বেঙ্গল অডিট প্যানেল জানাল মৃত ৫৭ করোনা আক্রান্তের ৩৯ জনই কো-মর্বিডিটির শিকার।
কলকাতা: এই প্রথম রাজ্যের তরফে সরকারি ভাবে করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জনের মৃত্যুর কথা মেনে নেওয়া হল। রাজ্য সরকার (West Bengal Government) শুক্রবার জানিয়েছে এযাবৎ ৫৭ জনের মৃত্যু হলেও এঁদের মধ্যে ৩৯ জন কো-মর্বিডিটির শিকার। অর্থাৎ অন্য অসুখেও ভুগছিলেন তাঁরা। মাত্র ১৮ জন মারা গিয়েছে কোভিড-১৯-এর (COVID-19) কারণে। বাংলার অডিট কমিটি শুক্রবার এমনই জানিয়েছে। বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় দলের তরফে রাজ্যের অডিট কমিটির কাছে রাজ্যের করোনা আক্রান্তের ঘোষিত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দলের তরফে আরও জানতে চাওয়া হয় আইসিএমআর-এর নির্দেশ মেনে কোভিড-১৯-আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে মৃত্যুর শংসাপত্র লেখার জন্য চিকিৎসকদের কোনও কমিটি তৈরি করা হয়েছিল কিনা। রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহাকে এক চিঠিতে শুক্রবার কেন্দ্রীয় দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রের তরফে জানতে চাওয়া হয় সেই সব করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর ব্যাপারে, যাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে অন্য অসুখের যোগ রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির পাল্টা ‘জবাব' রাজ্যপালের, দিলেন ১৪ পাতার চিঠি
এই ধরনের মৃত্যুকে চিহ্নিত করতে এমন কোনও কমিটি গঠন করা হয়েছিল কিনা তাও জানতে চান তিনি। কেন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এত দেরি হচ্ছে, প্রশ্ন তোলেন অপূর্ব।
তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়ে্ছিল কোনও করোনা রোগী পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলে বলা যাবে না তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
অপূর্ব জানান, এমন কথায় কোনও যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেননা পথ দুর্ঘটনায় কোনও মৃত্যু ও হাসপাতালে কোনও রোগে ভুগে মৃত্যুর মধ্যে তফাত নেই।
তিনি আরও জানান, দল এই বিষয়ে কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের পদ্ধতিটা বোঝার চেষ্টা করবে।
অডিট কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও বিরোধী দলগুলিও। পাশাপাশি কিছু চিকিৎসকও এর পিছনে যুক্তি খুঁজতে গিয়ে বিস্মিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এই বিতর্কের সূচনা হয় গত ২ এপ্রিল। সেদিন বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ জন ধরে রাজ্যে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭। কিন্তু এক ঘণ্টা বাদে মুখ্য সচিব এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন বিশেষজ্ঞ কমিটির হিসেবে ভুল রয়েছে। আসল সংখ্যাটা এখনও ৩। এরপরই মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করতে এক অডিট কমিটি গঠন করা হয়। এরপর থেকে অডিট কমিটি বা বিশেষজ্ঞ কমিটি, কেউই কোনও সাংবাদিক সম্মেলন করেনি।
এদিকে এদিনই রাজ্যপাল এক চিঠিতে অভিযোগ করেন, করোনা মোকাবিলায় শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।