মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন তিনি রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসি হতে দেবেন না।
হাইলাইটস
- প্যারেডের জন্য ২২টি ট্যাবলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে
- দু’দফার বৈঠকের পর বাদ পড়েছে বাংলার ট্যাবলো
- ২০১৯ সালে যদিও বাংলার ট্যাবলোকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল
কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও বিজেপি (BJP) দ্বন্দ্বে নতুন মোড়। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day)প্যারেডে রাজ্যের ট্যাবলোর প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বুধবার কেন্দ্রের পক্ষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রস্তাবিত ট্যাবলোর প্রস্তাব দু'দফার বৈঠকে আলোচনা করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। দ্বিতীয় বৈঠকের পর কমিটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যাবলো প্রস্তাব নিয়ে অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'' ষোলোটি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় অঞ্চল এবং ছ'টি মন্ত্রক ও দফতরের ট্যাবলোকে প্যারেডের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। মোট ৫৬টি ট্যাবলোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং বিভিন্ন মন্ত্রক ও দফতর থেকে আরও ২৪টি প্রস্তাব ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ২২টিকে বেছে নিয়েছে বাছাই তালিকায়।
প্রতিষ্ঠা দিবসকে ‘নাগরিক দিবস' হিসেবে পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়, বিশেষজ্ঞ কমিটি থিম, ডিজাইন, কনসেপ্ট ও দৃশ্যগত প্রভাবের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সময়ের অভাবজনিত কারণেই প্যারেডে ট্যাবলোর সংখ্যা সীমিত রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গকে কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডের জন্য বাছাই তালিকায় রাখা হয়েছিল।
রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘আমরা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে নানা থিমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এর মধ্যে জল সংরক্ষণের একটি মডেলও ছিল। আমরা আশা করেছিলাম, এটির সম্মতি দেওয়া হবে।''
এনআরসি, সিএএ বিরোধিতায় এবার কলকাতার পথে পুরোহিতরা
রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসে সরকারের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বৈরথ বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। ২০১৯ সালের লোকসভায় রাজ্যে বিজেপির অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই দলের দ্বন্দ্ব আরও চরমে পৌঁছয়।
সম্প্রতি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে কেন্দ্র করেও দুই দলের চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন তিনি রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসি হতে দেবেন না। বিজেপি একে মুখ্যমন্ত্রীর সংখ্যালঘু তোষণের চিহ্ন বলে বর্ণনা করেছে। গত মাসে তৃণমূল কংগ্রেসের চারজন রাজনীতিবিদ বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ সংশোধিত আইনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সময় মৃত চার ব্যক্তির বাড়িতে যান। কিন্তু লখনউ বিমানবন্দর থেকেই তাঁদের ফেরত পাঠায় পুলিশ।
গোটা দেশেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদ বিজেপিকে কিছুটা কোণঠাসা করেছে। বিজেপি পরিকল্পনা করেছে পশ্চিমবঙ্গে পাল্টা প্রচার শুরু করার। সেই প্রচারে বোঝানো হবে, রাজ্য সরকার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে এদেশে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। সমালোচকদের দাবি, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।
(তথ্যসূত্র: এএনআই)