এনডিটিভি যখন তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছে, ততক্ষণে ১২ ঘণ্টা হেঁটে ফেলেছেন নিকিতা।
মুম্বই: নবি মুম্বাই থেকে মহারাষ্ট্রের বুলধানা, সড়ক পথে দূরত্ব ৪৮০ কিমি। লকডাউনের মধ্যে (Amid Lockdown) সেই পথ পেরোতে হাঁটা লাগিয়েছেন ১০-১২ জনের একটা দল। সেই দলে কিশোর-কিশোরী ছাড়াও রয়েছেন ৭ মাসের সন্তান সম্ভবা এক মহিলা । এই সফরে তাঁদের সঙ্গী সামান্য খাবার আর কিছু টাকা। মুম্বই (Mumbai) আর নবি মুম্বই ঘুরে এমন কিছু গ্রুপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যারা স্পেশাল ট্রেনের বদলে হেঁটে কিংবা সাইলেকেল গ্রামে ফিরতে স্বছন্দ্য । বুধবার সকালে এনডিটিভিকে নিকিতা নামের ওই সন্তান সম্ভবা তরুণী বলেছেন, "মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে আমি হাঁটা শুরু করেছি। আমরা ইতিমধ্যে ১২ ঘণ্টা হেঁটে ফেলেছি। মাঝে মাত্র একবার বিশ্রাম নিয়েছি।" সেই গ্রুপ তদারকি করে দেখা গেল, নিকিতার পিছনে এক যুবক, সেই তরুণীর বাক্স-প্যাটরা বহন করছেন। হাঁটতে-হাঁটতে জোর গোলায় নিকিতা আরও বললেন, "নবি মুম্বই থেকে আমরা কী করতাম? ওখানে থাকা, খাওয়ার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত নেই।"
কাশ্মীরে সেনার এনকাউন্টারে মৃত "মোস্ট ওয়ান্টেড" জঙ্গি রিয়াজ নাইকো
এই দলের থেকে মিটার খানিক দূরে আরও একটা দল হাঁটছিল, এই চড়া রোড, ফাঁকা সড়ক আর সঙ্গে বাক্স-প্যাটরা নিয়ে তারা যে বেশ অপ্রস্তুত, সেটা চোখে মুখেই স্পষ্ট। সেই দলের থেকে জানা গেল, পুলিশি রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই তাঁরা মাইলের পর মাইল হাঁটছেন সামান্য পুঁজিকে সঙ্গী করে। সেই দলের এক তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বর্ষার আগে তাঁরা গ্রামে ফিরতে মরিয়া। কারণ একবার বর্ষা নামলে অবস্থা আরও সঙ্গীন হবে। পানীয় ও খাবার জলের সঙ্কট দেখা দেবে। তাই আগে থাকতেই বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছে ওরা। স্পেশাল ট্রেনের অপেক্ষায় থাকলে ওদের সময় গড়িয়ে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে "উৎখাতের" ডাক দিয়ে টুইট বাবুল সুপ্রিয়র
সেই দলেই নিকিতার থেকে একটু দূরে দেখা গেল, আরও একজন মহিলাকে। যিনি দুটি সন্তান সামলাতে হিমশিম অবস্থা। দেখ গেল কাঁধে একটা সন্তান আর কোলে একটা সন্তান নিয়ে নিজেকে সামলে হাঁটছেন সেই মহিলা।
নবি মুম্বইয়ের পাশাপাশি মুম্বই ঘুরেও একই দৃশ্য দেখা গেল। এখানে আবার সাইকেল চেপে বিহারের দ্বারভাঙার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন ১৫ জন যুবক। মুম্বই শহরতলির ভিওয়ানন্ডির কাছে এই যুবকদের সাক্ষাৎকারের জন্য ধরা হলে জানা গিয়েছে তাঁরা সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। স্পেশাল ট্রেনের বদলে ২০০০ কিমির এই পথ সাইকেলে পাড়ি দিতে তাঁরা বেশি স্বছন্দ্য।
কেন তাঁরা স্পেশাল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করলেন না? এই প্রশ্নের জবাবে ওই শ্রমিকদের দাবি, "১৫ মে'র আগে আমরা স্পেশাল ট্রেন পাব না। ততদিনে পরিস্থিতি আরও প্রতিকুল হবে। গত ৪৫ দিনে সেভাবে প্রশাসনের তরফে বাড়ি ফিরতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই নিজেরাই উদ্যোগী হলাম। আশা করব পরিস্থিতি বিচার করে রাজ্য সীমান্তে আমাদের আটকাবে না।"
তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গিয়েছে, সান্তাক্রুজ থেকে বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ এঁরা সাইকেলে চেপেছে। ৩-৪ দিন লাগবে তাঁদের দ্বারভাঙ্গা পৌঁছতে।