This Article is From Jan 14, 2019

সাধারাণ নির্বাচন শেষ হলেও বাংলাদেশে উত্তেজনা শেষ হয়নি

বিরোধী দলের তরফে বুথ দখল করে ভোট করার অভিযোগও উঠেছে। ইমাম বলেন নিজেদের শক্ত ঘাঁটি থেকে আরও কিছু আসন পেতে পারে বিএনপি।

সাধারাণ নির্বাচন শেষ  হলেও বাংলাদেশে  উত্তেজনা  শেষ হয়নি

বিরোধী দলের তরফে বুথ দখল করে ভোট করার অভিযোগও উঠেছে

বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে জয় লাভ করার পরও আওয়ামি লিগের কর্মী সমর্থকরা  উৎসব পালন করছেন না। নেতৃত্বের তরফে এই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে। আর এটা থেকেই বাংলাদেশের  এবারের নির্বাচনের চিত্রটা কেমন সেটা বোঝা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে  ১৩ জন মানুষের। কয়েকটি সূত্র বলছে মৃতের সংখ্যা ১৭ বা ১৮ জনও হতে পারে। যেদিন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উৎসব হওয়ার  কথা  সেদিন-ই এত  মানুষের মৃত্যু হল। আর তাতেই আওয়ামি লিগের কর্মী সমর্থকদের উৎসাহ কমে গিয়েছে। দলের প্রবীণ নেতা ওবাইদুর কাদের বলেছেন, জয় এবং পরাজয় জীবনের অঙ্গ। আমাদের দলের কর্মী- সমর্থকদের অনুরোধ তাঁরা যেন এই বিষয়টি সব সময় মনে রাখেন এবং  কোনও ভাবেই বিরোধীদের বিব্রত না করেন। কিন্তু দলনেত্রী সেখ হাসিনা পরপর চার বার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে চলেছেন। এ সময় উৎসব পালন  না করাও  আওয়ামি লিগের কর্মী – সমর্থকদের জন্য কঠিন কাজ।  

এখন ৭১ বছরে পা দিয়েছেন হাসিনা। প্রথম বার ১৯৯৬ সালে  প্রধানমন্ত্রী হন মুজিব–কন্যা । এরপর ২০০৮ সাল থেলে পর  পর দু'বার  বাংলাদেশের শীর্ষ আসনে বসেন হাসিনা। এবার নিয়ে টানা  তিন বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন হাসিনা। আর সব মিলিয়ে চতুর্থবার।   

ফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে সূত্র  মারফৎ জানা গিয়েছে ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৫৮টিতেই জিতেছে আওয়ামি লিগ। বিএনপি-র দখলে  গিয়েছে  মাত্র সাতটি আসন। অন্যরা  পেয়েছে ৩২টি আসন। এই দল গুলি  আবার আওয়ামি লিগের সঙ্গী।                        

ভোট গ্রহণ শেষ হয় রবিবার বিকেল ৪টের সময়। কিন্তু তার আগে  ন্যাশনাল ইউনাইটেড  ফ্রন্টের ৫০ জন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নেন। ভোট গণনা  শুরু হতেই  সর্বসম্মত ভাবে  ভোট বাতিলের দাবি করেন বিরোধী জোটের নেতারা।                

ন্যাশনাল ইউনাইটেড  ফ্রন্টের  প্রধান কামাল হুসেন বলেন, ‘ আমরা  ভাবতেও পারেনি  ধরনের কিছু হবে। এটা একটা বাজে নির্বাচন। সেখ হাসিনাকে দায়িত্ব না দিয়ে কেয়ারটেকার সরকার তৈরি করা দরকার। আর ৯০ দিনের মধ্যে  নতুন করে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করুক  কমিশন।' আরেক বিরোধী দল বিএনপির নেতা  ফাক্রুল ইসলাম আলমগির বলেন, নির্বাচনের নামে গণতন্ত্রকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। এই  ফল মেনে নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।

বিরোধীদের অভিযোগকে  অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক শিবির। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেছেন বিরোধী দল যে ১৩ জনের মৃত্যুর কথা বলছে তাঁদের মধ্যে আমাদের সমর্থক আছেন ১১ জন। সন্ত্রাস নয়  বিরোধীদের  পরাজয়ের কারণ অন্য। বিএনপি জামাত-ই- ইসলামিকে সাহায্য করেছে। একই পথে হেটেছেন কামাল  হুসেনও।  ভোটারদের অনেকেই বুঝতে পারেনি যুদ্ধ অপরাধীদের নিয়ে তৈরি দলকে কেউ কী করে সাহায্য করতে  পারে ? 

বিরোধী দলের তরফে বুথ দখল করে ভোট করার অভিযোগও উঠেছে। ইমাম বলেন নিজেদের শক্ত ঘাঁটি থেকে আরও কিছু আসন পেতে পারে বিএনপি। কিন্তু তেমন  কিছু হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে না। উল্টে নির্বাচনে অনিয়মেরব অভিযোগ করে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিএনপি নেতারা।     

কয়েকটি অনিয়মের কথা  বলছেন ভোটাররাও। ঢাকার বাইরে  এক ভোটার জানালেন তিনি  ভোট দিতে  গেলে তাঁকে বলা হয় ব্যালট পেপার ফুরিয়ে  গিয়েছে।  আরেক জন জানালেন আমি ইভিএমে  ভোট দিয়েছি। একটি পার্টির পাশে  থাকে সুইচে টিপলাম কিন্তু ভোট পড়ল অন্য জায়গায়। তৃতীয় জন জানালেন দুপুরের খাওয়ার  জন্য  ১ টা থেকে ২ টো  পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে তা আরও চালুই হয়নি। অন্যদিকে ভোট দিতে গিয়ে বিরোধী দলের এজেন্টের দেখা  পাননি নির্বাচন কমিশনের এম আধিকারিক। ভোটের আগেই ইন্টারনেট পরিষেবার গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশে।  সন্ধ্যা ছ'টার পর তা স্বাভাবিক হয়েছে। পরে আবার গতি কমে যায় ইন্টারনেটের। সব মিলিয়ে  ভোট শেষ হলেও বাংলাদেশে  উত্তেজনা  শেষ হয়নি।                   

 

.