Citizenship Amendment Act-এর বিরুদ্ধে সারা দেশ উত্তাল
কলকাতা: বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Amendment Act (CAA)) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ক্রমেই বাড়ছে। রবিবার কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল (Union HRD Minister Ramesh Pokhriyal) জানান, কেন্দ্র সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার বিষয়টি কোনওভাবেই সহ্য করবে না। রমেশ পোখরিয়াল জানান যে, যে কেউ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতেই পারেন তবে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এ থেকে দূরে রাখতে হবে, যেহেতু বহু শিক্ষার্থী দূরের জায়গা থেকে পড়াশোনা করতে আসে। মন্ত্রীর কথায়, “নরেন্দ্র মোদি সরকার কোনও মূল্যে এসব সহ্য করবে না।"
নরেন্দ্র মোদির সরকার আম্বেদকরের স্বপ্নকে ধ্বংস করছে: আসাদুদ্দিন ওয়াইসি
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে চলেছে।
পোখরিয়াল বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে সিএএ-র বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে বলেন, “ধর্মেয় ভিত্তিতে দেশভাগের জন্য দায়ী কংগ্রেস, এই দল সিএএ সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।”
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে মন্ত্রী জানান, ২০০৫ সালে সাংসদ থাকাকালীন রাজ্যে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পোখরিয়াল বলেন, “তিনি সোচ্চার হয়ে তত্ক্ষণাৎ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার দাবি করেছিলেন।”
CAA Protest: বিজনৌরে প্রতিবাদের সময় যুবকের মৃত্যু, পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা
নতুন শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে পোখরিয়াল বলেন এটি দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে যুক্ত হবে। “৩৩ বছর পরে যে নতুন শিক্ষানীতি আনা হবে তা ভারতকেন্দ্রিক এবং দেশের মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। দেশের শিক্ষা জ্ঞান, বিজ্ঞান এবং পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে অগ্রসর হবে,” বলেন মন্ত্রী।
পোখরিয়াল পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদানের কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিষয়ে দাবি করেন যে এই দেশগুলি ‘ধর্মনিরপেক্ষ নয়'। মন্ত্রী জানান যে দেশভাগের সময় হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন এবং খ্রিস্টান সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু মিলে পাকিস্তানের জনসংখ্যার ‘২৩ শতাংশ' ছিল, তবে বর্তমানে এই সংখ্যাটি প্রায় ৩ শতাংশ।
“আমি মমতাজিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, এই মানুষরা সব কোথায় গেল এবং কংগ্রেসেরও উত্তর দেওয়া উচিত যে তারা ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিল নাকি তাদের হত্যা করা হয়েছিল নাকি পালাতে বাধ্য করা হয়েছিল কিনা?” বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
পোখরিয়াল দাবি করেন যে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা “স্বাধীনতার সময়কার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১৪ শতাংশ হয়েছে। বিরোধীরা সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করছে, তবে সংবিধান দেশের নাগরিকদের জন্য এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য দাতব্য ঘর নয়।” তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন যে ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চেয়ে দেশের মুসলমানদের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী আর কেউ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কারণেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রশাসনের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।