জামিনে ছাড়া পেয়ে পরিবারের সঙ্গে ওই নাট্যকর্মী।
হাইলাইটস
- ২০ ডিসেম্বর ওই নাট্যকর্মীকে গ্রেফতার করে লখনউ পুলিশ
- হেফাজতে তাঁকে এককাপ চা ছাড়া আর কিছু খেতে দেওয়া হয়নি।
- বৃহস্পতিবার জামিনে ছাড়া পান তিনি।
লখনউ: সাদাফ জাফরের পর এবার নাট্যকর্মী (Theatre Artist) দীপক কবীর। মঙ্গলবার জামিনে (Bail) জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে সরব হলেন ওই নাট্যকর্মী। নিখোঁজ বন্ধুদের খোঁজে গিয়ে গ্রেফতারির মুখে পড়েন লখনউ-এর ওই নাট্যকর্মী। হিংসায় মদত ও দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে ২০ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে হজরতগঞ্জ থানা। তারপরেই পুলিশি (Lucknow Police) হেফাজতে চলে অকথ্য অত্যাচার। এক কাপ চা ছাড়া গ্রেফতারির দিন, একফোঁটা জল তাঁকে খেতে দেওয়া হয়নি। এদিন এনডিটিভির কাছে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, "১৯ ডিসেম্বর আমি এবং স্ত্রী একটা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভা শেষে বাড়ি ফিরি। রাতের দিকে জানতে পারি ওই সভা থেকে কয়েকজন নিখোঁজ। যাঁদের মধ্যে সমাজকর্মী সাদাফ জাফরও ছিলেন। সে রাতে ওদের কোনও খোঁজ না পেয়ে পরের দিন হজরতগঞ্জ থানায় যাই। থানার আধিকারিক আমার হাত চেপে ধরে বলে চলুন আপনার বিপ্লব (revolution) ভাগিয়ে দিই। ওদের হাবভাবে মনে হচ্ছিল প্রতিশোধ তুলতেই এমন আচরণ করছেন।'
তাঁর আরও অভিযোগ, ওই হিংসাত্মক প্রতিবাদের (Violent Protest) অন্যতম চক্রী হিসেবে আমাকে অভিযুক্ত করে প্রচণ্ড পেটায়। আমাকে জলও পর্যন্ত খেতে দেয়নি। পরে এক কাপ চা খাইয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেয়।
পুলিশি হেফাজতে হওয়া নির্যাতন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দীপক কবীর যোগ করেছেন, হাসপাতাল থেকে আমাকে এক পুলিশকর্তার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার চুলের ছাট দেখে ওরা বলে আমি কমিউনিস্ট, শহুরে নকশাল (Urban Naxal)। অত্যন্ত বিদ্বেষমূলক ও অশ্রাব্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করা হয়।
এমনকী কোনওপ্রকার হিংসাত্মক আন্দোলনে দীপক কবির অংশ নেয়নি বলে এনডিটিভির সামনে বৃহস্পতিবার দাবি করেন তিনি। বিস্ময়ের সুরে তাঁর অভিযোগ, 'জেলে থাকাকালীন আমাকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ ধরানো হয়েছিল। তবে আমি মামলা লড়বো। আমাকে পুলিশ অপরাধী সাব্যস্ত করতে পারবে না।' তিনি বলেছেন , আমি কিছু করিনি। আমার কাছে এমন অনেক ভিডিও আর ছবি আছে, যাতে দেখা গিয়েছে আমরা শান্তির পক্ষে কথা বলছি। ওই সভায় ভিড় একটু বাড়লে আমরা উৎসাহীদের সরিয়ে দিয়ে যাতায়াতের পথ তৈরি করে দিচ্ছি। সব ভিডিও, ছবি জোগার করে আদালতে দাখিল করবেন তিনি, জানিয়েছেন ওই নাট্যকর্মী। এমনকী, পুলিশি এই অতিসক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়ে তিনি বলেছেন, এভাবে কী করে প্রশাসন একজনকে জেলে পুড়ে তারপর তাঁকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ ধরাতে পারে।
এদিকে, সে দিনের হিংসাত্মক আন্দোলনে মদত দেওয়ার অভিযোগে সমাজকর্মী সাদাফ জাফর ও প্রাক্তন আইপিএস এসআর দারাপুরীকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু অকাট্য প্রমাণের অভাবে ওদের জামিন দেওয়া হল, আদালতে এ কথা উল্লেখ করেছিলেন বিচারক। জামিনে বেরিয়ে সমাজকর্মী সাদাফ জাফর অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পেটে লাথি মেরে বলা হয়েছিল পাকিস্তান চলে যেতে।