সম্প্রতি জাপানে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।(ফাইল ছবি)
হাইলাইটস
- জয়শঙ্কর বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত বিষয় দ্বিপাক্ষিক থাকবে
- মন্ত্রীর বিবৃতিতে সন্তুষ্ট হয়নি বিরোধীরা
- লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করে বিরোধীরা
নয়াদিল্লি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে “মধ্যস্থতা” করার অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই দাবিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে জানান, তিনি সুনিশ্চিতভাবে সংসদকে আস্বস্ত” করছেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তরফে এই ধরণের কোনও অনুরোধ জানানো হয়নি। সংসদের উভয়কক্ষেই বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমি এটা রেকর্ডে তুলতে চাই...ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তরফে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই ধরণের কোনও অনুরোধ জানানো হয়নি। পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত ইস্যুই ভারত ও পাকিস্তান, দুপক্ষের মধ্যে থাকবে”।
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর থেকে জবাব চাইল তৃণমূল
বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভ, হট্টগোলের মধ্যে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “আমি আবারও উল্লেখ করতে চাই, পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত বিষয় দ্বিপাক্ষিক হিসেবেই থাকবে। আমি আরও বলতে চাই, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা তখনই সম্ভব, যদি পাকিস্তান সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করে। সিমলা চুক্তি এবং লাহোর বিবৃতি উল্লেখ্য বিষয়গুলিতে আলোচনার পথ করে দিয়েছে”।
তবে বিদেশমন্ত্রীর বিবৃতিতে বরফ গলেনি বিরোধী বেঞ্চের। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতি দাবি করে বিরোধীরা।প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা স্লোগান থামাবেন না বলে জানিয়ে দেন। “প্রধানমন্ত্রী সদন মে আও, (প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসুন)” এবং “প্রধানমন্ত্রী জবাব দো (প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে)”, স্লোগান তোলে বিরোধীরা। লোকসভা এবং রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধীর, ফলে একাধিকবার সবার কাজ মুলতুবি করে দিতে হয়।
NDTV কে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, “আমার মত এটাই, লোকসভা এবং রাজ্যসভা, উভয়কক্ষেই প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ জানাবেন বিরোধীরা”।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধি।
সোমবার ইমরান খানের সঙ্গে ওভালে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমার দু সপ্তাহ আগে আলোচনা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। এবং তিনি আসলে বলেছেন, ‘আপনি কি মধ্যস্থতাকারী হতে পারেন', আমি জিজ্ঞেস করলাম ‘কোথায়'? তিনি বললেন, ‘কাশ্মীর'। কারণ এই সমস্যাটা বহু বছর ধরে চলে আসছে। আমি অবাক হলাম, এত বছর ধরে সমস্যাটা কী করে চলল”। যার উত্তরে ইমরান খান বলেছেন, “৭০ বছর”।
‘‘প্রধানমন্ত্রীর অবশ্যই দেশকে জানানো উচিত গোপন সত্যিটা'': ট্রাম্পের দাবির পরে রাহুলের টুইট
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমার মনে হয়, এটার সমাধান চাইবে তারা। আমার মনে হয়, আপনিও সমাধানই চাইবেন, এবং যদি আমি সাহায্য করেত পারি, আমি একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকতে পছ্ন্দ করব। এটা বিশ্বাস করা অসম্ভব যে, দুটি স্মার্ট দেশ, এবং যাতেদর উন্নত নেতারা রয়েছেন, তাঁরা এটার সমাধান করতে পারছেন না...কিন্তু যদি আপনি আমায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চান, আমি সেটা করতে ইচ্ছুক”।
ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে মার্কিন স্টেট প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, যেহেতু কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়, সেই কারণেই, “আলোচনার টেবিলে ভারত ও পাকিস্তানকে স্বাগত জানায় ট্রাম্প প্রশাসন এবং সাহায্য করতে প্রস্তুত আমেরিকা”।
বিজেপির অভিযোগ, দেশের স্বার্থের ঊর্দ্ধে তাদের দলকে রেখে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করছে কংগ্রেস।