শাহজাহানপুর, উত্তরপ্রদেশ: উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) আইন কলেজের এক ছাত্রীর আনা ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে এবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা চিন্ময়ানন্দের (Chinmayanand Arrested) ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আজই(শুক্রবার) তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাঁচ দিন আগে ওই নির্যাতিতা আদালতের সামনে গিয়ে তাঁর বয়ান দিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন যে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর এক বছর ধরে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালাতেন চিন্ময়ানন্দ (Chinmayanand) এমনকী ব্ল্যাকমেলও করা হত নির্যাতিতাকে। আজ (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শারীরিকভাবে "অস্থির ও দুর্বল" বোধ করছেন এ কথা জানানোর পরে ৭৩ বছর বয়সী চিন্ময়ানন্দকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশে একাধিক আশ্রম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এই ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ। তাঁর বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ আনেন আইনের শিক্ষার্থী ওই মহিলা। তবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার প্রায় একমাস পরেও বিজেপি নেতা চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেন ড্রাইভে, দাবি তরুণীর
গত সোমবার প্রবীণ বিজেপি নেতা চিন্মায়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ তোলা আইন বিভাগের ছাত্রীকে তাঁর বয়ান নেওয়ার জন্য কড়া সুরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে আদালতে আনা হয়। ২৩ বছর বয়সী এই যুবতীকে বেশ কয়েকটি পুলিশ মহিলা এসকর্ট করে আদালতে নিয়ে আসেন। আদালতে আনার সময় যুবতীর মুখ কালো ওড়নায় ঢাকা ছিল । চিন্মায়ানন্দ পরিচালিত শাহজাহানপুরের একটি আইন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, ওই মহিলা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক বছর ধরে তাঁকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপি নেতা চিন্মায়ানন্দের নাম উল্লেখ না করেই গত ২৪ অগাস্ট ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়ে ওই মহিলা নিখোঁজ হয়ে যান। তারপরেই ঘটনাটি ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে। যুবতীর পরিবার বিজেপির ওই প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে তাঁকে অপহরণ করার অভিযোগ তোলে। নিরুদ্দেশ হওয়ার ছয় দিন পর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করে।
ধর্ষণসহ অন্য অপরাধ কমেছে, যোগী আদিত্যনাথের দাবি ঘিরে প্রশ্ন
এদিকে চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি ওই আইনের ছাত্রীকে তাঁর ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে, তাঁর স্নান করার একটি ক্লিপ দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। নিগৃহীতা মহিলার অভিযোগ, তাঁকে প্রায়শই ওই ঘর থেকে চিন্ময়ানন্দের সহায়তাকারীরা বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে চিন্ময়ানন্দের ঘরে নিয়ে যেতেন। এমনকি ওই বিজেপি নেতাকে ম্যাসেজ করাতেও বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই তরুণী সিদ্ধান্ত নেন তিনিও ভিডিও তুলে রাখবেন চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে। এরপর চশমায় ক্যামেরা লাগিয়ে তিনি ভিডিও তুলে রাখেন।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা চিন্মায়ানন্দকে গত সপ্তাহে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল সিটের পক্ষ থেকে। শেষপর্যন্ত আজ (শুক্রবার) তাঁকে গ্রেফতার করা হল।