This Article is From May 27, 2019

দলের দুই নেতাকে তাঁর বিকল্প খুঁজতে বললেন কংগ্রেস সভাপতি

গত শনিবার কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু সর্বসম্মতিতে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়।

দলের দুই নেতাকে তাঁর বিকল্প খুঁজতে বললেন কংগ্রেস সভাপতি

রাহুলের ইস্তফার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন মা সোনিয়া এবং বোন প্রিয়াঙ্কাও:রাহুল

হাইলাইটস

  • কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী কি পদত্যাগ করবেন?
  • রাজনৈতিক মহলের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন এটাই
  • আজ দলের দুই নেতাকে তাঁর বিকল্প খুঁজতে বললেন কংগ্রেস সভাপতি
নিউ দিল্লি:

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Congress President Rahul Gandhi)  কি পদত্যাগ করবেন? রাজনৈতিক মহলের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন এটাই। গত শনিবার কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির (Congress Working Committee)  বৈঠকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু সর্বসম্মতিতে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। এরপর দুটো দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও নিজের অবস্থানে কংগ্রেস সভাপতি অনড় রয়েছেন। এদিন কংগ্রেসের দু নেতা আহমেদ প্যাটেল এবং কে কে বেনুগোপালের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। সেখানে তিনি বলেন আমার  বিকল্প খুঁজে বের করুন। তাছাড়া  সোমবার দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর মৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েও একথাই লেখেন রাহুল।

 নেহরুকে শ্রদ্ধা মোদীর: বললেন "তাঁর অবদান ভোলার নয়"

.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের অনেকেই নিজেদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও সকালে সে পথে হেঁটেছেন। আর তাঁর এই টুইট ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি লিখেছেন ভারতের মতো একটি  তরুণ গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যত তাড়াতাড়ি মুক্ত হয় ততই ভাল।  নেহরুজির মৃত্যু দিবসে  আমাদের তাঁর কথা মনে করা উচিত। তিনি যে ভাবে স্বাধীন ভারতের বিভিন্ন সংস্থাকে তৈরি করেছিলেন সেগুলি আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে এই সত্তর বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে  সাহায্য করেছে। 

প্রথম ১০'এ ১৩৭ কৃতী! উচ্চমাধ্যমিকে জোড়া প্রথম জেলার শোভন মন্ডল ও রাজর্ষি বর্মন

নিজের টুইটারের বায়ো অবশ্য এখনও পরিবর্তন করেননি রাহুল। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘ সভাপতি, ভারতের জাতীয় কংগ্রেস'। এর আগে শনিবারই পদ ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি সর্বসম্মতিতে তা খারিজ করে দেয়। এরপর দুদিন ধরে কংগ্রেসের  বিভিন্ন নেতা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন পদ ছেড়ে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। তিনি যে পদে আছেন সেখান থেকেই তাঁর কাজ করে যাওয়া উচিত। কিন্তু তাতেও রাহুলের নিজের চিন্তা ভাবনার তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেই তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে।

রাহুলের ইস্তফার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন মা সোনিয়া এবং বোন প্রিয়াঙ্কাও। প্রাথমিকভাবে দলের অন্য নেতাদের মতো তাঁরাও বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ নিজেদের মত পরিবর্তন করেছেন সোনিয়া এবং প্রিয়াঙ্কা। শেষমেশ রাহুল কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পর দলের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা সাংবাদিকদদের বলেন সভাপতি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা সর্বসম্মতিতে খারিজ হয়েছে। দলের নেতারা চান নিজের পদে থেকেই কাজ করে যান রাহুল।

ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন দেশের প্রাক্তন  অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম তিনি বলেন রাহুল যদি এমন কিছু করেন তাহলে দক্ষিণ ভারতের সাংসদরা চূড়ান্ত কিছু করে ফেলতে পারেন। এ কথা বলার সময় তাঁর গলা ধরে এসেছিল, তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন

শুধু তাই নয় বৈঠকে রাহুল যখন নিজের পদত্যাগ নিয়ে অনড় তখন কেউ কেউ বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কথা বলেছিলেন কিন্তু রাহুল বলেন কংগ্রেসের সভাপতি যে গান্ধী পরিবার থেকেই হতে হবে এমন কোনও মানে নেই।

বৈঠকে আরেকটি বিষয় সরব হন রাহুল। সেটি হল দলের কিছু নেতার আচরণ। তিনি বলেন, নিজেদের ছেলেদের প্রার্থী করতে বা দলীয় সুবিধা পাইয়ে দিতে কিছু নেতা তৎপর ছিলেন। তাদের পরাজয়ের ফলে দলের ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

কারও অবশ্য নাম করেননি রাহুল। তবে এই ভোটে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের   ছেলে বৈভব গেহলত, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশোবন্ত সিংয়ের পুত্র মানবেন্দ্র সিং, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন নেতা প্রয়াত মাধব রাও সিন্ধিয়ার পুত্র জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া,  প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মহোন দেবের মেয়ে সুস্মিতা দেব  নির্বাচনে হেরেছেন।

এর আগে ফলাফল প্রকাশের দিনই হারের দায় নিয়েছিলেন রাহুল। তিনি বলেন  এই হারের জন্য আমি একশো শতাংশ দায়ী। এবার দেশে শোচনীয়' ফল করেছে কংগ্রেস। ২০১৪ সালের পরে ২০১৯ সালেও  বিপুল জয় পেয়েছে বিজেপি। দেশের ১৭ টি রাজ্যে খাতাই তুলতে পারেনি কংগ্রেস। পাশাপাশি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলয়ে ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে কংগ্রেসের। কয়েক মাস আগে মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে জিতে আসে কংগ্রেস। সেখানেও তাদের ফল খারাপ হয়েছে এই নির্বাচনে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসে নেহরু এবং গান্ধী পরিবারের প্রভাব যথেষ্ট বেশি। এমতাবস্থায় রাহুল ইস্তফা দিতে চান কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তবে পরপর দুবার ফলাফল এত খারাপ হওয়ায় কংগ্রেসের অন্দরে গান্ধী-নেহরু পরিবারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল।

.