রাজ্যসভায় একইভাবে তারা ভোট নাও দিতে পারে বলে জানাল উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনা
মুম্বই: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে (Citizenship Amendment Bill), লোকসভায় সমর্থন করেছে শিবসেনা (Shiv Sena), সোমবার তা পাশ হয়েছে লোকসভায়, মঙ্গলবার দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে জানিয়ে দিলেন, রাজ্যসভায় বিলটিতে শিবসেনার সমর্থন নিশ্চিত নয়। বিলটিতে সমর্থন করায়, নিন্দা করে ট্যুইট করেছেন রাহুল গান্ধি, ফলে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে চাপে রয়েছে শিবসেনা। দলের সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেটিকে বিলটিতে সমর্থন দেব না। গতকাল আমরা লোকসভায় যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তার উত্তর পাইনি”। গতমাসে এনসিপি ও কংগ্রেসের সমর্থনে মহারাষ্ট্রের কূর্সিতে বসেন উদ্ধব ঠাকরে।
মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “রাজ্যসভায় তারা যখন বিলটি আনবে, তাদের কিছু পরিবর্তন করা উচিত”। শিবসেনা নেতা এবং উদ্ধব ঠাকরে ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় রাউত বলেন, “লোকসভার মতো একইভাবে আমরা ভোট নাও দিতে পারি, এটা একটা ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি”। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে এটা শিবসেনার এখনও পর্যন্ত সর্বশেষ অবস্থান।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে অমুসলিম পাকিস্তানি, আফগান, এবং বাংলাদেশীদের ভারতীয় নাগরিক করার রাস্তা সহজ করে দেওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধির ট্যুইটের পরেই, এদিন নিজেদের অবস্থান জানায় শিবসেনা। নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি, তাদের অভিযোগ, এটি পক্ষপাতমূলক এবং সংবিধানের সাম্যতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির বিরুদ্ধে।
ট্যুইটে রাহুল গান্ধি লেখেন, “নাগরিকত্ব বিল ভারতীয় সংবিধানের ওপর আঘাত। যারা এটিকে সমর্থন করে তারাও আঘাত করে এবং আমাদের দেশের ভিতকে নষ্ট করে”।
দলের মুখপত্র সামনায় নাগরিকত্ব বিলের নিন্দা করেছিল শিবসেনা, তারপরেও, সেটিতে তাদের সমর্থন অনেককেই অবাক করেছে, সামনায় এই বিলকে ভারতে “অদৃশ্য বিভাজন” বলে মন্তব্য করেছে।
মধ্যরাতে, লোকসভায় পাশ হয় বিলটি, বুধবার সেটি রাজ্যসভায় পেশ করা হবে, সংসদের উচ্চকক্ষে সরকার সংখ্যালঘু হওয়ায় সেখানে পাটিগণিত বেশ কঠিন।
তবে উদ্ধব ঠাকরের থেকে পৃথকস মত পোষণ করেছে শিবসেনার সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত, রাজ্যসভায় তাঁদের দল বিলে সমর্থন দেবে কিনা, সে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের কি ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে ? জাতীয় স্বার্থের পক্ষে শিবসেনা, এটা কারও একার নয়”।
রাজ্যসভায় শিবসেনার তিনজন সাংসদ রয়েছেন।
অরবিন্দ সাওয়ান্ত NDTV কে বলেন, “দেশের স্বার্থে আমরা বিলটিকে সমর্থন করেছি। শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই প্রযোজ্য কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম”, এর ভিত্তিতেই আদর্শগতভাবে ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও জোট বেঁধেছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস।
সংসদে শিবসেনার অবস্থানকে মহারাষ্ট্রে জোটের পক্ষে সমস্যা বলে মনে করছেন সমালোচকরা, হিন্দুত্ত্ববাদী আদর্শে বিশ্বাসী শিবসেনা, ও কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতা আদর্শ, ফলে জোট নিয়ে উধ্বেগ ছিলই কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের।
মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে তৈরি হওয়া জোট মহা বিকাশ অগধি হওয়ার পরেই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ছেড়ে দেন শিবসেনার একমাত্র সদস্য অরবিন্দ সাওয়ান্ত।