West Bengal: মৃতের দুই ছেলে বহুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন যাতে স্বাস্থ্য দফতরের কেউ এসে দেহটি নিয়ে যায়, কিন্তু দেখা মেলেনি কারোরই
হাইলাইটস
- করোনায় মৃত্যু হল কোলাঘাটের এক বাসিন্দার
- তাঁর দেহ নিতে এলো না স্বাস্থ্য দফতর
- বাধ্য হয়ে বাড়ির উঠোনেই কবর দিতে হলো তাঁকে
কলকাতা: করোনা (Coronavirus) মহামারীর মধ্যে একের পর এক অমানবিক চিত্র উঠে আসছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক পরিবার করোনায় (COVID-19) মৃত বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকে বাধ্য হলো বাড়ির উঠোনে কবর দিতে। কী কী অমানবিকতার শিকার তাঁদের হতে হয়েছে তা জানলে আপনিও শিউরে উঠবেন। গত সপ্তাহের একেবারে শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন সনাতন প্রধান নামে কোলাঘাটের ওই বাসিন্দা। পরের দিনই তাঁকে করোনা পরীক্ষা করার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে করোনা টেস্ট সেন্টার থেকে বলা হয়, সনাতন কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে বাড়িতে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে এবং স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাম্বুল্যান্স যখন তাঁর বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছয় তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক জানান, তাঁরা মৃত ব্যক্তির দেহ বহনে অপারগ, এক্ষেত্রে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
বনগাঁর এক করোনা রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠালেন না কেউ, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু
অ্যাম্বুল্যান্স চলে যাওয়ার পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের জন্যে হাপিত্যেশ করে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন মৃত সনাতন প্রধানের বাড়ির লোকজন। অনেকক্ষণ পর সরকারি দফতরের কয়েকজন সেখানে এসে দুটি পিপিই কিট মৃতের দুই ছেলের উদ্দেশে ছুঁড়ে দিয়ে বলেন কিট পরে তাঁর বাবার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করতে।
দেশে একদিনে সংক্রমণ ছাড়ালো ৪৮ হাজার, মোট সংক্রমিত ১৩ লক্ষ ৮৫ হাজার, দেখুন ১০ তথ্যে
ফলে বাবার দেহ নিয়ে গ্রামেরই কাছে থাকা শ্মশানে শেষকৃত্য করতে পৌঁছন ছেলেরা। কিন্তু সেখানও বিপত্তি ঘটে। শ্মশানের কাছে বসবাসকারী বাসিন্দারা এসে দেহ পোড়াতে বাধা দিয়ে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করার কথা বলেন।
বাবার শেষকৃত্য করতে গিয়ে এমন বাধা পেয়ে রীতিমতো হতাশায় ভেঙে পড়েন দুই ছেলে। কোনও উপায় না দেখে শেষপর্যন্ত নিজেদের বাড়ির উঠোনেই মাটি খুঁড়ে বাবার দেহ পুঁতে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। যদিও তা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
মৃতদেহ নিয়ে ভোগান্তির পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাও অবাক করছে সকলকে। করোনায় মৃত্যু হয়েছে সনাতন প্রধানের। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের শরীরেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। অথচ বৃহস্পতিবার থেকে কোনও স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃতের পরিবারের বাকি সদস্যদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে সেখানে আসেননি। যদিও খবরটি জানাজানি হওয়ার পর ওি গ্রামের এক পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন যে, আজ অর্থাৎ সোমবার পরিবারের বাকি সদস্যদের করোনা টেস্ট করা হবে। এদিকে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি, এমনকী ফোনও ধরেননি তাঁরা।