চলতি সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে এক বৈঠক করবেন চিনের প্রেসিডেন্ট Xi Jinping
হাইলাইটস
- কেন হংকং নিয়ে চিনকে পাল্টা জবাব দিচ্ছে না ভারত, প্রশ্ন তোলেন মণীশ তিওয়ারি
- ভারত বলেছে যে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা অনুচিত
- শি জিনপিং চেন্নাইয়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একটি বৈঠক করবেন
নয়া দিল্লি: শুক্রবার ভারত সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping)। তবে তাঁর আগে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদের পরিস্থিতি তৈরি হয়। কেননা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পর চিনের প্রেসিডেন্ট বলেন যে জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছেন তিনি। এরপরেই চিনের (China) বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেয় ভারত। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে পরামর্শ দিল বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের প্রবীণ নেতা মণীশ তিওয়ারি প্রশ্ন করেন যে কেন সরকার হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ, জিনজিয়াং ও তিব্বতে অধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে চিনের সমালোচনা করার সুযোগ হাতছাড়া করছে।
"শি জিনপিং বলেছেন যে তিনি কাশ্মীরের দিকে নজর রেখেছেন, কিন্তু @ পিএমও ইন্ডিয়া / এমইএ (প্রধানমন্ত্রীর দফতর/কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক) কেন বলছেন না যে ১) আমরা হংকংয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভের দিকে নজর রেখেছি ২) আমরা জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিকে নজর রেখেছি ৩) তিব্বতে আমরা অব্যাহত নিপীড়নের দিকে নজর রেখেছি ৪) আমরা দক্ষিণ চিন সমুদ্রের দিকে নজর রেখেছি", টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি।
গতকাল (বুধবার), চিনের প্রেসিডেন্ট এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মধ্যে একটি বৈঠকের পর জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে চিনের বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত তাঁর প্রতিক্রিয়া জানায়। "আমরা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি দেখেছি, যা কাশ্মীর নিয়ে তাঁদের আলোচনারও উল্লেখ করে। এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট এবং অনড় রয়েছে। আমরা আগেই বলেছি যে জম্মু ও কাশ্মীর আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। চিনও আমাদের এই অবস্থান ভাল করেই জানে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অন্য কোনও দেশ কথা বলুক এটা আমরা চাই না", বলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার।
কাশ্মীর নিয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মন্তব্য, পাল্টা জবাব ভারতের
বুধবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে ফের কাশ্মীর প্রসঙ্গ ওঠায় চিনের প্রেসিডেন্ট ইমরান খানকে আশ্বস্ত করেছেন যে তাঁদের "মূল স্বার্থ" এক হওয়ায় পাকিস্তানকে সমর্থন করবেন তাঁরা। চিনের সংবাদসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, চিনের প্রেসিডেন্ট নাকি এমন কথাও বলেছেন যে কাশ্মীর ইস্যুতে "ঠিক এবং বেঠিক" দুই বিষয় নিয়েই ভারত ও পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ভারতের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনে বসার আগেই কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ওই ধরণের মন্তব্য় করলেন চিনের প্রেসিডেন্ট। এই শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, "আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে দুই নেতাই দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলবেন। ভারত-চিন পারস্পরিক বোঝাপড়ার উন্নতিতেও আলোচনা করা হবে ওই বৈঠকে"।
১১-১২ অক্টোবর চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখোমুখি হবেন শি জিনপিং
ইমরান খানের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয় যে, "ইতিহাসে বরাবরই কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সমস্যা আছে, এই সমস্যাগুলি রাষ্ট্রসংঘের নীতি মেনে সঠিক এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা উচিত"।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "চিন পরিস্থিতি জটিল করতে পারে এমন যে কোনও একতরফা পদক্ষেপের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষকেই জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে তাঁরা একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল সমাধানে আসে। দুই দেশেরই উচিত এই অঞ্চলটি নিয়ে বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা। সমতা এবং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতেই এটি করতে হবে "।
দেখে নিন এই ভিডিও: