সাইকেলে চড়ে লখনউ থেকে রায়পুর (700-KM) ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক পরিযায়ী দম্পতির। তাঁদের দুই সন্তান জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে দুই খুদেকে। শুক্রবার মধ্যরাতের মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটেছে লখনউয়ের শহিদ পথ এলাকায়। পুলিশ (Lucknow Police) সূত্রে খবর, মৃত কৃষ্ণ সাহু আর তাঁর স্ত্রী প্রমিলা সাহু পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। কর্মসূত্রে ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে লখনউতে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংক্রমণ আতঙ্ক ও লকডাউনে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করেছিল এই পরিবার। লখনউ থেকে রায়পুরের বেমেতারা গ্রাম, প্রায় ৭০০ কিমি পথ পেরোতে সাইকেলে সওয়ারি হয়েছিলেন ওই পরিবার। কিন্তু ২৩ কিমি পথ পেরনোর পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। ঘাতক গাড়ির সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মৃত দম্পতির দুই সন্তানের প্রত্যেকের বয়স ৫-এর নীচে।
লখনউ পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পর ওই পরিযায়ী পরিবারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি। দুই শিশু প্রাণে বাঁচলেও, বাঁচানো যায়নি তাদের মা-বাবাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই দুই খুদেকে কৃষ্ণর ভাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এনডিটিভির সামনে কৃষ্ণ-প্রমিলার পড়শিদের দাবি, "লখনউতে মজুরের কাজ করতেন কৃষ্ণ। ঝুপড়ির একটা ঘরেই চারজনে থাকতেন। সেই ঝুপড়িতে ওদের গ্রামের অন্য পরিবারেরও বাস ছিল। কিন্তু লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে আরও নিঃস্ব হয়ে পরে ওই পরিবার। ঘরে টাকা-খাবার কিছুই মজুত ছিল না। তাই কৃষ্ণ আর প্রমিলা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গ্রামে ফিরে চাষাবাদ করবেন। কিংবা জমি বন্ধক রেখে টাকা তুলবেন। কিন্তু সেই ইচ্ছাও পূরণ হল না।"
৮০০ টাকার ঝুপড়িতে এভাবেই চারজন মিলে থাকতেন কৃষ্ণ-প্রমিলারা। .
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত প্রায় ৮ বছর ধরে লখনউতে বাস কৃষ্ণর পরিবারের। ৯ মাস আগে শহিদপুরের বাইপাস বস্তিতে এসেছিল তাঁরা। সেই ঝুপড়ির অন্য বাসিন্দাদের অভিযোগ, "ছত্তিশগড় সরকারের কয়েকজন আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও, এখনও কোনও সাহায্য আমাদের জন্য এসে পৌঁছয়নি। এমনকি, লখনউ শহরের স্থানীয় সরকারি অফিসে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করিয়ে ট্রেন টিকিটের জন্য দরবার করেছিলাম। উলটে পুলিশের তাড়া খেয়ে বাড়ি ফিরেতে হয়েছে।"