This Article is From May 06, 2020

তিন বছরের মৃত পুত্রকে শেষবার আলিঙ্গন করা হল না ‘কোভিড-১৯ যোদ্ধা’ বাবার!

ছেলে নেই। ফোনের ছবি ও ভিডিও দেখেই আপাতত স্মৃতির ভিতরে ডুব দিচ্ছেন লোকবন্ধু হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় মণীশ।

তিন বছরের মৃত পুত্রকে শেষবার আলিঙ্গন করা হল না ‘কোভিড-১৯ যোদ্ধা’ বাবার!

তিন বছরের মৃত সন্তানকেও শেষবার আলিঙ্গন করা হল ‘করোনা-যোদ্ধা’ বাবার। (প্রতীকী)

লখনউ:

কোভিড-১৯ (COVID-19) মহামারীর সময়ে এক বাবার অসহায়তার যে ছবি সামনে এল তা যে কারও মনই আর্দ্র করে দেবে। মৃত পুত্রকে শেষবারের জন্য জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলেন তার বাবা। কিন্তু পারেননি। ২৭ বছরের মণীশ কুমার লখনউয়ের (Lucknow) লোকবন্ধু হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। ওই হাসপাতালকে লেভেল-২ হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। শনিবার রাতে যখন মণীশ ডিউটিতে, তখনই তাঁর কাছে ফোন আসে তাঁর তিন বছরের ছেলে হর্ষিতের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। পেটেও প্রচণ্ড ব্যথা। মণীশ জানাচ্ছেন, ‘‘বাড়ি থেকে ফোন পেয়ে আমি অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। তৎক্ষণাৎ হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়েও আসতে পারিনি। পরিবারের সদস্যরা আমার ছেলেকে কিং জর্জ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কেজিএমইউ) নিয়ে যান। আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে হর্ষিতের ছবি পাঠানো হচ্ছিল। রাত দু'টোর সময় সে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়।''

কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন মণীশ। বলেন, ‘‘আমি আমার ছেলের কাছে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেকথা আমি আমার সহকর্মীদের বলতে পারিনি। কারণ আমি আমার রোগীদের ওদের কাছে রেখে যেতে চাইনি। কিন্তু বাড়ি থেকে বারবার ফোন আসতে দেখে এবং আমার অবস্থা দেখে আমার সহকর্মীরা আমাকে বাড়ি যেতে বলে।''

মনীশ সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে কোনওভাবে কেজিএমইউতে পৌঁছেছিলেন, যেখানে তার ছোট্ট ছেলের মৃতদেহ রাখা ছিল। তিন‌ি হাসপাতালের ভিতরে না গিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কখন হর্ষিতকে বাইরে আনা হবে।

মণীশ জানাচ্ছেন, ‘‘যখন আমার পরিবার হর্ষিতকে বাইরে নিয়ে এল আমি তাকে দূর থেকে দেখি। আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। শববাহী গাড়ির পিছন পিছন মোটর সাইকেলে আমিও বাড়ি পৌঁছই। আমি কেবল আমার ছেলেকে শেষবার আলিঙ্গন করতে চেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না ও এই পৃথিবীতে নেই।''

পাহাড়প্রমাণ শোক নিয়েও মণীশ নিজের বাড়ির ভিতরে ঢোকেননি। কারণ তাঁর আশঙ্কা হচ্ছিল, করোনা হাসপাতাল থেকে ফেরার ফলে তাঁর থেকে তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের মধ্যে করনো সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে।

তাই বাইরের বাইরেই বসে থাকেন তিনি। শেষবার ছেলেকে জড়িয়ে ধরাও হয়নি তাঁর। পরের দিন তাঁর ছেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু শবযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সংক্রমণ না ছড়াতে দিতে চেয়ে তিনি ছেলেকে স্পর্শ করেননি।

ছেলে নেই। ফোনের ছবি ও ভিডিও দেখেই আপাতত স্মৃতির ভিতরে ডুব দিচ্ছেন মণীশ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্ত্রীকেও সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বাড়িতে আর ঢোকেননি। বাইরের বারান্দাতেই আশ্রয় নিয়েছেন সন্তানহারা বাবা।

মণীশ জানাচ্ছেন, ‘‘এক-দু'দিনের মধ্যেই আমি আবার ডিউটিতে জয়েন করব। আমার রোগীদের সেবা করলেই আমি কিছুটা সান্তনা পাব।'' 



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.