সোমশেখর রেড্ডি দাবি করেন যে বিরোধী কংগ্রেস মানুষের মনকে ‘দূষিত’ করছে
বেঙ্গালুরু: মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রকাশ্যে হুমকি কর্ণাটকের বিজেপি নেতার। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (Citizenship Amendment Act) বিরোধিতা করে মাঠে নামলে কী পরিণতি হবে তা একপ্রকার বুঝিয়েই দিয়েছেন ওই বিজেপি বিধায়ক। প্রতিবাদকারীদের সতর্ক করে হুমকির সুরে বিজেপির ওই নেতা (BJP MLA Somashekar Reddy) মনে করিয়ে দিয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে হামলা চালালে কী পরিণাম হবে তা মাথায় রাখা ভাল। “সতর্ক থাকুন! কারণ আমরা জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ এবং আপনারা মাত্র ১৫ শতাংশ। আপনারা কেবল সংখ্যালঘু, এবং আমি চাই আপনারা একবার ভাবুন যে সংখ্যাগরিষ্ঠরা যদি আপনাদের সবার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে তবে ফল কী হবে?” শুক্রবার উত্তর কর্ণাটকের বল্লারিতে একটি সমাবেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এভাবেই স্পষ্ট হুমকি দিয়েছেন সোমশেখর রেড্ডি।
ভারতের সংবিধানের খসড়া তৈরি যার হাতে, তিনি একজন 'ব্রাহ্মণ': গুজরাটের স্পিকার
সোমশেখর রেড্ডি আরও দাবি করেন যে, বেঙ্গালুরু দক্ষিণের সাংসদ তেজস্বী সূর্য বিতর্কিত আইনের বিরোধিতা করা মানুষদের ‘পাংচারওয়ালা' বলে অভিহিত করে সঠিক কাজ করেছেন। রেড্ডি বলেন, “তেজস্বী সূর্য সঠিক বক্তব্যই রেখেছিলেন। এই প্রতিবাদকারীদের বেশিরভাগই পাংচারওয়ালা এবং নিরক্ষর, তাদের যা বলা হয় তাই বিশ্বাস করে নিচ্ছেন।” তিনি দাবি করেন যে বিরোধী কংগ্রেস মানুষের মনকে ‘দূষিত' করছে।
ভারতকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করছে সিএএ: প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা
বল্লারির বিধায়ক আরও বলেন যে উত্তরপ্রদেশের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যেমনটা করা হয়েছে, সেই একই শিক্ষা দেওয়া হবে কর্ণাটকের যে সকল মানুষ জনসাধারণের সম্পত্তি ধ্বংস করেছে তাদেরও। “আমরা ভারতীয়, এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজ্যে যারা জনসাধারণের সম্পত্তি নষ্ট করেছেন তাদের যে সবক শেখাচ্ছেন, আমরাও এখানে সেই শিক্ষাই দেব। সিএএ-এর প্রতিবাদকারীরা গুলিবিদ্ধ হলে ভালই হয়, তবে আপনি যদি আহত হন তবে কোনও হিন্দু চিকিৎসকের কাছে আসুন। তিনি আপনার ক্ষতের চিকিৎসা করবেন,” এএনআইকে বলেন রেড্ডি।
গত মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালীন কর্ণাটকের কিছু অংশে সহিংস বিক্ষোভ দেখা যায়। ১৯ ডিসেম্বর ম্যাঙ্গালুরুতে পুলিশ দু'জনকে গুলি করে হত্যা করে।
অস্ট্রেলিয়ার কোনও এক প্রধানমন্ত্রীর কথা উদ্ধৃত করে রেড্ডি বলেন যে প্রতিটি দেশের বাসিন্দাদেরই দেশে নীতি মেনে চলা উচিত। তার কথায়, “এটা আমার দেশ, আমাদের দেশ। যেমন অস্ট্রেলিয়ার একজন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে: আপনি যদি এখানে বেঁচে থাকতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই দেশের নীতি অনুসারে জীবনযাপন করতে হবে। তা না হলে আপনি আমাদের দেশ ত্যাগ করতে পারেন।”
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের লক্ষ্য বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিক হওয়ার পথকে আরও সহজ করে তোলা। তবে প্রতিবাদকারী এবং বিরোধীরা দাবি করেছেন যে ‘বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক' এই আইনটি কেবলমাত্র দেশজুড়ে এনআরসি'র ভিত্তি প্রস্তুত করার প্রথম ধাপ, যা লক্ষ লক্ষ আসল নাগরিককে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করার ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।