বহরমপুর কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের কংগ্রেস সাংসদ Adhir Ranjan Chowdhury
নয়া দিল্লি: আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় (INX Media Case) সুপ্রিম কোর্ট প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদাম্বরমের (P Chidambaram) জামিন মঞ্জুর করার পর লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা তথা সহকর্মী অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি টুইট করেন। অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) ওই টুইটটি সোশ্যাল সাইট ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলোড়ন ফেলে দেয়।
তিনি মঙ্গলবার টুইট করেন, "পি চিদাম্বরম জি শেষ পর্যন্ত এই সত্যিটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন যে দিনের শেষে, তিনি অপ্রতিরোধ্য" । টুইটারে কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর এই পোস্টটি অসংখ্য প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
যদিও কেউ কেউ এই প্রশ্নে অবার হয়ে প্রশ্ন করেন যে বাংলার ওই কংগ্রেস নেতা কী বোঝাতে চেয়েছেন, পাশাপাশি অন্যরা দাবি করেন যে অধীর চৌধুরী আসলে তিরুবনন্তপুরম সাংসদ শশী থারুরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার চেষ্টা করছেন। আসলে শশী থারুরও এমন একজন রাজনীতিবিদ যিনি প্রায়শই টুইটারে এমন কিছু লেখেন যা নিয়ে বিতর্ক বা আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
শশী থারুর যদিও নিজের বক্তব্যের সমর্থনে একের পর এক যুক্তিও খাড়া করে থাকেন।
এই প্রথম যে নিজের মন্তব্যের মাধ্যমে কংগ্রেস দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী, তা কিন্তু নয়। কয়েকমাস আগে কেন্দ্রের তরফ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার পর তিনি একবার এও দাবি করেন যে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। তাঁর এই মন্তব্য়েও ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়ে তাঁর দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
সংসদে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বলতে গিয়ে কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেললেন অধীর চৌধুরী
"আপনি বলছেন যে এটি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। আহলে রাষ্ট্রসংঘ যে সেই ১৯৪৮ সাল থেকে এটির বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছে, তাহলে এটা আদৌ কোনও অভ্যন্তরীণ বিষয়? আমরা সিমলা চুক্তি এবং লাহোর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছি, সেটাও কোনও অভ্যন্তরীণ বা দ্বিপাক্ষিক বিষয়?" কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন ওই কংগ্রেস নেতা।
এর আগে গত অগাস্টে, অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কাণ্ডকারখানা নিয়ে কটাক্ষ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একটি সরকারি দফতরের প্রতিবাদ করার সময় নিজের গায়ের জামা খুলে পুলিশকে গুলি চালানোর সাহস দেখানোর জন্য চ্যালেঞ্জ করতে শোনা যায় ওই কংগ্রেস নেতাকে। সেই ঘটনা নিয়েই তাঁকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবারই আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় সিবিআইয়ের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে মূল অভিযুক্ত পি চিদাম্বরমের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট।
আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন পি চিদাম্বরম
প্রাক্তন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের বয়ানের ভিত্তিতেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদাম্বরম এবং তাঁর পুত্র কার্তি চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে মামলা সাজায় ইডি। ওই দু'জনেই তখন আইএনএক্স মিডিয়া নামক টেলিভিশন সংস্থাটির প্রধান ছিলেন। ওই সংস্থার জন্যেই পি চিদাম্বরম ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন বৈদেশিক তহবিলের অনুমোদনে সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে কার্তি চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি এই চুক্তির বিনিময়ে বিরাট অঙ্কের ঘুষ পেয়েছিলেন।
যদিও পি চিদাম্বরম এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন যে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হচ্ছে। এমনকি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি কোনওদিন দেখা করেননি বলেও দাবি করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।