রবিবারের সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হাইলাইটস
- রবিবারের সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা
- তাঁর দাবি, সিবিআই ভয় দেখিয়ে তৃণমূল নেতাদের বিজেপিতে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছে
- বিজেপির তরফে এই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে
রবিবার একুশে জুলাইয়ের (21 July) সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কেন্দ্রকে অভিযুক্ত করে দাবি করেন, তৃণমূল (TMC) নেতা ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে জোর করে বিজেপিতে (BJP) যোগদান করতে বাধ্য করছে। অথবা ঘুষ বা লোভ দেখিয়ে তাদের টেনে আনছে গেরুয়া শিবিরে। কর্নাটকের উদাহরণ তুলে মমতা দাবি করেন, একই ভাবে এখানেও বিধায়কদের টাকা ও অন্যান্য লোভ দেখিয়ে তাদের দলে নিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপি। বিজেপির তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে কোন কোন সিবিআই আধিকারিক তৃণমূল নেতাদের হুমকি দিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে বলছেন তাঁদের নাম বলতে। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগও তারা উড়িয়ে দিয়েছে।
কাটমানির পাল্টা ব্ল্যাকমানি ফেরানোর দাবি তুললেন মমতা
লোকসভা নির্বাচনের পরে এই প্রথম কোনও বড় জনসভায় ভাষণ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ওই ভাষণে তিনি দাবি করলেন, ২৬ জুলাই থেকে দলের তরফে রাজ্যব্যাপী আন্দোলন শুরু করবেন বিজেপির কাছ থেকে কালো টাকা ফেরত চেয়ে।
সম্প্রতি তৃণমূলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ‘কাটমানি' ফেরত চাইছে জনতা। অভিযোগ, এই ‘কাটমানি' বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের নেতারা তাঁদের কাছ থেকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য নিয়েছেন। রাজ্য জুড়ে চলতে থাকা এই ‘কাটমানি' ইস্যুকে হালকা করতেই মমতা এবার ‘ব্ল্যাক মানি' ফেরত চাওয়ার আন্দোলন করতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল নেতাদের বাস থেকে টেনে নামানোর ‘হুমকি', এফআইআর দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে
রবিবারের সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থা আমাদের নেতাদের সমন পাঠাচ্ছে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হুমকি দিচ্ছে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির ব্যাপারে। তাদের বলা হচ্ছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে অন্যথায় জেলে পাঠানো হবে। অবস্থা হবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাপস পালের মতো। ওরা কয়েকজন অভিনেতা ও বিখ্যাত লোককেও ডেকে পাঠাচ্ছে।''
তিনি এও দাবি করেন, ‘‘বিজেপি আমাদের বিধায়কদের অফার দিচ্ছে দল বদলের বিনিময়ে ২ কোটি টাকা ও একটি পেট্রল পাম্প দেওয়ার। গ্রাম স্তরে টাকাটা ২০ লক্ষ। কর্নাটকে যেমন হচ্ছে, ওরা সব জায়গায় হর্স ট্রেড চালাচ্ছে। এই মডেলটাই অনুসরণ করতে চাইছে। বিজেপি ভেবে নিয়েছে ওরা সবাইকে কিনে নিতে পারবে।''
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার উদ্দেশে বলেন, তিনি চ্যালেঞ্জ করছেন সিবিআই আধিকারিকদের নামটা বলতে যাঁরা তৃণমূল নেতাদের হুমকি দিচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি উনি কোনও আধিকারিকের নাম না করতে পারেন, তাহলে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ থেকে ওঁকে সরে যেতে বলব।''
মমতা এদিন প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর নামে কোনও কথা তিনি বলেননি।
‘কাটমানি' প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আমি একটা মহৎ উদ্দেশ্যে ওই কথা বলেছিলাম। আমি আমার দলীয় সদস্যদের সতর্ক দিয়েছিলাম যে কেউ যেন মানুষকে বঞ্চিত না করে আমাদের সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি থেকে। কিন্তু বিজেপি এটা ভুল বুঝেছে।''
এরপরই তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিকে বলুন আগে কালো টাকা ফেরত দিতে। ওরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার। সে টাকা কোথায়? রাফায়েল চুক্তির সময় নেওয়া ‘কাটমানি' ফেরত দাও।''
বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত দুর্নীতির অভিযোগকে নস্যাৎ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, বিজেপি কোনও ভয় পায় না কারণ তারা কোনও দুর্নীতিতে থাকে না।
ইভিএমে কারচুপি করে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, এই দাবির পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে সোনভদ্রতে ১০ জনকে হত্যা ও কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধিকে আটক করার ব্যাপারেও ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।
তিনি কংগ্রেস ও বাম দলগুলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে লড়তে আমাদের সিপিআই(এম) বা কংগ্রেসকে দরকার নেই। কিন্তু আমাদের অনুরোধ, যে গাছে বসেছে সেই গাছের ডাল তারা যেন না কাটে।''
পাশাপাশি নিজের দলীয় কর্মীদের নম্র ভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে বলে ও অতীতের খারাপ ব্যবহার করে থাকলে ক্ষমা টেয়ে নিতে বলে মমতা জানিয়ে দেন, বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁরা এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বেন না।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)