গত মার্চে এই অনুষ্ঠান হয়েছিল।
হাইলাইটস
- ২৯ বা দেশের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল মামলা
- সংক্রমণ ছড়ানোর দায় চাপানো হয়েছিল তবলিগ-ই-জামাতের ঘাড়ে
- এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে হাইকোর্ট
মুম্বই: অতিমারী আবহে তবলিগ-ই-জামাতকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। শুক্রবার এক মামলায় এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছে বম্বে হাইকোর্ট। আদালতের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের মন্তব্য, "অতিমারীতে সংক্রমণ ছড়ানোর দায় সংখ্যালঘুদের ওপর চাপানো হয়েছে।" এই মন্তব্য করে ২৯ বিদেশী নাগরিকের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা খারিজ করেছে আদালত। গত মার্চে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিগ-ই-জামাতের জমায়েতের পর হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে দেশে। আর এই পরিস্থিতি সংখ্যালঘুদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এই জমায়েত এমন অভিযোগে সরব হয় দেশের প্রধান শাসক দল বিজেপি। এই জমায়েতে উপস্থিত একাধিক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলারই একটা শুনানি ছিল বম্বে হাইকোর্টে।
সেদিনের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছে, "প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমে এই বিদেশীদের বিরুদ্ধে অযথা ট্রায়াল চলেছে। রাজনৈতিক দল ও সরকার এই সঙ্কটে অনুঘটক হিসেবে এইসব বিদেশীদের,বলির পাঁঠা করেছে।"
গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির ওই মরকজে তবলিগ-ই-জামাতের সমাবেশ চলে আসছে। এই জমায়েত নিয়ে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করে আদালত। কোর্ট বলেছে, ‘‘সরকারের দেওয়া ভিসা নিয়েই ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং আতিথেয়তার টানে ছুটে এসেছিলেন ওই বিদেশি নাগরিকরা। বিমানবন্দরে সমস্ত প্রক্রিয়া মিটিয়ে তবেই এ দেশে পা রেখেছিলেন তাঁরা। ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে নয় বরং ইসলামের রীতিনীতির সাক্ষী হতেই যে মসজিদে থাকছেন তা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে ছিলেন। তার পরেও মরকজে যোগ দেওয়া বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে অনুশোচনার সময় এসেছে। সরকারের পদক্ষেপে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, অবিলম্বে তাতে প্রলেপ দেওয়া দরকার।''
মসজিদে এত সংখ্যক মানুষের একসঙ্গে থাকা প্রসঙ্গে আদালত বলেছে, ‘‘নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চের মধ্যে ওই সমস্ত বিদেশি নাগরিকরা ভারতে এসেছিলেন। সেই সময় দেশে লকডাউন জারি হয়নি। তাই লকডাউন জারি হওয়ার পর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো যখন বন্ধ হয়ে যায়, সেই সময় মসজিদে কিছু মানুষকে আশ্রয় দেওয়া অপরাধ নয়। তাতে আইন অমান্য করাও হয় না। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর একই ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল একাধিক গুরুদ্বার। এখানে বিতর্কের কেন্দ্র যে মসজিদ, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেখানে সাধারণ মানুষের জমায়েত আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ ওই সময়ে মসজিদে নমাজ পড়তে গিয়েছেন, এমনটাও দেখা যায়নি। তাই নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ খাটে না।''