Coronavirus: "করোনা থেকে বাঁচলেও না খেয়ে মরব," বলছেন আটকা পড়া শ্রমিকরা
হাইলাইটস
- কীভাবে বাঁচবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা?
- খিদেয় কাতর ৮ দিনের সন্তান
- "করোনায় না মরলে, না খেতে পেয়ে মরব"
নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে বাড়ানো হল লকডাউন। আর যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়েছে দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় আটকে পড়া লক্ষ লক্ষ প্রবাসী শ্রমিকদের উপরে। সারাদিনে খাবার জুটছে না এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনাও যাবে না। করোনাভাইরাসে প্রাণ না গেলেও, খিদেয় মারা যেতে পারেন বহু মানুষ। আর এই লকডাউনের সময়েই মেহক নামের এক শ্রমিক জন্ম দিয়েছেন এক কন্যার। হাসপাতালে যাওয়ার পয়সাও নেই। ২২ বছরের মেহেক এবং তার স্বামী গোপাল উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের একটি গ্রামের বাসিন্দা। পুরানো দিল্লির টাউনহল অঞ্চলে একটি বাড়িতে মজুরের কাজ করেন মেহেক। তবে এখন লকডাউনের জেরে সমস্ত কিছুই বন্ধ। মেহেক জানান দু'দিনে মাত্র একবার খেতে পান। বাচ্চার দিকে তাকিয়ে চোখের জল বাধ মানে না বাবা গোপালের। মেহক এনডিটিভিকে আকুল হয়ে বলেন, “শুধু এক মুঠো ভাত খেয়েছে... দুধও নামছে না....বাচ্চাকে কী খাওয়াবো!”
এই ঘটনা কেবল মেহকের একার নয়। পাশেই খালি পায়ে দাঁড়িয়েছিলেন বিহারের নওয়াদার বাসিন্দা চাঁদ রানি, নিজের ঝুপড়ির দিকে আঙুল তুলে দেখালেন তিনি। ঘরে খুব সামান্যই চাল রয়েছে, আর অভুক্ত পেটে রয়েছে চার ছোট ছোট সন্তান। উনুন ধরেনি কারণ রান্নার জন্য কোনও আনাজপাতিই নেই। হরিয়ানাতে স্বামী মদনের সঙ্গেই ঠিকা মজুরের কাজ করেন তিনি। পায়ে হেঁটে কোনওরকমে দিল্লি অবধি আসতে পেরেছেন, তারপর থেকে এখানেই। চাঁদ রানি জানান, এই সামান্যই চাল রয়েছে, আর আছে কিছু মুড়ি। যেদিন কিছুই জোটে না বাচ্চাদের সঙ্গে নিজেও জল মুড়ি খেয়েই দিন কাটিয়ে দেন।
দিল্লি সরকার সমস্ত রেশনকার্ড থাকা মানুষকেই রেশন দিছে কিন্তু সমস্যা হ'ল যে প্রবাসী মজুরদের কাছে দিল্লির রেশনকার্ড নেই। সরকার এমন প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে নাম নথিভুক্তের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই ওয়েব পেজও গত দিন দিন ধরে কাজ করছেনা। পুরনো দিল্লি রেল স্টেশনে নিজের ঝুপড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন বিহারের সিওয়ান জেলার শংকর কুমার। পার্সে একটা টাকাও নেই, খুলেই দেখালেন তিনি আর তাঁর বন্ধুরা। শংকর বলেন, “টাকা শেষ, রেশনও শেষ হয়ে গেছে...এই ঝুপড়ির ভিতরেই রেশনের খালি কৌটো পড়ে আছে.....কাল পাশের স্কুলে দিল্লির সরকার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিল। খেতে বেরিয়েছিলাম, পুলিশ মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দিল।”