কলকাতা: লোকসভা নির্বাচন নিয়ে আসনবন্টন নিয়ে মনোমালিন্য চরমে পৌঁছে যাওয়ার পর কংগ্রেস রীতিমত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চূড়ান্ত সীমা বেঁধে দিল সিপিএমকে। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য নির্বাচন কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন বাংলার কংগ্রেসের ইনচার্জ গৌরব গগৈ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, এটা ঠিক হয়েছে যে, রাজ্যের কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং বিধানসভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান আসনবন্টন নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে কথা বলে আগামী ৩ মার্চের মধ্যে এই ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “সিপিএমের জন্য আমরা অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করব না। আমরা কোন কোন কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে চাই, তা ওঁরা জানেন। এবার ওঁরা আমদের জানাক যে, ওঁরা ঠিক কী চান। আসনবন্টনের জন্য আমরা নিজেদের সম্মান নষ্ট করতে চাই না। এমনিতেই রাজ্যের ৪২'টি কেন্দ্রের জন্য আমাদের প্রার্থীতালিকা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত”।
রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের আগে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে আসনবন্টন নিয়ে তরজা এতটাই তুঙ্গে যে, লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একাই লড়বে বলে প্রায় স্থির করে নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা মঙ্গলবার বলেন, বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একটি বৈঠকেই এই ইস্যুটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “আমরা এখন লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য থেকে একাই লড়াই করব বলে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। সিপিএম ও বামফ্রন্ট কয়েকটি আসন নিয়ে এতটাই গোয়ার্তুমি করছে যে, আর এই জোট সম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে। কথা আর এগোবে না বলেই মনে হয়। তাই একা লড়াই করাই ভালো”।
সিপিএম ইতিমধ্যেই এই লড়াইতে তাদের পাশে পেয়ে গিয়েছি দীর্ঘদিনের শরিক সিপিআই ও আরএসপি-কে। যদিও, তাদের অন্য এক শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা পুরুলিয়া, কোচবিহার ও বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে প্র্রার্থী দিতে চায়। অন্যদিকে, কংগ্রেসও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে তাদের প্রার্থী দাঁড় করাতে চায় বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল।
প্রদেশ কংগ্রেসের ওই নেতা বলেন, “এই তিনটি আসন ছাড়াও রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন নিয়েও যথেষ্ট মনোমালিন্য হয়েছে। আমরা অন্তত, ১৮'টি আসনে লড়তে চাই। অথচ, সিপিএম আমাদের ১২'টির বেশি আসন দিতে কোনওভাবেই রাজি নয়। এভাবে তো চলতে পারে না। তাই, একা লড়াই করাই ভালো”।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী। অন্যদিকে, কংগ্রেস জিতেছিল পাঁচটি লোকসভা আসনে। সেখান থেকেই উত্তর মালদার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বেরিয়ে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় এই মুহূর্তে এই রাজ্য থেকে কংগ্রেসের সাংসদের সংখ্যা নেমে এসেছে চারজনে।