অন্য একটি নোট লেখা আছে, মা সকলকে রুটি খাওয়াবেন
নিউ দিল্লি: গত শনিবার, যখন গোটা দেশের বহু পরিবারই নিজেদের নৈশভোজ নিয়ে ব্যস্ত ছিল, উত্তর দিল্লির বুরারির চুন্দাওয়াত পরিবার তখন প্রস্তুতি নিচ্ছিল, দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করা গণ আত্মহত্যার। দড়ি, টুল, নিজেদের শেষ খাবারের অর্ডার দেওয়ায় ব্যস্ত ছিল ওই সময় ওই পরিবারের সদস্যরা। এই পরিবারের বাইরের আর কারও সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই বলেই সিসিটিভি ফুটেজ এবং 11 বছর ধরে লেখা 11'টা ডায়েরি ভালো করে ছানবিন করে জানা গিয়েছে।
এই ব্যাপারে পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, এই পরিবারের একজন সদস্যও ভাবতে পারেননি যে এই 'ক্রিয়াকর্ম'-এর ফলে তাঁদের মৃত্যু হবে বা হতে পারে। তাঁরা যা ভেবেছিলেন, তা হল, এই 'ক্রিয়াকর্ম'-এর ফলে আরও বেশি 'শক্তি' নিয়ে ফিরে আসবেন তাঁরা। চুন্দাওয়াত পরিবারের বাইরের গেটের সামনে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানা গিয়েছে, একজন মহিলা, তাঁর কন্যা এবং ওই পরিবারের দুই কিশোর গণ আত্মহত্যার জন্য ব্যবহার করা হবে বলে টুল আর দড়ি নিয়ে আসছে। পরিবারের সকল সদস্যের মৃত্যু হয় রাত একটার আশেপাশের কোনও সময়।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে আরও যা জানা গিয়েছে, এই পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত নিমগ্নভাবে অনুসরণ করে চলেছেন 45 বছরের ললিত চান্দওয়াতের নির্দেশ। 77 বছরের নারায়ণী দেবীর ছোটো ছেলে তিনি। ডায়েরির সমস্ত নোটগুলোই ললিতের লেখা। এবং, যা ইঙ্গিত, তা হল, ললিত তাঁর মৃত বাবার থেকে নির্দেশ পেয়েই ডায়েরিতে লিখে রাখতেন এবং সেই নির্দেশ মেনেই কাজ করতেন। ললিত ছাড়া আর যাঁর লেখা ওই ডায়েরিটিতে পাওয়া গিয়েছে, তিনি হলেন ললিতের ত্রিশের আশেপাশের বয়সী ভাগ্নি প্রিয়াঙ্কা চুন্দাওয়াত। গত 17 জুন যাঁর বাগদানপর্ব সম্পন্ন হয়।
ডায়েরির নোটগুলি থেকে আরও যা জানা গিয়েছে, তা হল, ওই পরিবারের সদস্যরা মন থেকে বিশ্বাস করতেন যে, ললিতের বাবা এবং নারায়ণী দেবীর স্বামীর 'আত্মা'ই বাঁচিয়ে দেবে তাঁদের। একদম শেষ ডায়েরিতে লেখা শেষ বাক্যটি ছিল- "...একটা কাপে জল রেখে দেবে। ওই জলের রঙ যখন বদলাতে থাকবে, তখনই জানবে যে আমি উপস্থিত হবো এবং তোমাদের সবাইকে বাঁচাব"। ওই 'ক্রিয়াকর্ম' হয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেকের বাঁধন খুলে দেওয়ার কথা ছিল ...
এবার দেখা যাক ঠিক কী কী ধরা পড়েছে ওই ফুটেছে?
10 pm - বাড়ির এক বয়স্ক গিন্নি কিছু তুলে নিয়ে ভেতরে ঢুকলেন।
10:15 pm - দুই ছেলে ধ্রব ও সোহম তার নিয়ে ঢুকল বাড়িতে।
10:39 pm - দোকানে অর্ডার দেওয়া 20 টি রুটি পৌঁছে গেল।
10:57 pm - কুকুর নিয়ে হাঁটতে বেরলেন বাড়ির বড় ছেলে ভুবনেশ।
11:04 pm - বাড়ি ফিরে এলেন।
5:56 am - দুধের গাড়ি চলে গেল বাড়ির সামনে দিয়ে।
ফুটেছে এবং নোট হাতে আসায় পুলিশ এক প্রকার নিশ্চিত এটা কোনও খুনের ঘটনা নয়। নেহাতই আধ্যাত্মিক কারণেই শেষ হয়েছে সুখের পরিবার।