সারা দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত ২০০-র বেশি মানুষ। (ফাইল)
নয়াদিল্লি:
দেশে করোনা (Coronavirus) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮,৩৫৬। মৃত ২৭৩। রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একথা জানিয়েছে। সেই মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯০৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৪ জন মারা গিয়েছেন। শনিবার ১৩টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরই তিনি ইঙ্গিত দেন দেশব্যাপী চলতে থাকা লকডাউন আরও দু'সপ্তাহ বাড়তে পারে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে গত ২৫ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী সম্পূর্ণ লকডাউন। সেই ২১ দিনের লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ১৪ এপ্রিল। যদি লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানো হয় তাহলে দেশের অর্থনীতি আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সংক্রমণ কমাতে ও জীবন বাঁচানোর জন্য লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
অতিমারির মোকাবিলায় সরকারের কৌশল বদলের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ‘কাউন্সিল অফ মিনিস্টার্স' সোমবার থেকে কাজ শুরু করবে। ওই কাউন্সিলে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের মতো মন্ত্রীরা। সূত্রানুসারে একথা জানা গিয়েছে।
ওড়িশা, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ এই পাঁচ রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে তারা এই মাসের শেষ পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়াবে। এদিকে বিহার সরাক কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানিয়েছে তাদেরও লকডাউন বাড়াতে কোনও আপত্তি নেই। তবে তারা বন্যাত্রাণ ও গ্রামীণ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে চায়। NDTV-কে সূত্রানুসারে একথা জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, যদি লকডাউন না হত তাহলে দেশের ৮.২ লক্ষ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল একথা জানিয়েছেন।
দিল্লি আরও তিনটি হটস্পট এলাকা চিহ্নিত করেছে। শনিবার রাতে সেগুলির কথা জানানো হয়েছে। সেখানে হটস্পটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৩। এই হটস্পট অঞ্চলগুলিতে কড়া নজরদারি চালানো হবে। মহারাষ্ট্রের পরেই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে দিল্লিতে। সেখানে আক্রান্ত ১,০৬৯ জন। মৃত ১২৭।
শনিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘‘বহু উন্নত দেশের তুলনায় ভারতের পরিস্থিতি ভাল, কেননা আমরা লকডাউন তাড়াতাড়ি শুরু করেছিলাম। এখন এটা তুলে নেওয়া হলে সমস্ত লাভই ক্ষতির মুখে পড়বে। এটা বাড়ানোটাই তাই গুরুত্বপূর্ণ।''
মুম্বইয়ে তাজমহল পালেস ও তাজমহল টাওয়ার্স হোটেলের অন্তত তিনজনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মেলার পরে সেই স্থানকে হটস্পট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি অঞ্চলে নতুন করে ছ'জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই বস্তি অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৮।
টানা তিন বছর দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের তকমা পাওয়া মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। রাজ্যের ৩৬ জনের মধ্যে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ইন্দোরে।
এদিকে আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত মৃত্রে সংখ্যা ২০,০০০ ছাড়িয়েছে। যা বিশ্বের সব দেশের মধ্যে বৃহত্তম। ইতালিতে ১৯,৭৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে।
করোনা ভাইরাসেরর প্রকোপে আমেরিকায় ৪০-এর বেশি মার্কিন-ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১,৫০০-রও বেশি মানুষ।
Post a comment