নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে মানুষের উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের (Citizenship Amendment Act) বিরোধিতা করা উত্তর-পূর্বের পড়ুয়াদের সংগঠনের তরফে জানানো হল, আগামী মাসে অসমের গুয়াহাটিতে (Assam's Guwahati) একটি খেলার অনুষ্ঠান বিঘ্নিত করবেন না তাঁরা, তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গেলে তাঁকে বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হবে। মঙ্গলবার দিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অরগানাইজেশন এবং অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, “৯ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি গুয়াহাটিতে যে খেলো ইন্ডিয়া যুব অনুষ্ঠান হবে, আমরা তাতে বিঘ্ন ঘটাবো না। তবে সেই সময় যদি প্রধানমন্ত্রী মোদি গুয়াহাটি যান, তাহলে তাঁকে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তাঁকে অহিংস আন্দোলনের সম্মুখীন হতে হবে”।
হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পথে শাহিনবাগের 'দাদিরা'
অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন জানিয়ে মানুষের রায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করারও অভিযোগ তোলেন সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মানুষ তাঁকে ২০১৬ নির্বাচনে ভোট দিয়েছিল কারণ, সবাই ভেবেছিল তিনি অসম অধিগ্রহণ চুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, তবে তিনি এই আইনটিকে সমর্থন করে মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন”। তাঁর কথায়, “সর্বানন্দ সোনোওয়াল দুরকম কথা বলছেন, যেখানে উত্তর-পূর্বের অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীরা নাগরিত্ত্ব সংশোধন আইনের বিরোধিতা করছেন”।
সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্যের দাবি, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল প্রাক্তন কমরেড-ই-আর্মস এবং তিনি এলাকার মানুষের “শত্রু' হয়ে উঠেছেন। তাঁর কথায়, “সর্বানন্দ সোনোওয়াল ঘাতক সরকার চালাচ্ছেন। তাঁর সরকার নিরীহ পড়ুয়াদের হত্যা করেছে। তিনি নিজেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন”।
“পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন”, নাগরিকত্ব আইনের বিক্ষোভকারীদের বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
এই দুটি সংগঠন দাবি করেছে, এই আইনের ফলে উত্তর-পূর্বের এলাকাগুলিতে বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা ভরে যাবে, ফলে এটি প্রত্যাহার করতে হবে। পড়ুয়াদের প্রতিনিধি বলেন, “আমরা অবৈধ বাংলাদেশীদের আসতে দেব না, এখানে স্থায়ী হতে এবং অসম ও উত্তর-পূর্বের মানুষকে শাসন করতে দেব না। এই অসাংবিধানিক এবং সাম্প্রদায়িক আইনটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাব”। পাশাপাশি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ “যেভাবে বাংলাদেশীদের অসমে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন, সেভাবে ভারত-পাক সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পাকিস্তানীদের গুজরাটে ঢুকতে দিন”।
সিএএ বিলোপের কোনও প্রশ্নই নেই, রাজস্থানে কংগ্রেসকে তোপ অমিতের
দুদিন আগে, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলারও নিন্দা করেন সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য, বলেন. নাম করা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ সরকার। তাঁর কথায়, “এটি জেএনইউ এর পড়ুয়াদের ওপর বর্বরোচিত হামলা। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ধরণের হামলা অপ্রত্যাশিত”, পাশাপাশি তিনি বলেন, আহতদের পাশে থাকার বার্তা দিতে ৮ এবং ৯ জানুয়ারি উত্তর-পূর্ব জুড়ে বিক্ষোভ করবে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অরগানাইজেশন।
আজকের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি দেখতে ক্লিক করুন:
এই প্রথমবার দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যাপারে ধর্মকে রাখা হয়েছে। সরকারের দাবি, এই আইনের ফলে, তিনটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের সংখ্যালঘুরা ২০১৫ সালের আগে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে, ভারতে এলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ সহজ হবে। সমালোচকদের দাবি, এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিভাজনমূলক এবং সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করে।