Citizenship Act Protests: উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছিল যে রাজ্যে হিংসার ঘটনায় কেবল প্রতিবাদকারীরাই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছিল
বিজনৌর, উত্তরপ্রদেশ: নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Act) বিরুদ্ধে চলতে থাকা আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠার পরে গত সপ্তাহ থেকেই রাজ্য জুড়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা থামাতে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ (Uttar Pradesh Police)! বারেবারে অস্বীকার করে এলেও এই প্রথম উত্তরপ্রদেশ পুলিশ স্বীকার করল গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। ওই রাজ্যে ১৫ জন মানুষ মারা গিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগ গুলির আঘাতেই প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এর আগে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছিল যে তারা কোথাও বিক্ষোভকারীদের উপরে একটি গুলিও চালায়নি। কিন্তু এখন, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের (Uttar Pradesh's Bijnor) পুলিশ NDTV-কে জানিয়েছে যে শহরে নিহত দুই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন, পুলিশের গুলিতেই মারা গিয়েছিল। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন (Citizenship (Amendment) Act) নিয়ে শুক্রবার নতুন হিংসা ছড়িয়ে পড়ে উত্তরপ্রদেশের নানা এলাকায়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল বিজনৌরও। বিজনৌরের পুলিশ প্রধান জানান, আত্মরক্ষার জন্য একজন কনস্টেবল ২০ বছর বয়সী সুলেমানকে (Suleman) লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
“আমাদের একজন কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়া হয়। যখন ছিনতাই করা বন্দুকটি আমাদের কনস্টেবল ফিরিয়ে নিতে এগিয়ে যান, তখন উন্মত্ত জনতার মধ্যে থেকে একজন তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যান আমাদের পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি সামলাতে এবং আত্মরক্ষা করতে উপদ্রবীদের (বিক্ষোভকারী) দিকে গুলি চালান ওই কনস্টেবল,” এনডিটিভিকে বলেন বিজনোর পুলিশ সুপার সঞ্জীব ত্যাগী (Bijnor Superintendent of Police Sanjeev Tyagi)। “তাঁর বন্ধুরা তাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তার নাম সুলেমান এবং তিনি মারা গিয়েছেন। জনতার দিক থেকে গুলি চলার ফলে আরও একজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়, তার নাম আনাস,” জানান সঞ্জীব ত্যাগী।
Citizenship Act Protests: সুলেমানের পরিবার জানিয়েছে সিভিল সার্ভিস প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি
পুলিশ কর্মকর্তার এমন বক্তব্য উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধানের বক্তব্যের সরাসরি বিরোধিতাই করে। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে কেউ মারা গেছেন এমনটা অস্বীকার করেন পুলিশ প্রধান। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধান ওপি সিং (UP police chief OP Singh) শনিবার এনডিটিভিকে বলেছিলেন, “আমরা কোথাও একটা গুলিও চালাইনি।"
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছিল যে রাজ্যে হিংসার নানা ঘটনায় কেবল প্রতিবাদকারীরাই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছিল। পুলিশের দাবি ছিল যে বিক্ষোভকারীদের আগ্নেয়াস্ত্রে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
মৃত সুলেমানের পরিবার জানিয়েছে সিভিল সার্ভিস প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সুলেমান এবং প্রতিবাদের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগসূত্রই ছিল না। পরিবারের দাবি পুলিশ তাদের ভয় দেখিয়েছিল।
“আমার ভাই নামাজ পড়তে গিয়েছিল। নামাজের পরে কিছু খেতে বাড়িতে ফিরছিল সে। গত দু'দিন ধরে তাঁর জ্বর ছিল। ও আমাদের বাড়ির কাছে যে মসজিদ সেখানে যায়নি। ও অন্য মসজিদে গিয়েছিল। মসজিদ থেকে বেরোতেই ও দেখে বাইরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাচ্ছে, ব্যাপক লাঠিচার্জ চলছে। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলে,” সুলেমানের ভাই শোয়েব মালিক এনডিটিভিকে বলেন।
রবিবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা বিজনোরে গিয়ে সুলেমান ও আনাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।