কবিতা মোদের শয়ন-স্বপন, কবিতা মোদের অস্ত্র
কলকাতা: এঁরা রাজনীতিবিদ নন। তাই কোনও রাজনৈতিক মিটিং করে সাধারণ মানুষদের ডেকে সচেতন করেননি। এঁরা বাগদেবীর বরপুত্র-কন্যা। কবিতা এঁদের কণ্ঠে প্রাণ প্রায়। তাই করোনা রোগের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে তুলে নিয়েছেন কবিতাকেই। এঁরা নচিকেতা চক্রবর্তী, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিতার ছন্দে অতীতের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমানে কীভাবে, কতটা সজাগ হবেন জনগণ---- জানিয়েছেন লেখনি এবং আবৃত্তির মাধ্যমে।
আটের দশকে মড়ক লেগেছিল শিল্প-সংস্কৃতির আঙিনায়। অভিনয় হয়ে গান--- প্রবল খরায় বিধ্বস্ত বঙ্গ সংস্কৃতি। হেমন্ত-মান্না-সন্ধ্যার স্বর্ণযুগ অস্তাচলে। সেসময় হাল ধরেছিলেন যেসব গান জাগানিয়া তাঁদের অন্যতম নচিকেতা চক্রবর্তী। নিজের লেখা গান নিজে সুর করে গেয়ে বাংলা গানের নব্য যুগের কাণ্ডারি এই শিল্পীর রাজনৈতিক, সামাজিক চেতনা বরাবরই প্রখর। 'সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা'র সঙ্গে তাঁর কণ্ঠে সমান জনপ্রিয় 'ডাক্তার ও ডাক্তার' কিংবা 'বৃদ্ধাশ্রম'-এর মতো সমাজ সচেতনের বার্তা বয়ে নিয়ে আসা গান। সেই নচিকেতা ফের আগুন ঝরালেন তাঁর অতি সাম্প্রতিক কাব্যগীতিতে। 'করোনা' এই বিশেষ রচনায় নচিকেতা মানব কল্যাণের জন্য ভাইরাসকে চলে যেতে বললেও অনুরোধ জানিয়েছেন ভয়টুকু রেখে যাওয়ার। কারণ, এই ভয় মুছেছে ধর্ম-জাতিভেদ। রাম-রহিমের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হিংসা। একই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, নাগরিকপঞ্জির খাতা হাতে ঘোরা মানুষগুলো এখন কই?
তিনি প্রথিতযশা বাচিকশিল্পী। তাই সমাজের প্রতি দায় তাঁরও। কিন্তু তাঁরও যে হাতিয়ার কবিতা-ই। কবি তন্ময় চক্রবর্তীর কবিতা নিয়ে নিজের আবৃত্তি সংস্থা 'ব্রততী পরম্পরা'র মাধ্যমে করোনার মোকাবিলা কী করে করতে হবে জনগণকে জানালেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর শেখানো পথে হেঁটে তাঁরই শিক্ষার্থীরা মিলে এই ভিডিওয় আবৃত্তি করে জানিয়েছেন করোনার খুঁটিনাটি। ভিডিওগ্রাফি অরুণ শীলের।
জনতা কার্ফুর পর কেটে গেছে একটা দিন। করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যাও। ঘরবন্দি মানুষ যেন খাঁচায় বন্দি পোষ্য তুল্য। মানব সভ্যতা কি স্থবির? কবির চোখে এই মুহূর্তে কেমন চারপাশ? তারই জীবন্ত দলিল কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কবিতা।
একই সঙ্গে কবি কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের মহানগর ছবির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা টেনে ভারী চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন।