This Article is From Feb 05, 2019

ধরনামঞ্চ থেকেই শক্তিবাড়ছে বিরোধী জোটের, “দুর্নীতিগ্রস্তদের জোট” প্রতিক্রিয়া বিজেপির

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনা, বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি।যদিও তাকে দুর্নিতীগ্রস্তদের জোট বলে মন্তব্য করেছে বিজেপি, এমনকী, এই কলকাতার ঘটনা পুরো সাংবিধানিক ভাঙন বলে সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

ধরনামঞ্চ থেকেই শক্তিবাড়ছে বিরোধী জোটের, “দুর্নীতিগ্রস্তদের জোট” প্রতিক্রিয়া বিজেপির
কলকাতা:

কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে রবিবার রাতে হানা দেয় সিবিআই। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার রাতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের জব্দ করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে “দেশ ও সংবিধান” রক্ষার ব্যানারে মেট্রো চ্যানেলে ধরনায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনা, বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। যদিও তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত জোট বলে মন্তব্য করেছে বিজেপি, এমনকী, এই কলকাতার ঘটনা পুরো সাংবিধানিক ভাঙন বলে সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

তৃণমূলের মঞ্চ থেকে মোদীকে কটাক্ষ করলেন কানিমোঝি, আক্রমণ শানালেন লালু-পুত্রও

ইতিমধ্যেই পথে নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। বিভিন্ন জায়গায় নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের কুশপুত্তুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি রেল অবরোধ করেও বিক্ষোভ হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। অন্যদিকে, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্যান্য বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণের কৌশল রচনা করছে বিজেপি।

এদিকে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণাত্মক আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে অন্যান্য রাজ্যেও। এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাদের মমতার আন্দোলনে সমর্থনের মধ্য দিয়ে জোরদার হচ্ছে বিজেপি বিরোধী জোট।

কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের বার্তা দিলেন মমতা

মেট্রো চ্যানেলের ধরনা মঞ্চ থেকেই সোমবার ক্যাবিনেট বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সেখান থেকেই পুলিশকে সম্মান প্রদানও করেন।তিনি বলেন, “এটা একটা সত্যাগ্রহ, এবং যতক্ষণ না দেশ সুরক্ষিত হবে...সংবিধান সুরক্ষিত হবে আমি এটা চালিয়ে যাব”।

কলকাতার ধরনা, বিক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়ে সংসদেও।বিরোধীদের ব্যাপক হট্টোগলের জেরে থমকে যায় সংসদের অধিবেশন।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং লোকসভায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংবিধান ভেঙে পড়েছে...দেশের যে কোনও জায়গায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার অধিকার আছে কেন্দ্রীয় সরকারের”। তিনি আরও বলেন, “রবিবার যা হয়েছে, তাতে সাংবিধানিক ভাঙনেরই ইঙ্গিত দেয়”। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির থেকে রিপোর্টও তলব করেন তিনি।সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠায় রাজভবন।

ধরনা, বিক্ষোভের মাঝেই পুলিশকে সম্মান প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী

ধরনামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও হিংসা বা রাগ নেই, কিন্তু যে পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানগুলির অপব্যবহার এবং শেষ করা হচ্ছে, তাতেই আমি ক্ষুব্ধ”।পাশাপাশি তিনি বলেন, সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার এবং প্রতারিত আমানতকারীদের ২৫০-৩০০ কোটি টাকা ফেরতের দাবি করে তাঁর সরকার।

সারদা এব রোজভ্যালি চিটফান্ড এবং রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে, বাংলার শাসকদলের নেতারাই এই সমস্ত ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে সবচেয়ে বেশী সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ বিজেপির।

অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কোনও অনুমোদন ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা তুলেছিল এই অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি বা চিটফান্ডগুলি।

রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ, সিবিআই হানা নিয়ে বললেন বিজেডি নেতা

দুটি সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন কুনাল ঘোষ, সৃঞ্জয় বসু, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পালের মতো সাংসদ এবং মদন মিত্রের মতো রাজ্যের মন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চোরদের ধরতে যারা সাহায্য করেছিল, তাদের দিকেই তোমরা আঙুল তুলছ। কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চোর বলছ? তিনি কার টাকা তিনি নিয়েছেন? আমায় চোর বলা হচ্ছে, আমি কার টাকা নিয়েছি”?

তিনি আরও বলেন, “কোনও প্রমাণ ছাড়াই সৎ লোকদের যদি চোর বলা হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমি তাঁদের পাশে থাকব, তার জন্য যদি আমাকে জীবন দিতে হয় আমি সেটা করতেই প্রস্তুত, কিন্তু আমি আপোস করব না”।

সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও পরোয়ানা ছাড়াই রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেওয়ার অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সারাজীবন আমি লড়াই করেছি, কিন্তু কোনওদিন হাল ছাড়িনি। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমি প্রস্তুত”।

সিবিআই স্বাধীন সংস্থা, ওদের নিজেদের কাজ করতে দিন, মমতাকে তোপ মুকুলের

বিজেপি-তৃণমূল সম্পর্কে তিক্ততা আরও বাড়ায় রাজীব কুমারকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে ব্যর্থ হওয়ার পরেই। রাজীব কুমারে বিরুদ্ধে দুটি প্রতারণা মামলায় নথি নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে থেকে সিবিআইয়ের প্রতিনিধিদলকে বাধা দিয়ে তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মেট্রো চ্যানেলে ধরনার বসার আগে রাজীব কুমারের বাড়িতে চলে যান ক্রুদ্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিত সিবিআই অফিসের সামনে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কোনওরকম কুশপুত্তুল পোড়াতে নিষেধ করেছেন তিনি।

রবিবার রাত থেকে তৈরি হওয়া ধরনামঞ্চের ব্যানারে লেখা “সংবিধান রক্ষা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষা, ভারতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা রক্ষা, বিপর্যয় থেকে সমস্ত স্তরের সিভিল সার্ভিস রক্ষা”।

এমন একজনকে পুলিশ প্রধান করতামই না, সিবিআই বিতর্কে কটাক্ষ করলেন নীতিশ

তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া। এমনকী, প্রথম থেকে নীরব থেকে ওড়িশার শাসকদল বিজেডিও তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে। “রাজনৈতিক অস্ত্র” হিসাবে সিবিআইকে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে বিজেডি।পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার, সিবিআইকে বিরোধীদের শেষ করার অস্ত্র এবং স্বৈরাচারিতা কায়েম করার অস্ত্র হিসাবে দেখছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অভিযোগ, গণতন্ত্রকে “হত্যা” করার চেষ্টা করছে “মোদী-শাহ জুটি”।

এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতার সঙ্গে যা হচ্ছে, দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সঙ্গেও সেটাই হচ্ছে।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.