চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্য নিযুক্ত বিশেষ কমিটি একমাত্র সংক্রমণে মৃত্যু কিনা সেটা ঘোষণা করতে পারছে। (ফাইল)
নয়া দিল্লি: করোনায় নমুনা পরীক্ষা আর তথ্যের আদান-প্রদানে অসঙ্গতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ চিকিৎসকদের (Health Professionals of Bengal)। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি (Letter to CM) পাঠালেন অ-আবাসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা দল। সেই চিঠিতে তাঁদের দাবি, "অত্যন্ত কম হারে রাজ্যে নমুনা (Covod-19) পরীক্ষা হয়েছে। ভারতের বিচারে এই হার উদ্বেগজনক, কিন্তু রাজ্যে নিরিখে তা আশঙ্কাজনক।" পাশাপাশি সংক্রমণ পরিসংখ্যান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। নিজেদের ফিজিশিয়ান, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ও চিকিৎসা-কর্মী দাবি করে স্বাক্ষর সম্বলিত ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। সেই চিঠিতে মূল যে দুটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, তার মধ্যে ১)-- নিম্ন হারে নমুনা পরীক্ষা। আর ২)-- সংক্রমণে মৃতের সংখ্যার হেরফের। সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার একটা প্রতিবেদন উল্লেখ করে সেই চিকিৎসক সংগঠনের দাবি, "রাজ্যে প্রতি লক্ষে মাত্র ৩৩.৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যেখানে গোটা দেশে সংখ্যাটা ১৫৭ প্রতি লক্ষ। যদিও রাজ্যের পরিকাঠামো বিচারে দিনপিছু ১০০০ জনের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।"
সোশ্যালে শাহরুখ খানের ভুয়ো ছবি পোস্ট! নেটিজেন ফের রুষ্ট রাখির ওপর
সেই চিঠিতে যাদের স্বাক্ষর আছে, তাঁদের অনেকেই এখন ভিনরাজ্যের চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু পরিবার-পরিজন, জন্ম থেকে বড় হওয়া, স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়, সবের শিকড় এই রাজ্যে। এমনটা সেই চিঠিতে উল্লেখ করেন উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা। সেই চিঠিতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেছেন, "সংক্রমণ প্রতিরোধে লঘু কৌশল রপ্ত করেছে রাজ্য প্রশাসন। এতে আখেরে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে রাজ্যের। এর পিছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। ১) মহামারী বিপর্যয় সামলানোর মতো পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই রাজ্যের। ২) উপসর্গ নেই এমন সংক্রমিত থেকে সংক্রমণের মাত্রা কমানোর ব্যার্থতা। এর ফলে অজান্তেই যাদের উপসর্গ নেই তাঁরা অন্যদের সংক্রমিত করে চলেছে।" সংক্রমণে মৃত্যু নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেও সেই চিঠিতে উল্লেখ আছে।
Exclusive: ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া উচিত লকডাউন, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্য নিযুক্ত বিশেষ কমিটি একমাত্র সংক্রমণে মৃত্যু কিনা সেটা ঘোষণা করতে পারছে। এর বাইরে সংক্রমিত কেউ শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হলে, তাঁকে করোনায় মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হচ্ছে না। সেখানে কোভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যু, এই প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে আদতে তথ্য বিকৃত করা হচ্ছে। যেখানে হু আর আইসিএমআর-এর গাইডলাইনে স্পষ্ট উল্লেখ, এই ধরনের মৃত্যুতে প্রাথমিক কারণ হিসেবে কোভিড -১৯ প্রসঙ্গ উল্লেখ করতেই হবে।
তাই সেই চিঠিতে তাঁদের আবেদন, "অনুগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর নমুনা পরীক্ষার বহর বাড়াক। আর সংক্রমণ সংক্রান্ত সঠিক তথ্য দিয়ে মানুষের উদ্বেগ দূর করুক। আশা করব আমাদের রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা বিজ্ঞান আর মানিবকতার ভিত্তিতে এই মহামারীর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া যুদ্ধে জয়ী হবেন।" এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১৫ জনের সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এই পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে।