ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলেছে। এর ফলে দেশের অতি সংক্রামক অঞ্চলগুলোতে আগামী ৩ মে-র পরেও আরও কিছুদিন চলতে পারে লকডাউন। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে এই লকডাউন হটস্পট এলাকাগুলোতে জারি রাখাই এখন "স্বাভাবিক", জানিয়েছে সরকারি সূত্র।
করোনা ভাইরাসের হটস্পট বা "রেড জোন" হিসাবে মনোনীত জেলাগুলোর সংখ্যা ১৭০ থেকে কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১২৯, তবে সংক্রমণমুক্ত জেলা বা "গ্রিন জোন" হিসাবে চিহ্নিত এলাকাগুলোর সংখ্যাও কমেছে, আগে যা ছিল ৩২৫, এখন তার থেকে কমে হয়েছে ৩০৭, ফলে বোঝাই যাচ্ছে এই রোগের সংক্রমণ ক্রমেই ছড়াচ্ছে।
তবে একই সময়ে, নন-হটস্পট জেলাগুলির সংখ্যা, যাকে "অরেঞ্জ জোন" হিসাবে চিহ্নিত করেছে সরকার, তার সংখ্যা বেড়ে ২০৭ থেকে ২৯৭ এ পৌঁছেছে।
সরকারি সূত্রে খবর, দেশে লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই।
যে পরিযায়ী শ্রমিক, শিক্ষার্থী, তীর্থযাত্রী বা পর্যটকরা নিজের রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে লকডাউনের কারণে আটকা পড়ছেন, তাঁদের শরীরে যদি করোনা ভাইরাসের লক্ষণ না থাকে তবে তাঁরা নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে পারেন, জানিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে যে এই পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে পারেন তার জন্যে সমস্ত ব্যবস্থার তদারকি করবে সরকার। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খবর মিলছে যে ভিন রাজ্যে আটকে পড়ে খিদে-তেষ্টায় বহু শ্রমিকেরই অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।
সূত্রের খবর, বিজেপির অভ্যন্তরেই এই শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছিল। এরপরেই অনুমতি দেয় কেন্দ্র। আশঙ্কা যে পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুরবস্থা দলকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। দেশের সাংসদ এবং বিধায়কদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের সময় এমন কথাই বলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
এদিকে, মার্কিন বিজ্ঞানীরা বুধবার করোনা ভাইরাস বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য এক অগ্রগতির সন্ধান পেয়েছেন। একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে করোনা রোগীরা অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ দিলে তাতে ভাল সাড়া দিচ্ছেন। যদি ওই ওযুধটি কার্যকরী হয় তবে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা কমবে। এই নিয়ে শুধু আমেরিকাই নয়, সারা বিশ্বই আশায় বুক বাঁধছে।
২,২৬,০০০ জনেরও বেশি মানুষের জীবন কেড়েছে এই মারণ ভাইরাস। এই ভয়ঙ্কর রোগের বিরুদ্ধে যদি ওই চিকিৎসা সফল হয় তবে উন্নতি হবে পরিস্থিতির। রেমডেসিভির একটি ক্লিনিকাল পরীক্ষায় দেখা গেছে যে করোনা রোগীরা প্লেসবোতে থাকা রোগীদের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ দ্রুত সেরে উঠছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদিও গত সপ্তাহেই জানিয়েছে যে এর আগে ইবোলা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটি গবেষণায় রেমডেসিভি ব্যর্থ হয়েছিল। গত বছরের প্রথমে এই রোগটি ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। তবে দেখা যাচ্ছে চিনের উহান শহরে থাকা করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে এখন কার্যকরী ফল দিচ্ছে ওই ওষুধ।