মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে সভা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ'র। সেই সভা শেষ হওয়ার পর তুমুল সংঘর্ষ লেগে যায় বিজেপি আর তৃণমূলের মধ্যে। রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ বিজেপি তাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়। জবাবে অমিত শাহ'র সভাতে আসা বিজেপি কর্মীদের কয়েকটি বাইক ও বাস তৃণমূল কর্মীরা ভাংচুর করে জ্বালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বিজেপি আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করলে আমরা কি ওদের মিষ্টি খাওয়াব নাকি? এই ঝামেলার রেশ পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মঙ্গলবার সন্ধেবেলা তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে তাঁর দলকে ‘নিয়ন্ত্রণ করতে বলেন'। সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাজনাথ মমতাকে সাফ জানান, তৃণমূল কংগ্রেস ‘বাংলার শান্তির আবহে অশান্তি ডেকে আনছে'।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারের ডামাডোলের পর তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি করতে আরম্ভ করে। তৃণমূল নেতারা দাবি করতে থাকেন, এটা বিজেপির পূর্ব-পরিকল্পিত চক্রান্ত। তাঁরা বলেন, বিজেপি সমর্থকরা ইট, লাঠি সঙ্গে করে এনে নিজেদের গাড়িগুলোতেই ভাংচুর করতে থাকে। বিজেপির সম্বিত পাত্র আবার বলেন, তৃণমূল এখন তালিবানি মমতার কর্ম হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কাঁথিতে অমিত শাহ'র সভা শেষ হওয়ার পরেই ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়াল বিজেপি-তৃণমূল
রাজনাথ সিংহ মমতাকে ফোন করে বেশ খানিকক্ষণ আলোচনা করেন। তিনি ওই ঘটনার জন্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্টও চেয়ে বসেন।
যদিও, চুপ করে থাকেননি মমতাও। তিনি ফেটে পড়েন ফোনেই। রাজনাথকে কড়াভাবে জানান, আপনারা দয়া করে আগে নিজের দলের নেতা ও সমর্থকদের সামলান।
মঙ্গলবারের সভায় বক্তৃতা দিতে উঠে মমতা ও তৃণমূল কংগ্রেসকে তুমুল বাক্যবাণে বিদ্ধ করেন অমিত শাহ। এই রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ৪২'টি আসনের মধ্যে ২৩'টি আসনে জেতার লক্ষ্য দলীয় কর্মীদের সামনে রেখে মমতাকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় এলে, চিটফান্ড কেলেঙ্কারীতে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে চুরি করেছে যারা, তাদের থেকে ‘বমি করিয়ে' টাকা বের করে আনব।
কাঁথির জনসভা থেকে তিনি বলেন, রাজ্যে কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বোমার কারখানা খোলা হচ্ছে। চিত্রকরের ছবি এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি চিটফান্ড মালিকরা কেনেন। একবার পরিবর্তন করুন। চিটফান্ডের টাকা ফিরিয়ে দেব। অনুপ্রবেশকারীরা তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক। অনুপ্রবেশকারীদের ছাড়া সরকার বিজেপি ছাড়া আর কেউ বানাতে পারবেন না। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়ার অভিযোগ আনেন বিজেপি সভাপতি। বলেন, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের নাম বদলে হচ্ছে কন্যাশ্রী, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার নামও বদলে দেওয়া হয়েছে। ২ টাকা কিলো দরে চাল মোদী সরকার দেয়। আর নাম কেনে মুখ্যমন্ত্রীর দল। নরেন্দ্র মোদীর সরকার বাংলাকে উন্নয়নের কাজে ৮ লাখ কোটি টাকা দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে কী হয়েছে, কেউ জানে না।