এখন আতঙ্কের আরেক নাম করোনা ভাইরাস। এই মারাত্মক ভাইরাসের কারণে এখন চিনের প্রতিটি মানুষই যেন ঘরের দরজায় মদূতের কড়া নাড়া শুনতে পাচ্ছেন। মানুষের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গেই ছড়িয়ে যাচ্ছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। মানুষের সংস্পর্শেই সংক্রমিত হচ্ছে এই করোনা ভাইরাস । দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন চিনের চিকিৎসকরা। তাই আর শুধু চিন (China) নয়, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছেন ভারত সহ গোটা বিশ্বের মানুষ। এখনও পর্যন্ত শুধু চিনেই কমপক্ষে ২৫ জন মারা গেছেন, সংক্রামিত আরও ১,০৭২ জন। এই রোগ নিয়ে (Coronavirus) তাই এখন গভীর চিন্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা "হু"। যদিও এখনও পর্যন্ত এই রোগটিকে নিয়ে গোটা দুনিয়ায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা (Global Health Emergency) জারি করার পথে হাঁটেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাটি (WHO)।
কতটা ভয়ঙ্কর চিনের নতুন ভাইরাস, জেনে নিন ১০ তথ্য
তবে হু কোনও স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি না করলেও সতর্ক ভারত সহ গোটা বিশ্ব। প্রায় প্রতিটি দেশেই চিন ফেরৎ মানুষজনকে বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এদিকে চিনে মারাত্মক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনেক শহরেই জনজীবন প্রায় অবরুদ্ধ। সে দেশের কয়েকটি শহরকে একেবারে মূল জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর ফলে সেখানে একঘরে হয়ে রয়েছেন প্রায় দুই কোটি মানুষ । এদিকে জেনেভায় এই ভাইরাস নিয়ে দু'দিন ধরে জরুরি বৈঠক করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আধিকারিকরা। যদিও বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে হু প্রধান টেড্রোস অ্যাধনম ঘেরবায়াস বলেন, "আমি এখনই আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছি না।" তিনি বলেন, "যদিও এই ভাইরাসের কারণে চিনে জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, কিন্তু গোটা বিশ্বের ক্ষেত্রে এটি নিয়ে এখনও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারি করার মতো অবস্থা আসেনি"। তিনি আরও জানান যে, চিনের বাইরে এখনও অন্যান্য দেশের মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
Coronavirus: এবার চিনের মারণ ভাইরাসের সন্ধান মিলল এক ভারতীয়র শরীরে
এদিকে শোনা যাচ্ছে চিন থেকে ছড়াতে শুরু করা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক ভারতীয়। সৌদি আরবের হাসপাতালে কর্মরত এক নার্স আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। যদিও ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলিধরণ জানিয়েছেন, প্রায় ১০০ জন ভারতীয় নার্সকে পরীক্ষা করা হলে একজন ছাড়া আর কারও শরীরে ওই ভাইরাস পাওয়া যায়নি। তিনি টুইট করে জানান, আসির জাতীয় হাসপাতালে ওই নার্সের চিকিৎসা শুরু হয়েছে এবং তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতীয় নার্সদের আলাদা করে রাখা হয়েছে ওই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে।
ভারতের মানুষজন এই অসুখের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ও সতর্ক। যদিও এখনও পর্যন্ত এই দেশে এই অসুখে কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই সহ সাতটি বিমানবন্দরে ৪৩টি উড়ান ও ৯,০০০ জন যাত্রীকে পরীক্ষা করে দেখা হবে।
দেখুন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের মতামত: