নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল রাজ্যসভায় পেশ হওয়ার আগে রাহুল একটি টুইটে এই বিলের বিরোধিতা করেন।
নয়াদিল্লি: বিজেপি নেতা কিরেন রিজিজু (Kiren Rijiju) রাহুল গান্ধিকে (Rahul Gandhi) তাঁর করা এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আক্রমণ করলেন। রাহুল বলেছিলেন, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল (CAB) ‘‘উত্তর-পূর্বকে জাতিগত ভাবে মুছে ফেলতে মোদি-শাহ সরকারের প্রয়াস।'' প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন অরুণাচলের সাংসদ কিরেন রিজিজু। তিনি দাবি করেন, কংগ্রেস আইন লঙ্ঘন করে‘‘সংরক্ষিত এলাকায়'' উদ্বাস্তুদের থিতু হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই বিল বিরোধীপক্ষের ‘‘মহাভুল'' শোধরানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব বিল বুধবার রাতে রাজ্যসভায় পাস হয়ে গিয়েছে। এই বিলে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত অমুসলিম নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু রাহুল গান্ধিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘না রাহুল গান্ধিজি, কংগ্রেস সমস্ত উদ্বাস্তুদের আমাদের সংরক্ষিত এলাকায় থিতু হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে আইন লঙ্ঘন করে। সমস্ত বেআইনি অনুপ্রবেশকারীরা উত্তর-পূর্বে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে কংগ্রেসের নীতির জন্য। আপনাদের মহাভুলটি সংশোধিত হয়েছে। এবার অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের সংরক্ষিত এলাকায় স্থানীয় বা বর্ষীয়ান নাগরিক হতে পারবেন না।''
গত বুধবার নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল রাজ্যসভায় পেশ করার আগে রাহুল একটি টুইটে এই বিলের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এই বিল ‘‘উত্তর-পূর্বের উপরে অপরাধমূলক আক্রমণ।'' এবং ওই অঞ্চলকে জাতিগত ভাবে মুছে ফেলার জন্য সরকারের প্রয়াস।
রাহুলের এই কড়া মন্তব্যের অনুরণন দেখা যায় ডেরেক ও'ব্রায়েনের কণ্ঠস্বরে। তৃণমূল সাংসদ তাঁর বক্তব্য রাখার সময় নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেন বিজেপি সরকারের।
বুধবার যখন এই বিল পেশ করা হচ্ছে এবং পেশ করার পরে উত্তপ্ত বিতর্কে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্যসভা, সেই সময় উত্তর-পূর্বে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। হাজার হাজার পড়ুয়া এবং সমাজকর্মীরা প্রতিবাদে মুখর হন। এরপর ত্রিপুরা ও অসমে নামানো হয় সেনা ও আধা সেনাবাহিনী।
অসম সরকার কার্ফু জারি করে। ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। মঙ্গলবার একই নির্দেশ জারি করে ত্রিপুরা সরকার।
উত্তর-পূর্বে অঞ্চলে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রভূত প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পিছনে রয়েছে আতঙ্ক। প্রতিবাদকারীদের দাবি, এই বিলের ফলে এখানে অনুপ্রবেশকারীদের ঢল নামবে। এর ফলে এখানকার জনজাতির অস্তিত্ব ও জীবনধারণ দুই-ই বিপন্ন হবে।
বিল পেশ করার আগে গত সপ্তাহে অমিত শাহ বৈঠক করেন ওই অঞ্চলের বহু উপজাতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক ছাত্রনেতা জানিয়েছেন, ‘‘এটা সর্বানন্দ সোনোওয়ালের বর্বর সরকার। আমরা কোনও চাপের মুখে নত হব না যতক্ষণ না সিএবি পুনর্বিবেচনা করা হবে।''