অনলাইন ক্লাস না করতে পারলে পিছিয়ে যাবে পড়াশোনায় এই আশঙ্কাতেই আত্মহত্যা করলেরন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী।
মালাপুরম, কেরল: শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখতে ভরসা এখন অনলাইন ক্লাস। আর এই দেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থা তো দূরের, ঠিকমতো টিভি, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনই নেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে। অনলাইন ক্লাস না করতে পারলে পিছিয়ে যাবে পড়াশোনায় এই আশঙ্কাতেই আত্মহত্যা করলেরন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। কেরলের মালাপ্পুরম জেলার বাসিন্দা ওই ছাত্রী তফশিলি শ্রেণিভুক্ত। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ যে অনলাইনে ক্লাস করতে পারার সুবিধা না থাকায় ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ওই ছাত্রী। “বাড়িতে একটা টিভি আছে তবে ওটা কাজ করছে না। ও আমাকে বলেছিল যে টিভিটা মেরামত করা দরকার তবে আমি করাতে পারিনি,” বলেন মেয়ের দিনমজুর বাবা, করোনাভাইরাস লকডাউনে সামান্য উপার্জনই যার সম্বল।
“আমি জানিনা ও কেন এমন করেছে। আমি বলেছিলাম অন্য উপায় ঠিক হবে, বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে পড়া যাবে,” বলেন কিশোরীর দিনমজুর বাবা। ওই ছাত্রীর মা মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
“পরিবারটি আর্থিকভাবে খুব চাপে ছিল এবং মেয়েটি আশঙ্কা করছিল যে সে আর পড়াশোনা করতে পারবে না, বা ওর পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে যে, প্রথম থেকেই টিভি বা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা না পাওয়ায় খুব চাপের মধ্যে ছিল সে,” এনডিটিভিকে বলেন এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
![c7va0c1g](data:image/svg+xml;base64,PD94bWwgdmVyc2lvbj0iMS4wIiBlbmNvZGluZz0idXRmLTgiPz4KPCEtLSBHZW5lcmF0b3I6IEFkb2JlIElsbHVzdHJhdG9yIDI0LjMuMCwgU1ZHIEV4cG9ydCBQbHVnLUluIC4gU1ZHIFZlcnNpb246IDYuMDAgQnVpbGQgMCkgIC0tPgo8c3ZnIHZlcnNpb249IjEuMSIgaWQ9IkxheWVyXzEiIHhtbG5zPSJodHRwOi8vd3d3LnczLm9yZy8yMDAwL3N2ZyIgeG1sbnM6eGxpbms9Imh0dHA6Ly93d3cudzMub3JnLzE5OTkveGxpbmsiIHg9IjBweCIgeT0iMHB4IgoJIHZpZXdCb3g9IjAgMCAxNDAgMTA2IiBzdHlsZT0iZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3IDAgMCAxNDAgMTA2OyIgeG1sOnNwYWNlPSJwcmVzZXJ2ZSI+CjxzdHlsZSB0eXBlPSJ0ZXh0L2NzcyI+Cgkuc3Qwe29wYWNpdHk6Ny4wMDAwMDBlLTAyO2ZpbGw6I0YxRjNGNzt9Cgkuc3Qxe29wYWNpdHk6MC4zNDtmaWxsOiNBRkFGQUY7ZW5hYmxlLWJhY2tncm91bmQ6bmV3ICAgIDt9Cjwvc3R5bGU+CjxyZWN0IGNsYXNzPSJzdDAiIHdpZHRoPSIxNDAiIGhlaWdodD0iMTA2Ii8+CjxkZXNjPkNyZWF0ZWQgd2l0aCBTa2V0Y2guPC9kZXNjPgo8cGF0aCBjbGFzcz0ic3QxIiBkPSJNMTAzLjcsNDYuMkw5OC4zLDU3bC01LjktMTAuN0g2My41aC0wLjRoLTguOXY0LjZjMS4yLDAuMywyLDEuNCwyLDIuNmMwLDEuMi0wLjksMi4yLTIsMi42djQuNmg4LjlsMCwwaDMKCWM0LjMsMCw2LjMtMi41LDYuMy02LjZ2LTEuNWMwLTAuNCwwLTEuNi0wLjMtMi44aDYuOHYxMWg0LjN2LTExaDYuMWw2LjEsMTFoNS41bDcuNy0xNC40SDEwMy43eiBNNjgsNTVjMCwxLjQtMC44LDIuMi0yLjYsMi4yaC0yCgloLTAuNGgtNC41di03LjZoNC45bDAsMGgyYzEuNywwLDIuNiwwLjksMi42LDIuMlY1NXoiLz4KPHBhdGggY2xhc3M9InN0MSIgZD0iTTUwLjgsNTMuNGMwLTEuMiwwLjktMi4zLDItMi42di00LjVoLTQuNXYxMC4yaC0wLjJjLTAuOSwwLTEuNS0xLTEuOC0xLjRsLTIuNS01Yy0xLjItMi40LTMuMi0zLjgtNS42LTMuOAoJaC00Ljd2MTQuNGg0LjZWNTAuNGgwLjJjMSwwLDEuNiwxLjEsMS44LDEuNGwyLjYsNWMxLjEsMi40LDMuMiwzLjgsNS41LDMuOGg0LjdWNTZDNTEuNiw1NS43LDUwLjgsNTQuNyw1MC44LDUzLjR6Ii8+Cjwvc3ZnPgo=)
কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ যে অনলাইনে ক্লাস করতে পারার সুবিধা না থাকায় ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ওই ছাত্রী
কেরলের শিক্ষামন্ত্রী সি রবীন্দ্রনাথ এই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে জেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন। কোভিড-১৯ ভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের পরে দক্ষিণের এই রাজ্য ভিক্টরস চ্যানেলে প্রচারিত ‘ফার্স্ট বেল' নামক অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ১ জুন থেকে নিজেদের শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছিল। ক্লাস ১ থেকে ১২ পর্যন্ত সমস্ত পড়ুয়াদের বিশদ সময়সূচিও জানানো হয়েছিল।
তবে, রাজ্যের আনুমানিক আড়াই লক্ষ পড়ুয়ার কাছে না তো টিভি আছে না তো ইন্টারনেটে অ্যাক্সেস করতে পারার কোনও বিকল্প যন্ত্র। স্পনসরদের সহায়তায় ছোট দল করে ল্যাপটপ দেওয়ার বিষয়ে সরকার কাজ করছে।
কেরলের ওয়ানাড়ের লোকসভার সাংসদ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, আজ জেলা কালেক্টরকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে অনলাইন ক্লাসে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ লাগে যা বহু পড়ুয়াদেরই নেই। ফলত এক অন্য বৈষম্যের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে এই ছাত্রছাত্রীরা।
করোনাভাইরাসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে দেশব্যাপী লকডাউন জারি হওয়ায় মার্চ মাসে স্কুল ও কলেজ বন্ধ করা হয়েছিল। রবিবার, লকডাউন ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সময়, কেন্দ্র জানিয়েছে যে জুলাই মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি খুলতে পারে তবে তার আগে অভিভাবকসহ রাজ্য এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
(আপনার যদি সহায়তার দরকার হয় বা এমন কাউকে জানা থাকে যার সহায়তা প্রয়োজন তবে দয়া করে আপনার নিকটস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।)
Helplines:
AASRA: 91-22-27546669 (24 ঘণ্টা)
স্নেহা ফাউন্ডেশন: 91-44-24640050 (24 ঘণ্টা)
Vandrevala Foundation for Mental Health: 1860-2662-345 এবং 1800-2333-330 (24 ঘণ্টা)
iCall: 022-25521111 (সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত: সকাল 8:00 টা থেকে রাত 10:00 টা পর্যন্ত)
Connecting NGO: 18002094353 (রাত 12 টা থেকে 8 টা পর্যন্ত উপলব্ধ)