গত আগস্টে আসন্ন বিধানসভা উপ নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে সায় দেন সনিয়া গান্ধি।
কলকাতা: কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধি (Sonia Gandhi) পশ্চিমবঙ্গে দলের (Bengal Congress) নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন বামফ্রন্টের (Left Front) সঙ্গে যৌথভাবে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে। শুক্রবার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান একথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি সনিয়া গান্ধির সঙ্গে তাঁর বাড়িতে দু'বার সাক্ষাৎ করেন। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দু'জনের আলোচনা হয়। কংগ্রেস সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সনিয়া গান্ধির বাম-কংগ্রেস জোটের উপরে ভরসা করার পরিকল্পনা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে বাংলা ক্রমেই বিজেপির শক্ত ঘাঁটি উঠছে এবং কংগ্রেস তার পায়ের তলার জমি হারাচ্ছে।
আব্দুল মান্নান জানান, ‘‘সনিয়া গান্ধিজির সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি আমাদের বামফ্রন্টের সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে জোট গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে প্রস্তাবিত বাম-কংগ্রেস জোট সম্পর্কে জনমত তৈরি হয়। তিনি বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট গড়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার কথা বলেছেন।''
নেহরু পরিবারের বিরুদ্ধে "আপত্তিজনক" মন্তব্য অভিনেত্রীর, মামলা দায়ের
তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে তিনি আমায় বলেন ২০১৬ বিধানসভার পরেও বাম ও কংগ্রেস জোট থাকলে বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্যরকম হত। বিজেপি কোনওভাবেই রাজ্যে জমি পেত না।''
লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পর আগস্ট মাসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে বৈঠকে সনিয়া গান্ধি রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা উপ নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে সায় দেন।
শি'এর সঙ্গে বৈঠকের আগে মাল্লাপুরমের মনোরম সৈকত সাফাইয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি
আসন্ন উপ নির্বাচনের তিনটি আসন নিয়ে রাজ্য কংগ্রেস ও সিপিআই(এম)-এর মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে। আবার নদিয়ার করিমপুরে সিপিআই(এম)-এর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট নির্বাচনে লড়বে।
কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুর পর এবং খড়গপুরের বিধায়ক বিজেপির দিলীপ ঘোষ সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কারণে ওই দু'টি আসনও ফাঁকা হয়। এদিকে করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর লোকসভায় বিজয়ী হওয়ার কারণে ওই আসনটিতেও উপ নির্বাচন হবে।
২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোট গড়া হলেও তৃণমূলের সাফল্যে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগেও তাদের মধ্যে জোট গড়া নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু আসন সমঝোতা নিয়ে মতানৈক্যের কারণে জোট গড়া সম্ভব হয়নি। লোকসভায় দুই দলই চূড়ান্ত ব্যর্থ। কংগ্রেস মাত্র দু'টি আসনে জয়লাভ করে। ৩৮ জন প্রার্থীর জমানত বাজেয়াপ্ত হয়। অন্যদিকে বামফ্রন্ট কোনও আসনেই জয়লাভ করতে পারেনি। তাদের ৩৯ জন প্রার্থীর জমানত বাজেয়াপ্ত হয়।
বিজেপি দারুণ ফল করে ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয়লাভ করে। তৃণমূলের থেকে মাত্র চারটি আসন কম পেয়েছে তারা। লোকসভার ফলাফল থেকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা গেরুয়া শিবির আপাতত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে এগোতে চাইছে।
দেখুন ভিডিও