This Article is From Nov 14, 2018

সমন্বয়কে অস্ত্র করেই এগিয়ে চলেছে ব্লাডমেটস

কলকাতার বুকে গত তিন বছর ধরে মানুষকে রক্তের যোগান দিয়ে আসছে ব্লাডমেটস নামক একটি সংস্থা।

সমন্বয়কে অস্ত্র করেই এগিয়ে চলেছে ব্লাডমেটস

ফাইল চিত্র।

কলকাতা:

নাম 'বাংলা ব্যান্ড' অথচ তা রক্তদান শিবির! নিচেই আবার লেখা 'হ্যাপি বার্থ ডে সুস্মিতা'। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া পোস্টার দেখে প্রথমে একটু অবাকই হয়েছিলেন অনেকে। তবে পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আসল ঘটনা। কলকাতার বুকে গত তিন বছর ধরে মানুষকে রক্তের যোগান দিয়ে আসছে ব্লাডমেটস নামক একটি সংস্থা। এই ধরণের উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে সংস্থার কর্ণধার প্রিয়ম সেনগুপ্ত জানান, "ব্লাডমেটসেরই এক সদস্যের বোন সুস্মিতা। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কিছুদিন আগে। বেঁচে থাকলে আগামী ৯ই ডিসেম্বর অষ্টাদশী হত সে। আর যেন কেউ রক্তের অভাবে মারা যায় সে খেয়াল রেখেই সুস্মিতার জন্মদিনকে স্মরণীয় করে তুলতে কলকাতা মেডিকেল কলেজে আগামী ৯ই ডিসেম্বর 'বাংলা ব্যান্ড' থিমে এক বিশেষ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে ব্লাডমেটস।"

es9tim2

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল ব্লাডমেটসের এই পোস্টারটি।

৪ মাস বাদেও বদলাল না রাজ্যের নাম, কেন্দ্রকে বিঁধলেন মমতা

ব্লাডমেটসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গত তিন বছরে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে প্রিয়ম ও তাঁর বন্ধুদের। কখনও হুমকি বা কখনও কুরুচিকর মন্তব্য ভেসে এসেছে মহিলা সদস্যদের প্রতিও। প্রিয়ম জানান, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে সাম্প্রদায়িকতাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু তবুও হল ছাড়েননি তাঁরা।  "২০০৭ সালে আমার বাবার ক্যানসার ধরা পড়ে। ওই সময় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন ছিল। তখন আমার পেশা ছিল সাংবাদিকতা। সেই সূত্রেই বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। ভেবেছিলাম রক্তের জোগাড় করতে খুব একটা সমস্যা হবে না। কিন্তু আমাকে যে হারে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল পরে ভেবে দেখেছিলাম কলকাতার বাইরে থেকে যারা চিকিৎসার জন্য আসে তাদের কতটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ওইসময় আমাকে অনেক মানুষ সাহায্য করেছিলেন। আমি ভাবছিলাম কীভাবে তাদের ঋণ শোধ করব? আমি বরাবর সলমান খানের অন্ধ ভক্ত। ওই সময় তাঁর 'জয় হো' সিনেমাটা দেখেছিলাম। ওখানে একটা সংলাপ আছে, 'তোমাকে কেউ সাহায্য করলে তোমার উল্টে তাকে সাহায্য করার প্রয়োজন নেই। বরং তুমি আরও তিনটে মানুষকে সাহায্য করো'- ওই কথাটা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল। তারপর কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে শুরু করি ব্লাডমেটস", জানান প্রিয়ম। 

ব্লাডমেটসের এই বিশাল কর্মযজ্ঞে সোশ্যাল মিডিয়াকে তারা এক বড় অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করে সেখান থেকে ডোনারদের ব্লাড গ্রুপ, ফোন নম্বর ও অন্যান্য বিবরণের ডেটাবেস তৈরি করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যায় ব্লাডমেটসের সদস্যরা। রক্তের প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে রিকুইজিশন মিলিয়ে ডোনার পৌঁছে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে। কলকাতা ছাড়াও সদ্য আমেদাবাদে নিজেদের যাত্রা শুরু করেছে ব্লাডমেটস। আর খুব শীঘ্রই ত্রিপুরা ও মুম্বাইতে ব্লাডমেটস নিজেদের শাখা খুলতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রিয়ম।

শিশুরাই সমাজের ভবিষৎ,ওদের ভাল ভাবে বড় করা জরুরি, শিশু দিবসে মমতার টুইট বার্তা

এছাড়াও, প্রিয়ম সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, সলমান খান ছাড়া রূপম ইসলামের 'আসল অস্ত্র সমন্বয়' গানের থেকেই তিনি ব্লাডমেটসের সমন্বয়ের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। আর ব্লাডমেটসের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রূপম ইসলাম নিজেও। 


কলকাতা মেডিকেল কলেজে এবার ব্লাডমেটসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে লাইটহাউজ নামক আরও এক সংস্থা। পরস্পরকে প্রতিযোগী নয় সহযোগী ভেবে কাজ করা এই দুই সংস্থা সুস্মিতার জন্মদিন কতটা স্মরণীয় করে তোলে এবার শুধু সেটাই জানার অপেক্ষা।

Click for more trending news


.