প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘শাস্তিদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সংশোধন।’’
নয়াদিল্লি: ঘৃণ্য অপরাধের কারণে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির প্রাণদণ্ডের সাজা কি হ্রাস করা উচিত জেলে থাকাকালীন তাদের ভাল ব্যবহারের জন্য? সুপ্রিম কোর্টে এমন প্রশ্ন উঠলে তার উত্তর দিলেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে (Chief Justice SA Bobde)। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি শাস্তিদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সংশোধন। কিন্তু জেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ব্যবহারের উপর নির্ভর করে সাজা সংক্রান্ত রায়কে পরিবর্তন করা হলে এর ফলে বন্যা বয়ে যাবে (এই ধরনের পিটিশনের)।'' নিজের পরিবারের সাতজনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক মহিলা ও তার প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড রদ করার পিটিশনের প্রেক্ষিতে এদিন একথা বলেন প্রধান বিচারপতি। দুই অপরাধী শবনম ও সালিম ১০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের আলমোড়ায় সাতজনকে হত্যা করে। এর মধ্যে ছিল এক দশ মাসের শিশুও। ২০১০ সালে দায়রা আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। তিন বছর পরে সেই সাজা অপরিবর্তিত রাখে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ২০১৫ সালে সেই রায়ই রেখে দেয় সুপ্রিম কোর্টও।
ঠান্ডা মাথায় যেভাবে খুনগুলির পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ তুলে এই ধরনের মানুষদের মুক্তি দিলে বিচার ব্যবস্থার উপরে তার কী প্রভাব পড়তে পারে তা ভেবে দেখতে বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
সালিমের আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার আর্জি জানিয়ে বলেছিলেন, তাঁর মক্কেল অপরাধের সময় অশিক্ষিত ছিল। সে জেলে বসেই ডিগ্রি পেয়েছে। এখন সে স্নাতকোত্তর বিষয়ে পড়াশোনা করছে।
তাঁর দাবি ছিল, যেহেতু তাঁর মক্কেল এখন সংশোধিত হয়েছে, তাই তার সাজা মকুব করা হোক।
একই আর্জি জানান শবনমের আইনজীবীও।
তাঁদের আর্জির উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সকলেই বিশুদ্ধ আত্মা থাকে (জন্মের সময়)। কেউই অপরাধী হয়ে জন্মায় না।''
প্রসঙ্গত, সালিমের সঙ্গে তার বিয়েতে পরিবারের মত না থাকায় প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিবারের সকলকে হত্যা করে শবনম। ২০০৮ সালের ১৫ এপ্রিল ওই হত্যাকাণ্ডের পর শবনম জানিয়েছিল, তাদের বাড়ি আক্রমণ করেছিল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা। পরে জানা যায়, সে নিজে বাড়ির সকলকে দুধে বিষ মিশিয়ে হত্যা করেছে। আর গলা টিপে খুন করেছে তার ছোট্ট ভাইপোকে।