সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
হাইলাইটস
- সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল পেশ করেন অমিত শাহ
- বিল পাস হলে অমিত শাহ সহ অন্য নেতাদের উপরে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
- মার্কিন সরকারের কাছে এই প্রস্তাব পেশ করেছে ইউএসসিআইআরএফ
ওয়াশিংটন: আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় মার্কিন (US) কমিশন ইউএসসিআইআরএফ (USCIRF) জানিয়েছে, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল (CAB) ‘‘ বিপজ্জনক ভাবে বাঁক নিচ্ছে ভুল দিকে''। যদি সংসদের উভয় কক্ষেই এই বিল পাস হয়ে যায় তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দাবি করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর এদেশে এসেছেন তাঁদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরা হবে না। তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
কমিশন জানিয়েছে, যদি বিলটি সংসদের উভয় কক্ষেই পাস হয়ে যায়, তাহলে মার্কিন সরকারের উচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ অন্যান্য প্রধান নেতাদের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা।
সারা দিন ধরে বহু বিতর্কের পর, মাঝরাতে লোকসভায় পাস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল
ইউএসসিআইআরএফ জানিয়েছে, এই বিল যা লোকসভায় পেশ করেন অমিত শাহ, তাতে ধর্মকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৩১১-৮০ ভোটে বিলটি পাস হয়ে যায়। এবার বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করা হবে।
নাগরিক বিলের বিরোধিতায় ১১ ঘণ্টা স্তব্ধ দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল
এই বিল মুসলিম-বিরোধী, একথাও মানতে চাননি অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানেক মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, কারণ তাঁরা সেখানে সংখ্যালঘু নয়। বিষয়টা এতটাই সরল।'' তিনি আরও বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনও ধর্মের মানুষেরই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।'' তিনি জানান, বিলের লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের সাহায্য করা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘লক্ষ কোটি এমন মানুষেরা ঘর, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে ভুগছে।''
এই বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।
ইউএসসিআরএফ জানিয়েছে, এই বিল একটা বিপজ্জনক দিকে বাঁক নিচ্ছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাবের ইতিহাসের বিরোধিতা করছে এই বিল। পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানরেও বিরোধিতা করছে, যেখানে সকলের সাম্যের কথা বলা হয়েছে।
অসমের পাশাপাসি দেশব্যাপী এনআরসি চালু করার যে মনোভাব অমিত শাহ দেখিয়েছেন, সেপ্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য, ‘‘ইউএসসিআরএফ ভয় পাচ্ছে ভারত সরকার ভারতীয় নাগরিকদের ধর্মের পরীক্ষা নিতে চাইছে। এর ফলে সেখানকার কোটি কোটি মুসলিমরা সমস্যায় পড়তে পারেন।''
ভারত সেই ইউপিএ আমল থেকেই বলে আসছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও অন্য দেশের বক্তব্যকে তারা গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউএসসিআরএফ-এর সদস্যদের এদেশে আসার ভিসা দেয় না ভারত।