“বাছাই করে অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, লঙ্ঘিত হয়েছে ডব্লুটিও বিধি”, মত চিনের

চিনের দূতাবাসের এক মুখপাত্র জি রং বলেন, “ভারতের নির্বাচিত ক্ষেত্রে এবং বৈষম্যমূলক পদক্ষেপে পদক্ষেপে সন্দেহজনক এবং অস্বাভাবিকভাবে করা হয়েছে, যা নায্য এবং প্রয়োজনীয় স্বচ্ছ পদ্ধতির বিরুদ্ধে, যা জাতীয় নিরাপত্তার প্রত্যাশাকে আঘাত করে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধি লঙ্ঘন করে। এছাড়াও এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রথা এবং অনলাইন ব্যবসার বিরুদ্ধে এবং ভারতে ক্রেতা চাহিদা ও বাজারে প্রতিযোগিতার সঙ্গে সহায়ক নয়”।
 

চিনের সরকারের তরফে বলা হয়েছে, “আমাদের প্রত্যাশা, ভারত, ইন্দো-চিন দ্বিপাক্ষিক উপকারি বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ স্বীকার করবে এবং ভারতকে তাদের বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ পরিবর্তন করার আহ্বান জানাচ্ছি...সমস্ত লগ্নিকারী ও পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সমান আচরণের আশা রাখি...খোলা, স্পষ্ট এবং ব্যবসার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানাই”।
 

ভারতে এই সমস্ত অ্যাপগুলির প্রচুর ব্যবহারকারী রয়েছেন বলে উল্লেখ করে চিনের তরফে বলা হয়েছে, ভারতীয় আইন এবং নিয়মকানুন কঠোরভাবে মেনেই অ্যাপগুলি পরিচালনা করা হয় এবং তাদের নিষিদ্ধ করা এই সমস্ত অ্যাপের কর্মীদের চাকরি হারা করবে। বেজিং এর তরফে ভারতকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, ব্যবসার অধিকার রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব।
 

সরকারের তরফে বলা হয়েছে এই নিষিদ্ধ করা অন্তবর্তী, এবং বিভিন্ন মন্ত্রকের তোলা উদ্বেগ নিয়ে কমিটির সামনে জবাব দিতে পারবে কমিটিগুলি। তারপরেই সেই কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে, এই নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হবে কিনা।
 

টিকটক ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়েছে, কোনও বিদেশি সরকারের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য প্রকাশ করেনি তারা, এমনকী, চিন সরকারের কাছেও না। টিকটক ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, “যদি পরে আমাদের অনুরোধও করা হয়, আমরা তা করব না”। টিকটক ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং অখণ্ডতা তাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
 

সোমবার, যখন ভারতের তরফে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, একটি বিবৃতিতে বলা হয়, “যে সমস্ত তথ্যে তারা কাজ করে, যেগুলি ভারতে সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, প্রতিরক্ষা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সরকারি নির্দেশের পক্ষে বিপজ্জ্নক”।
 

সরকারের বিবৃতি তুলে ধরা হয়েছে “ব্যবহারকারীদের তথ্যের সংকলন, এর খনন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং ভারতের প্রতিরক্ষার পক্ষে বিপজ্জনক, যা আসলে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে আঘাত করে” তা নিয়ে। সরকারের তরফে এই পদক্ষেপকে “ভারতীয়দের সাইবার জগতের সার্বভৌমত্ব সুনিশ্চিত করতে পদক্ষেপ” বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
 

কেন্দ্রের এই নিষিদ্ধকরণের তালিকায় রয়েছে বাইটড্যান্স যা টিকটকের মূল সংস্থা। ২০১৯ থেকে ভারতে তারা অনেক পদস্থ কর্তা নিয়োগ করেছে এবং ১ বিলিয়ম ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মধ্যে এখান থেকেই আসে ৩০ শতাংশ।
 

নিষিদ্ধের তালিকায় রয়েছে টেনসেন্ট, তারা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। ফোর্বসের মাধ্যমে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে টেনসেন্ট হোল্ডিংস। “ক্ল্যাশ অফ কিংস” সহ বাজারে তাদের অনেক অ্যাপ রয়েছে।
 

১৫ জুন লাদাখে সীমান্তে সংঘর্ষের পর থেকেই চিনা সামগ্রি বয়কেটর ডাক উঠেছে। চিনা সংস্থা বয়কটেরও ডাক উঠেছে, তারা ভারতে রফতানি করে ৬০ বিলিয়ন ডলারের সামগ্রি। চিনা খাবার পরিবেশন করা রেস্তোঁরাও বয়কটের ডাক দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে।