বোমা বিস্ফোরণে যখন দুই হাত উড়ে গেল তখন মালবিকা আইয়ার (Malvika Iyer) মাত্র ১৩। গ্রেনেড ফাটার পর যখন তাঁর প্রাণ নিয়ে টানাটানি তখন বিকানিরের (Bikaner) চিকিৎসকেরা সবার আগে বাদ দিয়েছিলেন তাঁর দুই হাত। এবং সেলাই করার সময় ভালো করে না দেখায় মাংসে না ঢাকা পড়ে বেরিয়ে থাকে হাতের হাড়। সে কী যন্ত্রণা মালবিকার! একটু আঘাত লাগলেই ব্যথায় কঁকিয়ে উঠতেন। কিন্তু ততক্ষণে যা ভুল হওয়ার তো হয়েই গেছে। প্রাণে বাঁচলেও সারাক্ষণ ব্যথায় অস্থির তিনি। তাই নিয়ে ৩০ বছরের মালবিকা আজ বিশ্বের মুখ। সদ্য গেছে তাঁর জন্মদিন। জীবনের এই বিশেষ দিনটিকে তিনি বেছে নিয়েছেন নিজের জীবনের কথা বলার। মালবিকা, প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়া এমন এক নারী যিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্লোবাল শেপার (World Economic Forum global shaper)। শুনবেন নাকি তার গল্প?
মহিলা কনস্টেবল লিঙ্গ পরিবর্তন করে হলেন পুরুষ, বিয়ে করলেন পছন্দের নারীকে!
মালবিকার জবানিতে, "বোমায় যখন হাত উড়ে গেল, ডাক্তারবাবুদের একটাই চিন্তা ছিল, কী করে আমায় বাঁচাবেন। তাই তড়িঘড়ি তাঁরা কেটে বাদ দেন দুটো হাতই। একইসঙ্গে সেলাই করার সময় আমার হাতের হাড় যে বেরিয়ে আছে, খেয়াল করেননি। ফলে, সেলাই হল ভুল জায়গায়। বেরিয়ে থাকল হাতের হাড়।"
চিকিৎসকদের সেই ভুলের মাশুল গুণতে হয়েছে মালবিকাকে। শেষে যন্ত্রণা বা দুর্ঘটনার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে এরপর ওই হাড়কে রুপোর পাতলা পাতে মুড়ে দেন তিনি। সেই হাড় মালবিকার উড়ে যাওয়া হাতের আঙুলে রূপান্তরিত। যা দিয়ে তিনি টাইপ পর্যন্ত করেন ফোনে, সোশ্যাল মিডিয়ায়, সব কিছুতে!
এই হাড় থুড়ি রুপোলি দিয়ে তিনি শেষ করেছেন তাঁর পিএইচডি থিসিস। আজ মালবিকা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, 'মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে'....প্রবাদ ভয়ানক সত্যি।
মালবিকার তাই অভয়বাণী, যতই দুঃখ আসুক, হার না মানাই শ্রেয়। জীবনের ছোট ছোট ঘটনাকেও উপভোগ করা উচিত। বারুদ বোঝাই গুমটি বিস্ফোরণে তাঁর হাত নেই। পা-ও অবশ স্নায়ুর পক্ষাঘআতে। তবু তিনি জীবন ভালোবাসেন। মালবিকার এই পোস্ট লাইক করেছেন লক্ষাধিক নেটিজেন। তাঁদের কাছে মালবিকা জীবনের প্রতিমূর্তি, জীবন্ত উদাহরণ। সবাই সোশ্যালে কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁকে।