দুটি মোটর সাইকেল সহ একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ জনতা
নয়া দিল্লি: রবিদাস মন্দির (Ravidas temple) ভেঙে দেওয়ায় বুধবার রাতে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল দক্ষিণ দিল্লির তুঘলকাবাদ (Tughlakabad area of South Delhi)। খবর, দলিতদের অন্যতম মন্দিরটি ভেঙে দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি নিমেষে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ। বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে আহত হন পুলিশসহ বেশ কয়েকজন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলিতদের ওপর লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের উপরমহলের এক অফিসারের কথায়, ঘটনায় আটক করা হয়েছে ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ সহ ৫০ জন দলিতকে। তবে কোনও সাধারণ মানুষ আহত হননি বলেই দাবি প্রশাসনের।
“লজ্জাজনকভাবে ধাওয়া করা হচ্ছে”: চিদাম্বরমকে সমর্থন প্রিয়াঙ্কা গান্ধির
এ প্রসঙ্গে ডিসিপি (দক্ষিণ-পূর্ব) চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, "সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ রবিদাস মন্দির ভেঙে দেওয়ার পরেই এলাকায় জড়ো হন স্থানীয় ক্ষুব্ধ দলিতেরা। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। ক্ষিপ্ত জনতাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিলেও দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদ। দুটি মোটর সাইকেল সহ ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক গাড়িতে। পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলেই তাদের দিকে পাথর-ইঁটবৃষ্টি করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।"
তাঁর আরও দাবি, "জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে হাল্কা লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। জনতার ছোড়া পাথর ও ইঁটের ঘায়ে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। তবে কোনও সাধারণ মানুষ আহত হননি। দলিত নেতা সহ কিছু মানুষকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। মামলাও দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।"
সূত্রের খবর, বিভিন্ন রাজ্যের বিপুল সংখ্যক জনতা এই বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় দেখতে দেখতে ব্যাপক আকার ধারণ করে এই বিক্ষোভ। যানজটের সৃষ্টি হয় রাজধানির একাধিকগুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রবিদাস মন্দিরটি চলতি মাসের শুরুতে ভেঙে ফেলে রাজ্যের উন্নয়ন দফতর (ডিডিএ)।
মন্দির ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার দলিত বাস ও ট্রেনে চেপে জড়ো হতে থাকেন দিল্লিতে। ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা ঝাঁদেওয়ালানের আম্বেদকর ভবন থেকে মধ্য দিল্লির রামলীলা ময়দানের দিকে যাত্রা করেন। প্রতিবাদে সামিল হন দিল্লির বিচার মন্ত্রী রাজেন্দ্র পাল গৌতম, ভীম সেনা প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ এবং সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুরা।
মন্দা অর্থনীতি, ১০ হাজারকর্মী ছাঁটাই করতে পারে Parle
প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটার সময়েই চন্দ্রশেখর সাংবাদিকদের বলেন, "মন্দির ধ্বংস করে অপমান করা হয়েছে আমাদের সম্প্রদায়কে। সেই অপমানের যোগ্য জবাব দিতে যতদূর যেতে হয়, তত দূর পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত।" মন্দির ভাঙার ঘটনাকে পরে, অভিযোগ করেছিলেন যে এই ঘটনাটি "বর্ণবিদ্বেষীমূলক মানসিকতা" বলে বর্ণনা করেন বসপা প্রধান মায়াবতী (BSP chief Mayawati)।
মায়াবতীর এই অভিযোগের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, মন্দির ভাঙার সঙ্গে দিল্লি সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর মতে, "স্থানান্তরিত" ("relocate" the temple) করতেই মন্দির ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। রবিদাসের মন্দির ফের পুর্নগঠিত হবে। তবে অন্যত্র।