Jawaharlal Nehru University: ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রায় ৭০ থেকে ১০০ জন মুখোশধারী গুণ্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালায়
হাইলাইটস
- জেএনইউ হামলার ঘটনায় পুলিশ-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরুদ্ধ মন্তব্য
- পুলিশের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত রয়েছে, আরটিআইয়ের জবাবে জানাল জেএনইউ
- এর আগে দিল্লি পুলিশ জানায় হামলার দিনের কোনও সিসিটিভি ফুটেজ মেলেনি
নয়া দিল্লি: দিল্লির জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল মুখোশধারীর তাণ্ডবের (JNU Mob Attack) ঘটনা নিয়ে এবার পরস্পর বিরুদ্ধ কথা উঠে এল। যেখানে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে যে ওই দিনের হামলার কোনও ভিডিও ফুটেজ মেলেনি, সেখানে একটি আরটিআইয়ের উত্তরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাল যে ওই দিনের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের কাছে আছে। সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে এই পরস্পরবিরুদ্ধ কথা আরও দ্বন্দ্ব তৈরি করে দিল মানুষের মনে। সেদিন (JNU Violence) ঠিক কী হয়েছিল, ঘুরে ফিরে এই প্রশ্নই এখন সবার মনে। জেএনইউয়ে একদল মুখোশধারী গুণ্ডার তাণ্ডবে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষক মিলিয়ে কমপক্ষে ৩৪ জন আহত হয়েছিলেন। লোহার রড ও হাতুড়ি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করে ওই হামলা চালায় মুখোশধারীরা। তারপরেই ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ। ৫ জানুয়ারি হওয়া জেএনইউ হামলার দিন থেকে শুরু করে বেশ কিছুদিনের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে একটি আরটিআই করা হয়। হামলার দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক সহ বিশ্ববিদ্যালয় (JNU) চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয় আরটিআইয়ে।
সমাজকর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজের দায়ের করা আরটিআইয়ের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ওই সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ বর্তমানে দেখানো সম্ভব নয় কেননা "ফুটেজগুলি পুলিশের কাছে বাজেয়াপ্ত রয়েছে । তাঁরা সেগুলি ভিত্তিতে জেএনইউ হামলার তদন্ত করছে"।
JNU Attack: হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যদের ফোন বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট
এদিকে এর আগে ৯ জানুয়ারি আরেকটি আরটিআই করেন সৌরভ দাস নামে এক সমাজকর্মী। তখন ওই আরটিআইয়ের জবাবে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, হামলার দিন বিকেল ৩টে থেকে রাত ৯টার সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
সৌরভ দাসের করা আরটিআইয়ের জবাবে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ সেই সময় জানায়, "উত্তর / প্রধান গেটের কোনও সিসিটিভি ফুটেজ নেই, কেননা হামলার দিন সার্ভার রুমে ভাঙচুর করা হয়েছিল, ওখানেই সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল ... যাতে ফুটেজ রেকর্ড করা হয়েছিল"।
অঞ্জলি ভরদ্বাজের দায়ের করা একটি আরটিআইয়ের জবাবে জেএনইউর প্রতিক্রিয়া
এর আগে দিল্লি পুলিশও দাবি করেছিল যে হামলাকারীদের শনাক্ত করার জন্যে কোনও সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি, এদিকে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ দু'বার দু'রকম দাবি করেছে। ফলে বিষয়টা পরস্পরবিরুদ্ধ হয়ে উঠেছে।
JNU-তে হামলা চালানো মুখঢাকা মহিলা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী: সন্দেহ পুলিশের
মজার বিষয় হল, এদিকে পুলিশ দাবি করেছে যে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকার জন্যে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে অসুবিধা হচ্ছে আবার সেই তাঁরাই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার দাবি করেছিল।
সৌরভ দাস দায়ের করা একটি আরটিআই জবাবে জেএনইউয়ের প্রতিক্রিয়া
৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রায় ৭০ থেকে ১০০ জন মুখোশধারী গুণ্ডা, লোহার রড এবং হাতুড়ি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করে এবং প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সেখানে এবং জেএনইউয়ের ছাত্রাবাসে হামলা চালায় যাতে আহত হন ৩৪ জন।
তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ জানায়, এক হাজার একর ক্যাম্পাসে লাগানো ১৩৫ টি সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চাইলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সার্ভার রুমে ভাঙচুর হওয়ায় সেগুলোও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
সন্দেহভাজন হামলাকারীদের জেএনইউতে প্রবেশের একটি ছবি
দিল্লি পুলিশ ৫ জানুয়ারির সহিংসতার জেরে এখনও পর্যন্ত দোষী হিসাবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি, যদিও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভাররুম ভাঙচুরের ঘটনায় বাম ছাত্র নেত্রী ঐশী ঘোষ সহ সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।