কংগ্রেস ছাড়লেন গুনা কেন্দ্রের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে সূত্রের খবর
হাইলাইটস
- প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
- এর আগে অমিত শাহের সঙ্গেও বৈঠক করেন ওই কংগ্রেস সাংসদ
- তারপরেই কংগ্রেস দল থেকে ইস্তফা দেন জ্যোতিরাদিত্য
ভোপাল:
মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেস ছাড়লেন চারবারের সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় হতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর পদত্যাগের কিছুক্ষণ পরেইষ ইস্তফাপত্র পাঠান আরও ২১ জন কংগ্রেস বিধায়ক, মধ্যপ্রদেশ রাজভবন সূত্রের খবর এমনই। এর আগে, সূত্র মারফৎ জানা যায়,. পদত্যাগে প্রস্তুত ২৫ জন কংগ্রেস বিধায়ক। পদত্যাগ গৃহীত হলে, সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে কমল নাথ সরকার এবং সরকার পড়ে যেতে পারে।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
হোলির দিনে নাটকীয় রাজনীতি মধ্যপ্রদেশে, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার। তার কিছুক্ষণ আগেই নিজের ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে পদত্যাগপত্র পোস্ট করেন তিনি। ৯ মার্চ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধিকে লেখা চিঠিতে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া লেখেন, “..গত কয়েকবছর ধরে আপনা থেকেই এই রাস্তা তৈরি হয়েছে”। তিনি লেখেন, “আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই...আমার রাজ্য ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা, আমি মনে করি, এই দলে সেটা আমি আর করতে পারছিলাম না”।
কয়েক মিনিট পরেই গুনা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদকে বহিষ্কার করে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেন, “দল বর্হিভূত কাজের জন্য” জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে “এখনই” দল থেকে বহিষ্কার করা হল।
নয়াদিল্লিতে সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এক ঘন্টা পর, ভোপালের হোটেলে বৈঠক করবেন মধ্যপ্রদেশের বিধায়করা। সূত্রের খবর, সরকার গড়ার দাবি জানানোর পরিকল্পনা তৈরি হবে সেখানে। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হতে পারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বাণকে।
বেশ কিছু সময় ধরেই কংগ্রেস নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ ছিলল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার। একসময়ে গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠ, মাত্র ২৩ জন বিধায়ক তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করায়, সেই পদ দেওয়া হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের অপ্রত্যাশিত জয়ে অবদান ছিল তাঁর। অগস্টে, ৩৭০ ধারা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানে সমর্থন জানান তিনি।
নাটক জমে উঠতেই, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলত, বলেন, তিনি “মানুষের বিশ্বাস ও আদর্শের সঙ্গে” বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, এবং তিনি “আত্মকেন্দ্রীক রাজনৈতিক উচ্চাশা সম্পন্ন” নেতা ছিলেন। তাঁর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে “ঘর ওয়াপসি” বা “ঘরে ফেরা” বলেছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক যশোধারা রাজে।
কংগ্রেসের তরফে পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সচিন পাইলট এবং করন সিং কে। সূত্র মারফৎ NDTV জানতে পেরেছে, রাজ্যসভা নির্বাচনে সেরাজ্যের তিন প্রার্থীর মধ্যে প্রথম প্রার্থী হিসেবে তাঁকে দাঁড় করানো হবে।
এদিনের ঘটনাকে সরকার ফেলার “চক্রান্ত” বলে মন্তব্য করেছেন গত সপ্তাহে আটকে রাখা ১০ জন বিধায়ক “পুনরুদ্ধারের” নেতৃত্ব দেওয়া মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। বিধায়কদের ৩৫ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি, পাশাপাশি তোপ দাগেন বিজেপি ও শিবরাজ সিং চৌহ্বাণের বিরুদ্ধেও।
পাল্টা কংগ্রেসকে দ্বিমত অবস্থান বলে কটাক্ষ করেছেন শিবরাজ সিং চৌহ্বাণ, বলেন,. “কয়েকজন কংগ্রেস নেতার কাছে, তিনি যখন কংগ্রেসের ছিলেন, তখন ছিলেন মহারাজ, এখন তিনি মাফিয়া হয়ে গেলেন”। কমল নাথের মন্তব্য প্রসঙ্গে একথা বলেন তিনি, কমল নাথের অভিযোগ, সরকার ফেলার চেষ্টা করছে “মাফিয়া”। পুরো ঘটনাকে “কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ” বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা। বিজেপি নেতা নরোত্তম মিশ্র, যার সম্পর্কে সূত্র জানিয়েছিল, এই ঘটনায় তিনি যুক্ত, তিনি বলেন, পদত্যাগে প্রমাণ, “কংগ্রেসে কিছু ভুল রয়েছে”।
কংগ্রেস বিধায়ক বিশাহু লাল পরে বিজেপিতে যোগ দেন শিবরাজ সিং চৌহ্বাণের উপস্থিতিতে। সাংবাদিকদের তিনি দাবি করেন, বিজেপিতে যোগ দেবেন আরও অনেক কংগ্রেস নেতা।
এদিন সকালে, ১২০ জন বিধায়ক ছিল কমল নাথ সরকারের, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যা ১১৬ থেকে মাত্র ৪ বেশি। ২১ জন বিধায়কের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে, সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যা হবে ১০৪। বিজেপির রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক, কংগ্রেসের রয়েছে ৯৩, সমাজবাদি পার্টি, বহুজন সমমাজবাদি পার্টি, নির্দল বিধায়কদের ছাড়া।
Post a comment