CBSE row: সিবিএসইর সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্তে অযথা বিতর্ক হচ্ছে, বললেন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক
হাইলাইটস
- সিবিএসই-র সিলেবাস কমানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে
- এই ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধও পাচ্ছেন অনেকেই
- বিরোধীদের সমালোচনার মোক্ষম জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
নয়া দিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্যে সিবিএসই (CBSE) -র সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্তের নেপথ্যে যাঁরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ (CBSE row) পাচ্ছিলেন তাঁদের মুখের উপর এবার মোক্ষম জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক (Ramesh Pokhriyal Nishank)। সিবিএসই শুধুমাত্র ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জন্যেই নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠক্রমে (CBSE syllabus) থাকা ১৯০ টি বিষয়ের মধ্যে থেকে ৩০ শতাংশে অধ্যায় কমিয়ে দিয়েছে। “বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান এবং অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে বোর্ড পরামর্শ নিয়েই বিষয়গুলি সিলেবাস থেকে আপাতত বাদ দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যাও দেওয়া হবে। যে অধ্যায়গুলো সিলেবাস (CBSE new syllabus) থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তা স্কুলের ইন্টারন্যাল অ্য়াসেসমেন্ট ও বোর্ডের পরীক্ষায় থাকবে না", একথাও জানিয়েছে সিবিএসই।
গণতান্ত্রিক অধিকার, নাগরিকত্ব, ধর্ম নিরপেক্ষতার অধ্যায় সিলেবাস থেকে বাদ দিল সিবিএসই
সিবিএসই-র ঘোষণার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতে শুরু করেন বিরোধীরা। কেউ কেউ এমন ইঙ্গিতও দেন যে, ইচ্ছাকৃতভাবে বেছে বেছে এমন কিছু বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে যা নিয়ে বিতর্ক ছিল। এই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল টুইটে লেখেন, " # CBSESyllabus থেকে কিছু বিষয় বাদ দেওয়া নিয়ে নানারকম মন্তব্য করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হ'ল, যাঁরা এই ধরণের মন্তব্য করছেন তাঁরা আসলে ভুয়ো গল্প ফেঁদে বিষয়টিকে একটি চাঞ্চল্যকর রূপ দিতে চান"।
সিবিএসই সিলেবাস থেকে বাদ সেকুলারিজম, গণতান্ত্রিক অধিকার, হতবাক মমতা!
করোনা পরিস্থিতিতে টানা লকডাউনের জেরে বন্ধ স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই অবস্থায় যেভাবে পড়াশুনোর দিন নষ্ট হচ্ছে তাতে আগামী শিক্ষাবর্ষ সামাল দেওয়া মুশকিল হবে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে বুধবার ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সিবিএসই। চাপ কমাতে সিবিএসই-র জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের পাঠক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয় গণতান্ত্রিক অধিকার, ভারতে খাদ্য সুরক্ষা, ফেডারেলিজম, নাগরিকত্ব এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার মতো মূল অধ্যায়গুলি। বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মাথার উপর থেকে বোঝা কমাতেই এই অধ্যায়গুলি ওই পাঠক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আপডেট হওয়া পাঠক্রম অনুসারে, দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য, “গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য”, “বর্ণ, ধর্ম এবং লিঙ্গ” এবং “গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ” সম্পর্কিত অধ্যায়গুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেওয়া অধ্যায়গুলি হল ফেডারেলিজম, নাগরিকত্ব, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। “স্থানীয় প্রশাসন” অধ্যায়টি থেকে কেবল দুটি অংশ মুছে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে “আমাদের স্থানীয় প্রশাসন কেন দরকার?” এবং “ভারতে স্থানীয় প্রশাসনের বৃদ্ধি”। দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে বোর্ড “সমসাময়িক বিশ্ব সুরক্ষা”, “পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ”, “ভারতে সামাজিক এবং নতুন সামাজিক আন্দোলন” এবং “আঞ্চলিক সম্ভাবনা” বিষয়গুলি একেবারেই সরিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি এখন আর ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি যেমন পাকিস্তান, মায়ানমার, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে পড়তে হবে না। বাদ দেওয়া হয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশের পরিবর্তিত প্রকৃতি এবং নোটবাতিলের মতো অ্ধ্যায়গুলোও।
কিন্তু সিবিএসই-র সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্তের যাঁরা সমালোচনা করেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি টুইটে লেখেন, "কোভিড সঙ্কটে পাঠক্রমের ভার কমানোর নামে নাগরিকত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং দেশভাগের মতো বিষয়কে কেন্দ্রীয় সরকার বাদ দিয়েছে জেনে বিস্মিত হচ্ছি। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি এবং ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কোনও মূল্যেই যাতে এই গুরুতর বিষয়গুলি বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করা হোক।"