This Article is From Apr 13, 2020

খিদেতে কেউ খাচ্ছেন শুধু জল! কেউ বা জল দিয়ে নুন-ভাত মেখেই মুখে তুলছেন

এভাবেই খিদে-তৃষ্ণার সঙ্গে আপস করে মডেল টাউনে দিন গুজরান করছেন ওই শ্রমিক পরিবারগুলো।

খিদেতে কেউ খাচ্ছেন শুধু জল! কেউ বা জল দিয়ে নুন-ভাত মেখেই মুখে তুলছেন

রেশন কার্ড না থাকায় অনেকে পাচ্ছেন না রেশন সামগ্রি।

নয়া দিল্লি:

সদ্য প্রসূতি বছর ২২-এর তরুণী মেহেক দু'দিন অন্তর খাবার পাচ্ছেন দিল্লিতে। যেদিন খুব খিদে পায়, সেদিন জল খেয়েই খিদে মেটান ওই তরুণী ও তাঁর স্বামী গোপাল। এনডিটিভির সামনে সোমবার এমন দুর্দশার কথা তুলে ধরলেন ওই দম্পতি। রাজ্যের মডেল টাউনে কোয়ারান্টাইন উত্তরাখণ্ড থেকে আসা শতাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের পরবার । যাদের মধ্যে আছেন মেহেক-গোপাল। মাত্র ৮-দিন আগে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মেহেক। কিন্তু সরকারি তরফে নবজাতকের চিকিৎসার প্রয়োজনে কোনও ব্যবস্থা নেই। এমন অভিযোগ তোলেন মেহেক। এভাবেই খিদে-তৃষ্ণার সঙ্গে আপস করে লকডাউনের (Amid Lockdwon) মধ্যে মডেল টাউনে দিন গুজরান করছেন ওই শ্রমিক পরিবারগুলো। "আমরা দিল্লি এসে খুব ভুল করেছি।" এমন অনুতাপ শোনা গিয়েছে মেহেকের কণ্ঠে। 

কেঁপে উঠল রাজধানী! পরপর দু'দিন ভূমিকম্প দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে

গোপালের দাবি, "খাবার নেই, টাকা নেই। কিছু মানুষ মাঝে-মধ্যে আসছেন আর খাবার বিতরণ করে যাচ্ছেন। আমরা সেখান থেকেই কোনওভাবে জোগার করে খাচ্ছি।"  

5b9caa9kএভাবেই সদ্যোজাতকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন গোপাল ও মেহেক। 

জানা গিয়েছে, যাদের রেশন কার্ড আছে, দিল্লি সরকার একমাত্র তাঁদের রেশন দিচ্ছে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক, যারা দিল্লিতে কর্মসূত্রে থাকেন, তাঁদের অনেকের সেই কার্ড নেই। তাই বিকল্প হিসেবে একটা ওয়েবসাইট চালু করেছিল অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। রেশন কার্ড নেই এমন কতজন পরিযায়ী শ্রমিক আছে, তাঁর খতিয়ান রাখতে। কিন্তু ৩ দিন ধরে অচল সেই ওয়েবসাইট। সোমবার জানান এক পরিযায়ী শ্রমিক।  

লকডাউনের মেয়াদবৃদ্ধি নিয়ে আগামীকাল সকাল ১০ টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন মোদি

হরিয়ানার কারনাল থেকে দিল্লি ফেরা এক শ্রমিক পরিবার বলেছে, "আমাদের কাছে চালের মজুত অপর্যাপ্ত। কিছু শুকনো রুটি আছে। খিদে পেলে জলে ভিজিয়ে সেই রুটি বাচ্চাদের খেতে দিই।" শঙ্কর কুমার নামে এক শ্রমিকের অভিযোগ, "আমার কাছে এক টাকাও নেই। সামনের সরকারি স্কুলে যখন খাবার বিতরণ হয়, সেখানে যাই। মাঝে মাঝে পুলিশের তাড়া খেয়ে খাবার না নিয়েই ফিরে আসি।" একই অবস্থা বিহারের বাসিন্দা শ্রমিক রাম সাগরের।

তিনি প্রতিদিন ৫-কিমি হেঁটে দিল্লির মঞ্জু কা টিলা ত্রাণ শিবিরে যান। সেখান থেকে এক প্লাস্টিক খিচুড়ি নিয়ে আসেন। সেই খিচুড়ি ৬ সন্তান-সহ পরিবারের ৮ জন মিলে খান। এমনটাই এনডিটিভি-কে জানান রাম সাগর। ৮ ফুট বাই ৮ ফুট ঘরে ৫ জনকে নিয়ে থাকছেন বছর ৩২-এর মঞ্জু দেবী। তিনি বলেন, "খিদে পেলে ভাত-নুন, জল দিয়ে মেখে খেয়ে নিই। আমাদের কাছে কিছুই নেই। যখন খাবার বিতরণ করা হয়, তখন লাইনে গিয়ে দাঁড়াই। কিন্তু আমাদের আগেই শেষ হয়ে যায় খাবার।" এমনকি বাচ্চাদের মুখে দুধ তুলে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন মঞ্জু দেবী।

p4e6n8l8ভিক্ষা করে যা রোজগার করেন সেটাই রান্না করে খান এই পরিযায়ী শ্রমিক।  

ইতিমধ্যে আরও দু'সপ্তাহ বাড়ানো হতে পারে লকডাউন। এমন ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী সংক্রমিত ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত প্রায় ৩০০। 

.