Read in English
This Article is From Jul 27, 2018

চন্দ্রগ্রহণ সংক্রান্ত কোন ধারনাটা সত্যি আর কোনটা কুসংস্কার? জেনে নিন

আজ 27 শে জুলাই রাতে বিশ্ববাসী পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী থাকবে, যা প্রায় 1 ঘণ্টা 45 মিনিট স্থায়ী হবে।

Advertisement
খাদ্য

আজ 27 শে জুলাই রাতে বিশ্ববাসী পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী থাকবে, যা প্রায় 1 ঘণ্টা 45 মিনিট স্থায়ী হবে। সম্ভবত এটাই এই শতকের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘোরার সময় চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে পৃথিবী চলে এলে সূর্যের আলো চাঁদ পর্যন্ত সরাসরি পৌঁছতে পারে না। পৃথিবী থেকে যেটুকু আলো ছিটকে এসে চাঁদে এসে পৌঁছয় সেইটুকু আলোতেই চাঁদ আলোকিত হয়। ফলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। এই দিন ব্লাড মুনও দেখা যাবে। কারণ পৃথিবী দ্বারা চাঁদে সরাসরি সূর্যালোক পৌঁছতে বাধা পবে। পৃথিবী থেকে যেটুকু আলো গিয়ে পৌঁছবে তার থেকে চাঁদ দেখে উজ্জ্বল লাল বর্ণের মনে হবে। এই কারণেই একে ব্লাড মুন বলা হয়।

চন্দ্রগ্রহণ 2018: ব্লাড মুনের তারিখ ও সময়

  • আজ 27 শে জুলাই চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে। গ্রহণ শুরু হবে আজ রাত 11:54 pm নাগাদ।
  • পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে 28শে জুলাই রাত 1:00 am নাগাদ। দিল্লী, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালুরু, পুনে প্রভৃতি স্থান থেকে গ্রহণ দৃশ্যমান হবে।
  • দ্বিতীয় দফায় চন্দ্রগ্রহণ হবে 28শে জুলাই রাত 2:43 am নাগাদ, এক্ষেত্রে গ্রহণ হবে খন্ডগ্রাস।

ব্লাড মুন দেখার জন্য সকলে ব্যস্ত হলেও গ্রহণকে ঘিরে কিছু মিথ আছে। শ্রী শ্রী তত্ত্ব পঞ্চকর্মার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মিতালী মধুস্মিতা জানিয়েছেন গ্রহণ চলাকালীন কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়।

  1. গ্রহণ শুরুর দুই ঘন্টা আগে খাওয়া বন্ধ করুন।
  2. গ্রহণের আগে ও পরে হালকা সহজপাচ্য খাদ্যগ্রহণ করুন। হলুদে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় খাবারে হলুদ যোগ করতে পারেন।  আমিষ খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ তা হজম হতে সময় লাগে।  
  3. গ্রহণের আগে রান্না করা খাবার কোথাও নিয়ে যাবেন না। কারণ গ্রহণের ফলে উৎপন্ন বিভিন্ন ক্ষতিকর রেডিয়েশন খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  4. গর্ভবতী মহিলা ও বয়স্করা গ্রহণ চলাকালীন খাদ্যগ্রহণ করতে পারেন। তবে হালকা খাবার যেমন ড্রাই ফ্রুট, কিসমিস খেলে এনার্জি পাওয়া যায়।
  5. জল ও না পান করা উচিত। কিন্তু তেষ্টা পেলে ডাবের জল পান করতে পারেন। এছাড়াও তুলসি পাতা সমেত ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করা জলও আপনি পান করতে পারেন।
  6. দূর্বা ঘাস খাবারের পাত্রের মধ্যে রেখে দেবেন। এর ফলে খাবারে কোনও মাইক্রো-অরগ্যানিক বস্তুর জন্ম হতে পারে না।  

চন্দ্রগ্রহণ 2018: গ্রহণের সময় খাবারের কেন ক্ষতি হয়? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মতামত

ডাক্তার মিতালী জানিয়েছেন, “গ্রহণের সময় ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছনো তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এবং আলোর রেডিয়েশনে পরিবর্তন সংঘটিত হয়, এর ফলে ওই সময় বিভিন্ন রোগের ক্ষতিকর জীবাণু অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর ফলে খাদ্যে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়, ফলে সেই খাবার আর খাওয়ার উপযুক্ত অবস্থায় থাকে না। এছাড়াও গ্রহণ চলাকালীন ধ্যান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ভরা পেটের তুলনায় খালি পেটে ধ্যান ভাল হয়। এই কারণেই গ্রহণের দুই ঘন্টা আগে খাদ্যগ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে ধ্যানে বসার আগে সব খাবার হজম হয়ে যায়।“

Advertisement

চন্দ্রগ্রহণ 2018: সবই কি কুসংস্কার? আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য জেনে নিন

গ্রহণ সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত। অনেকেরই ধারনা গ্রহণের সময় খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ না করা পুরোপুরি কুসংস্কার। নিরোগস্ট্রীটের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ রাম এন কুমার গ্রহণ সংক্রান্ত সমস্ত কুসংস্কার উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “গ্রহণে এটা করবে, সেটা করবে না এসব আয়ুর্বেদে বলা হয়নি। একমাত্র বলা হয়েছে, গ্রহণ চলাকালীন কোনও শুভ কাজ না করতে। তবে গ্রহণ চলাকালীন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণে কোনও বাধা নেই। আয়ুর্বেদ হল স্বাস্থ্য বিজ্ঞান এবং তা কোনওরকম কুসংস্কার প্রচার করে না। গ্রহণের সময় খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং গ্রহণের পর অবশ্যই স্নান করা- পুরোটাই কুসংস্কার। একজন মানুষ গ্রহণ চলাকালীন সাধারণ জীবনযাপন করলে কোনও ক্ষতি হয় না।“

এই প্রসঙ্গে, মেডিযোগার আবিষ্কারক ও পরিচালক যোগী অনুপ জানিয়েছেন, “চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ পৃথিবীর অনেক কাছে অবস্থান করে, এর ফলে জলস্তরে বেশ কিছু ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক বডি উৎপন্ন হয়। আর আমাদের দেহের 72% যেহেতু জল, তাই আমাদের মানসিক কিছু পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা থাকে। মানুষ মুডি হয়ে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যগ্রহণ করতে পারে ফলে যা হজম হতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগে। যা থেকে হজমের গোলযোগ দেখা দিতে পারে। এই কারণেই গ্রহণ চলাকালীন হালকা খাদ্যগ্রহণ করা উচিৎ। এছাড়া, গ্রহণ চলাকালীন সাধারণ জীবনযাপন করতে কোনও সমস্যা নেই, কারণ বাদবাকি সমস্ত কিছুই কুসংস্কার।“

Advertisement

NASA-র ধারনা গ্রহণ চলাকালীন মানুষের কোনও শারীরিক পরিবর্তন হয় না, তবে মানসিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। কুসংস্কার হোক বা না হোক, মানুষ যেটা বিশ্বাস করে আর মেনে চলে!

 

Advertisement