হয়েছিল। যার ফল বেরোল আজ। বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী এই কেন্দ্রে হারিয়ে দিল বিজেপি প্রার্থীকে (এই দুই কেন্দ্রেই আগে ছিল বিজেপি বিধায়ক। তাদের মৃত্যুর জন্যই এই উপনির্বাচন হয়)।
গত মার্চ মাসে গোরখপুর এবং ফুলপুরের বড়ো জয়ের পরেই এল কৈরানা এবং নুরপুরের পরপর দুটি জয়। দীর্ঘকালের যুযুধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর সহকারী কেশব প্রসাদ মৌর্যকে পদচ্যুত করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর হয়েই একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। কৈরানাতে অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী এক ধাপ এগিয়ে তৃতীয় পার্টিকে সমর্থনের জন্য এগিয়ে গিয়েছিল। অজিত সিংহের আরএলডির প্রার্থীকে। যার ফলাফল এই বিপুল ভোটে জয়।
“বিজেপির হুকুম সিংহ যখন কৈরানাতে 2014 সালে জিতেছিলেন, তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল 2.30 লক্ষ। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি এবং আরএলডির সম্মিলিত ভোটের চেয়েও তা বেশি ছিল। চার বছর বাদে তাঁর মেয়ে যখন নির্বাচনে লড়লেন, পর্যুদস্ত হলেন এবং প্রমাণ করলেন যে, বিরোধী দল যদি একসঙ্গে মিলে লড়াই করে তাহলে দেশের রাজনীতির সম্পূর্ণ চিত্রটাই বদলে যাবে 2019 সালের নির্বাচনে”। আরএলডির সহ সভাপতি জয়ন্ত চৌধুরী সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের মাঝে ভেসে যেতে যেতে বললেন।
অজিত সিংহের কাছেও এই ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৈরানার বিপুল জয় ওই অঞ্চলের প্রভাবশালী জাঠ সম্প্রদায়ের দলটির রাজনীতির মূলস্রোতে দারুণভাবে ফিরে আসার একটা পথ করে দিল। কৈরানার মোট বাসিন্দার সিংহভাগই জাঠ। কমপক্ষে 1.5 লক্ষ। তাদের অধিকাংশই গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন বিজেপির পক্ষে। 2013 সালে মুজাফফরনগর এবং শামলীতে হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হয়েছিল 60 জনেরও বেশি। যাদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল মুসলমান। গত বারের নির্বাচন হয়েছিল তার পরেই।
প্রায় 16 লক্ষ বাসিন্দা থাকে কৈরানাতে। শামলী জেলার এই বিধানসভা কেন্দ্র ওই দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলির মধ্যে ছিল একদম উপরের দিকে।