কলকাতা: রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ও সচেতনতা, অন্তত পাড়ায় পাড়ায় তিন মাসে একবার রক্তদান শিবিরের উদ্যোগ থেকে যে অনেকখানি পথ এগিয়ে গিয়েছে একথা সত্য। আর তা এগিয়েওছে ব্যক্তিগত বা দলগত সচেতনতার ভরসাতেই। তবু, রক্ত দানের মতো জরুরি বিষয়ও ভুল ধারণা বা ভ্রান্তির ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে পারেনি এখনও। রক্ত দিতে গেলে কী কী আবশ্যক, বা রক্ত দেওয়ার পরে সংক্রমণ সহ নানা ধরণের ভুল ধারণা এখনও সমাজের একটা বড় অংশের মানুষকে রক্ত দেওয়ার মতো বিষয় থেকে পিছিয়ে রেখেছে। এই ভুল ধারণার মধ্যেই অন্যতম হল, শরীরে ট্যাটু থাকলে রক্ত দেওয়া যায় না! এই ভুল ধারণা ভাঙতেই, এবং নতুন প্রজন্মকে রক্তদানে আরও উৎসাহিত করতেই অন্যরকমের এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে ব্লাডমেটস। সারা রাজ্য জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছেন ব্লাডমেটসরা। কোথায় কোন বিপদে রক্ত প্রয়োজন, পৌঁছে যান তাঁরা, ভীষণ সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এবার তাঁদেরই উদ্যোগে শুধুমাত্র ট্যাটুওয়ালা মানুষদের দিয়েই আয়োজিত হবে এই রক্তদান শিবির। সংগৃহীত রক্ত যাবে কলকাতা থ্যালাসেমিয়া সোসাইটিতে।
ভার নিতে পারছে না সেতু, বিপজ্জনক হয়ে পড়ায় বন্ধ হৃষিকেশের লক্ষ্মণ ঝুলা
আগামী ১১ আগস্ট অভিনব এই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। কমপক্ষে ১০০ জন রক্তদাতা এই শিবিরে রক্ত দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে এখনও। ব্লাডমেটসের তরফে প্রিয়ম সেনগুপ্ত জানান, “আমাদের মূল লক্ষ্য হল ট্যাটু থাকলে রক্ত দেওয়া যায় না, এই ভ্রান্ত ধারণাটাকে নির্মূল করা।” শরীরকে ভালোবেসে নানা ধরণের ট্যাটু করালে কি সত্যিই সেই রক্ত অন্য মানুষকে দেওয়া যায় না? প্রিয়ম বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ন্যাশনাল ব্লাড কাউন্সিলের নির্দেশ অনুসারে ট্যাটু করানোর একবছর পর থেকেই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে রক্ত দেওয়া যায়।”
উল্কি বিষয়টি প্রাচীন, তবে তা ট্যাটু ডাকনামে এই সমাজে অন্তত জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেছে শেষ কয়েক বছরে। ট্যাটু সবথেকে বেশি করান সাধারণত যুব সম্প্রদায়ের মানুষই। নানা সমীক্ষা থেকে এও স্পষ্ট যে, যুব সম্প্রদায়ের মানুষই সবচেয়ে বেশি রক্তদানও করেন। সুতরাং ট্যাটু করানোর শখে যদি এই তরুণ–তরুণীরা রক্ত দেওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে কলকাতা শহর ও সমস্ত জেলাতেই রক্ত সংকট বাড়বেই। সুতরাং, ট্যাটু করানো ও ট্যাটুশরীরে রক্ত দেওয়ার নিয়ম কানুন সবটা সম্পর্কে মানুষকে আরও ওয়াকিবহাল করতেই এই অভিনব উদ্যোগে সামিল ব্লাডমেটস।
লক্ষ্যপূরণে সফল ইমপা, সিনেমার টিকিটে সার্ভিস চার্জ বাড়ানোর অনুমতি দিলেন মমতা
কলকাতা শহরের দু'টি বড় ট্যাটু পার্লার এই উদ্যোগে তাঁদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন। ‘ইংক ডম' এবং ‘ট্যাটু ক্রিড' নামের এই পার্লার তাঁদের গ্রাহকদের তথ্যপুঞ্জি শেয়ার করছে ব্লাডমেটসদের সঙ্গে। সেই গ্রাহকদের ফোন করেই অনুরোধ করা হচ্ছে আগামী ১১ অগাস্ট রক্ত দেওয়ার জন্য।