মাছ ধরে কুঁড়ে ঘরের কাঠ জ্বেলে রান্না করে খেয়েই 49 দিন সমুদ্রে কাটিয়ে দিল 19 বছরের আলদি নোভেল আদিলাঙ।
উপন্যাসকেও এ গল্প হার মানায়। আলদি নোভেল আদিলাঙ প্রায় দুই মাস সমুদ্রে ভাসছিল। সঙ্গে সম্বল বলতে ছিল শুধুমাত্র একটা বাইবেল এবং তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি। সুলাওয়েসির ইন্দোনেশিয়ান আইল্যান্ডে বসবাসকারী 19 বছরের এই কিশোর রমপং নামে পরিচিত মাছধরার ভাসমান ফাঁদের আলো সারানোর কাজ করতো, যাতে মাছ সেই আলো দেখে আকৃষ্ট হয়। 16 বছর বয়স থেকেই সে সমুদ্র সৈকতের ক্র্যাফটে কাজ করা শুরু করে।
আলদি বেশিরভাগ সময়ই মোনাডো সমুদ্রে তাঁর ভাসমান কুঁড়ে ঘরে সময় কাটাতে অভ্যস্ত। প্রতি সপ্তাহে তাঁর কোম্পানির কোনও না কোনও সদস্য মাছগুলো সংগ্রহ করতে আসতো আর আলদিকে খাবার আর জল দিয়ে যেত। কিন্তু একটা ঝড়ে জুলাই মাসে মাঝামাঝি সময় তাঁর নৌকা প্যাডেল ছাড়া প্রায় 80 মাইল দূরে এগিয়ে যায়। গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানা যায় ওই টিনেজার মাছ ধরে কুঁড়ে ঘরে সঞ্চিত কাঠ জ্বেলে সেই মাছ রান্না করে খেত। সে পোশাক দিয়ে সমুদ্রের জল থেকে লবণ ছাঁকতো। আর শুধু নিরুপায় হয়ে দেখতো তাঁর পাশ দিয়ে না থেমেই জাহাজ চলে যাচ্ছে।
"আলদি বলেছে অ্যডরিফটের সময় ও নাকি প্রায়ই ভয় পেয়ে কান্নাকাটি করতো", জাপানের ওসাকার ইন্দোনেশিয়ান কনস্যুলেট ফজর ফিরদৌজ জাকার্তা পোস্টকে জানিয়েছেন। "যতবারই ওঁ বড় জাহাজ দেখতো, ওঁর মনে নাকি আশা জাগতো, কিন্তু তার পাশে দিয়ে দশটার বেশি জাহাজ গেলেও একটাও থামেনি।"
শেষমেশ 49 দিন পর আলদি সুলাওয়েসির 100 মাইল দূরে গুনামে তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়া একটা পানামানিয়ান-ফ্ল্যাগড ট্যাংকারকে রেডিও সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম হয়। তাঁর এক বন্ধু তাঁকে রেডিওটা উপহার দিয়েছিল যদি সে কখনও সমুদ্রে হারিয়ে যায় সে কথা ভেবে। তবে তাঁকে উদ্ধার করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের। বড় ঢেউয়ের জন্য তাঁকে নিজের ভাসমান কুঁড়ে ঘর থেকে নৌকায় পৌঁছতে বেগ পেতে হয়েছে। টেলিগ্রাফ অনুসারে জানা গেছে তাঁকে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকোর একটা কোন টেনে ধরে উঠতে হয়েছে।
ট্রিবিউন মানাডোর সাক্ষাৎকারে জানা গেছে, আলদি ভেবেছিল সে ওখানেই মারা যাবে। সে জানায় তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছিল। এক সময় সে ভেবেছিল সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে সে আত্মহত্যা করবে। সে জানায় সেই মুহূর্তে সে নিজের বাবা মায়ের দেয়া উপদেশের কথা মনে করতো: মরিয়া হয়ে উঠলেই প্রার্থনা করবে।
ছেলেটি জানিয়েছে সে নিজের বাইবেলকে কৃতজ্ঞতা জানাবে।
গত 31শে অগাস্ট উদ্ধার হওয়ার পর আলদিকে জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মাসের শুরুতে সে মানাডো ফেরত আসে। জানা গেছে, সে এখন ভাল আছে।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদিত করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে.)