নীতীশ রাজত্বে এখনও পর্যন্ত ৬০ জন ওই মারণ ভাইরাসে (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছে (ফাইল)
সিওয়ান, বিহার: করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের লাগাতার সংখ্যাবৃদ্ধিতে জেরবার সরকার। এবার COVID-19 এর উদ্বেগকে আরও বাড়াল বিহার। নীতীশ রাজত্বে এখনও পর্যন্ত ৬০ জন ওই মারণ ভাইরাসে (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছে। অন্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের তুলনায় সংক্রমিতের সংখ্যা সেখানে (Bihar) কিছুটা কম হলেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে অন্য কারণে। দেখা যাচ্ছে আক্রান্ত ৬০ জনের মধ্যে ২৩ জনই একটিই পরিবারের সদস্য। বিহারের সিওয়ান (Siwan) জেলার একটি গ্রামে ওইভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে ভুগছেন মানুষ। জানা গেছে, গোটা বিহারের করোনা আক্রান্তের প্রায় এক তৃতীয়াংশ রোগীই ওই এলাকার। গত মাসে ওমান থেকে ওই গ্রামের এক বাসিন্দা ফিরে আসেন, তারপরেই তাঁর শরীরে করোনার লক্ষণ ধরা পড়ে। তারপর ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রায় প্রত্যেকের দেহেই করোনা মারণ রোগ বাসা বাঁধে।
লাগাতার করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা, দিন-রাত এক করে খাটছেন আইসিএমআরের কর্মীরা
ওই ব্যক্তি, ১৬ মার্চ ওমান থেকে বিহারে নিজের গ্রামে ফেরেন। এরপর ৪ এপ্রিল তাঁর শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ইতিমধ্যেই তিনি সিওয়ানের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরেছিলেন। আধিকারিকদের মতে, এই সময়ে তাঁর সংস্পর্শে এসে আরও ৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হন।
গ্রামের অন্যদের তো বটেই, ওমান ফেরত ওই বিহারীর কাছ থেকে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। মহিলা এবং শিশু সহ তাঁর পরিবারের আরও ২২ জনের শরীরে পরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রমাণ মেলে। অথচ ওই ব্যক্তির বা তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের কারোর শরীরেই কিন্তু প্রথমে সেভাবে করোনার কোনও লক্ষণই দেখা যায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গ্রামের অন্যদের সঙ্গেও মেলামেশা করেছিলেন তাঁরা। বিহারের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের আরও ২ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। অর্থাৎ এক ব্যক্তির থেকে একটিমাত্র গ্রামেই এখন করোনায় আক্রান্ত মোট ২৫ জন।
ফের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী, লকডাউনের মেয়াদবৃদ্ধির বার্তা?
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, একই পরিবারের আক্রান্ত মোট ২৩ জনের মধ্যে ৪ জন ইতিমধ্যেই অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তবে তাঁরা আপাতত কোয়ারান্টাইন অবস্থাতেই থাকবেন।
এই ঘটনার পরেই একেবারে নড়েচড়ে বসেছে নীতীশ সরকার, সিওয়ান জেলার তিরিশটি গ্রামকে সংক্রমণ প্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত করে একেবারে সিল করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে যাতে সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে তার জন্যে যাবতীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
বিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য সচিব সঞ্জয় কুমার NDTV-কে বলেছেন, "আমরা খুব স্বস্তিতে এটা ভেবে যে আমরা শেষপর্যন্ত রোগীদের ধরতে পেরেছি। ১৫ মার্চের পরে অন্য দেশ থেকে এ রাজ্যে ফিরে আসা সকলের সর্বজনীন পরীক্ষা হয়েছিল, কিন্তু সেই সময় ওই ব্যক্তির শরীরে কিন্তু কোনও সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি। যাই হোক, আপাতত ওই সংক্রমিত গ্রামের গোটা অংশকেই সিল করে রাখা হয়েছে" ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে বিহারে করোনা আক্রান্ত মোট ৬০ জন। যার মধ্যে ১ জনের মৃত্যুও হয়েছে। এখন নীতীশ সরকারে বিহারের তিনটি জেলা বেগুসরাই, নওয়াদা ও সিওয়ানের সীমানা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ।
লকডাউনের মধ্যেই একের পর এক মানুষ শিকার হচ্ছেন করোনা ভাইরাসের। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৯৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ জনের প্রাণ কেড়েছে ওই মারাত্মক ভাইরাসটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে এখন মোট সংক্রমিত ৬,৪১২ জন। গত ডিসেম্বর মাসে চিনের উহান প্রদেশ থেকে এই মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ে গোটা দুনিয়ায়।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)