অমেঠীতে নিজের বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হলেন সুরেন্দ্র সিংহ।
আমেথি, উত্তরপ্রদেশ: লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2019) উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে বিজেপি (BJP) নেত্রী স্মৃতি ইরানির (Smriti Irani) প্রচারের কাজে সহায়তা করা এক প্রাক্তন গ্রামপ্রধানকে শনিবার রাতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁর শেষকৃত্যে অংশ নিতে স্মৃতি ওই গ্রামে পৌঁছন এবং তাঁকে শবদেহ বহন করতেও দেখা যায়। অমেঠী— দশকের পর দশক ধরে গান্ধী পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। রাহুল গান্ধী এখান থেকে তিনবার বিজয়ী সাংসদ হলেও এবার পরাস্ত হয়েছেন স্মৃতির কাছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য পুলিশকে ১২ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন ফলের জন্য। লখনউ-এর পুলিশ প্রধানকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
দলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চাইলেন মমতা, কিন্তু কী বলছে দল
ওই বিজেপি কর্মীর নাম সুরেন্দ্র সিংহ। তাঁর নিজের বাড়িতেই আক্রমণ চালায় আততায়ীরা। পরে লখনউয়ের এক হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও পুরনো শত্রুতার কারণে এই খুন হতে পারে। তবে রাজনৈতিক মোটিভকেও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা। উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ওম প্রকাশ সিংহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, ‘‘আমরা পুরনো শত্রুতার বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি রাজনৈতিক শত্রুতাও এর পিছনে রয়েছে কিনা। প্রাথমিক তদন্তের পরে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পেয়েছি।''
বারাউলিয়া গ্রামের প্রাক্তন গ্রামপ্রধান ছিলেন সুরেন্দ্র সিংহ। বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে তিনি গ্রামপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
মোদীতে মুগ্ধ উত্তরপ্রদেশের মুসলিম মহিলা! ছেলের নাম রাখলেন ‘নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী'
তিনি সক্রিয় ভাবে স্মৃতি ইরানির লেকসভা প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন। বিজেপি নেত্রী জনসভায় তাঁর প্রশংসাও করেন। তাঁর ছেলে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, ‘‘আমার বাবা স্মৃতি ইরানির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। দিনরাত তাঁর জন্য প্রচারে ব্যস্ত থাকতেন। তিনি অমেঠী থেকে জিতে সাংসদ হওয়ার পরে বিজয় যাত্রা বের করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, কিছু কংগ্রেস সমর্থকদের ব্যাপারটা পছন্দ হয়নি।''
স্মৃতি ইরানি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে ৫৫,০০০ ভোটে হারিয়ে দেন অমেঠীতে। অমেঠী, যা গান্ধীদের পারিবারিক ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেখানে এবার কংগ্রেস হেরে যাওয়াটা দলের সামগ্রিক ব্যর্থতার মধ্যে আরও অস্বস্তি বাড়িয়েছে। বিজেপি নেত্রী গত তিন মাস অমেঠীতে প্রচার চালিয়েছেন। গত পাঁচ বছরে তিনি এই লোকসভা কেন্দ্রে নিয়মিত আসাযাওয়া করেছেন। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি কদাচিৎ অমেঠীতে এসেছেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এখানকার সাংসদ। গত তিন দশকে ১৯৯৮ ছাড়া কংগ্রেস এখানে হারেনি।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দারুণ ভাবে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে। অন্যদিকে কংগ্রেস ৫৪২টির মধ্যে মাত্র ৫২টিতে জয়ী হয়েছে।
উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘‘একজন দলীয় কর্মীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখের এবং দুর্ভাগ্যজনক। ওঁর হত্যাকারীরা মাটির তলায় লুকিয়ে পড়লেও ঠিকই ধরা পড়বে। সারা অমেঠীই এই ঘটনায় দুঃখিত।'' উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী রীতা বহুগুণা জোশী হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি করেছেন।